Dr. Neem on Daraz
Victory Day

কলড্রপ ও টকটাইম ফেরত নিয়ে বিটিআরসির নতুন নির্দেশিকা


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৭:০১ পিএম
কলড্রপ ও টকটাইম ফেরত নিয়ে বিটিআরসির নতুন নির্দেশিকা

ঢাকাঃ মোবাইল ফোনে কলড্রপ, কলড্রপসংক্রান্ত তথ্যাদি এবং গ্রাহককে টকটাইম ফেরত প্রদানের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য অপারেটরদের জন্য নতুন নির্দেশিকা চালু করেছে বিটিআরসি।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে কমিশনের প্রধান সম্মেলন কক্ষে বিটিআরসির চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধান অতিথি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।

শুরুতে কলড্রপসংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে বিশদ উপস্থাপনা করেন বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ। নতুন নির্দেশিকায় যেসব বিষয় রয়েছে তা হলো:

ক. জবাবদিহিতা ও গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিতে সকল মোবাইল অপারেটর অভিন্ন USSD কোডের (*121*765#) মাধ্যমে একজন গ্রাহক পূর্ববর্তী দিন/ সপ্তাহ/মাসিক অন-নেট কলড্রপের পরিমাণ জানতে পারবে, যা ১ অক্টোবর ২০২২ থেকে কার্যকর হবে।

খ. অন-নেট কলড্রপের ক্ষেত্রে গ্রাহকের আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতি বিবেচনায় ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ ও সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্ত ক্ষতিপূরণ হিসেবে দৈনিক ১ম ও ২য় কল ড্রপের ক্ষেত্রে প্রতি কল ড্রপের জন্য ৩টি পালস (৩০ সেকেন্ড) এবং পরবর্তী ৩য় থেকে ৭ম কল ড্রপের ক্ষেত্রে প্রতিটি কলড্রপের জন্য চারটি পালস (৪০ সেকেন্ড) গ্রাহককে টকটাইম ফেরত প্রদান করবে এবং একই সাথে নিমোক্ত শর্তাদিও অনুসরণ করতে হবে।

১. কল ড্রপের ফলে ফেরতপ্রাপ্ত টকটাইম পরবর্তী দিনের প্রথম কল (০০:০০ ঘণ্টা) থেকেই ব্যবহারযোগ্য হবে অর্থাৎ ফেরতপ্রাপ্ত টকটাইমসমূহ সর্ম্পণূরূপে ব্যবহার হওয়ার পূর্বে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট হতে কল বাবদ কোনো টাকা কর্তন করা যাবে না।

২. কল ড্রপের ফলে ফেরতকৃত টকটাইমের বিষয়ে গ্রাহককে এসএসএম এর মাধ্যমে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবহিত করতে হবে।

৩. কোনো অপারেটর চাইলে কলড্রপ সংঘটিত হওয়ার পর উক্ত দিন থেকেই কল মিনিট ফেরত প্রদান করতে পারবে।

৪. কল ড্রপের ফেরত প্রাপ্ত টকটাইম ব্যবহারের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ দিন মেয়াদ প্রযোজ্য হবে।

নতুন কলড্রপ নির্দেশিকা একটি মাইলফলক উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, গ্রাহক অর্থ দিয়ে সেবা গ্রহণ করে, তাই অপারেটর কর্তৃক সেই সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার চেয়ে অপারেটররা টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করলে কল ড্রপের হার কমে যাবে। অপারেটরদের প্রতি তাদের গ্রাহক বৃদ্ধির সাথে সাথে সেবার মান বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

মোবাইল ফোনে কলড্রপ কখনও কাম্য নয় মন্তব্য করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে মানসম্পন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য অপারেটরদেরকে নজর দিতে হবে। ভয়েস কলের উন্নতির পাশপাাশি ডাটা স্পিডের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।  

কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, মোবাইল অপারটেররা ব্যবসায়ে যতটা আগ্রহী, কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিতে ততটা আগ্রহী নয়। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী গ্রাহক কলড্রপের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ পাবে এবং গ্রাহকের কলড্রপ সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্যও জানতে পারবে। 

কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চ আয়ের মানুষ সকলেই মোবাইল গ্রাহক। প্রতিদিন গ্রাহক যে হারে বাড়ছে সে তুলনায় অবকাঠামো বাড়ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিটিআরসি গ্রাহককে একটি মানসম্পন্ন নেটওয়ার্ক প্রদানে বদ্ধপরিকর এবং দ্রুত কলড্রপ সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। 

কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবীর বলেন, কোয়ালিটি অব সার্ভিসের নিশ্চিতে কলড্রপ এবং ইন্টারনেট স্পিড অন্যতম। তিনি আরও বলেন, গ্রাহকের তুলনায় বিটিএস এবং তরঙ্গ কম থাকা, লোডশেডিং, রেডিও ইকুইপমেন্ট ও অপটিক্যাল ফাইবারে বিঘ্নতা, নেটওয়ার্ক বুস্টার ও জ্যামারসহ আরো নানাবিধ কারণে মোবাইল ফোনে কলড্রপ হয়ে থাকে।  ২০২২ সালে অপারেটরদের অনুকূলে বরাদ্দ হওয়া তরঙ্গ পুরোপুরি চালু হলে কলড্রপের হার কমে আসবে বলেও জানান তিনি। 

কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিতে বেশকিছু পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার  বলেন, ২০২১ এবং ২০২২ সালে তরঙ্গ নিলাম ও টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন চালুর পাশাপাশি মোবাইল অপারেটর এবং এনটিটিএন অপারেটদের মধ্যে সাথে দূরত্ব কমানোর কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিটিএস সাইটের সক্ষমতার তুলনায় কোনো কোনো এলাকায় গ্রাহক বেশি হওয়ায় কলড্রপ বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে সেসব জায়গায় সক্ষমতা বাড়াতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

আপাতত অন-নেট ( জিপি-জিপি, রবি-রবি,) এর কলড্রপ নির্দেশিকা প্রণয়ন হলেও বিটিআরসিতে স্থাপিত টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম চালু হলে অফ-নেট ( জিপি-রবি, রবি-বাংলালিংক) কলড্রপের ক্ষেত্রেও নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করা হবে।

বিটিআরসির সচিব মো. নূরুল হাফিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে কমিশনার (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসাইন, মহাপরিচালক (স্পেকক্ট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, মহাপরিচালক (লিগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং) আশীষ কুমার কুন্ডুসহ বিটিআরসি এবং মোবাইল অপারেটরদের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে