Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দিহান-আনুশকার প্রেমের সম্পর্ক মিথ্যা


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২১, ১১:৩৩ পিএম
দিহান-আনুশকার প্রেমের সম্পর্ক মিথ্যা

ছবি; সংগৃহীত

ঢাকাঃ রাজধানীর কলাবাগানের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকার মৃত্যুর ঘটনায় আটক হলে তার সাথে নিজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করে অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহান। তবে নিহত আনুশকার মা দাবি করেছেন, দিহানের সাথে আমার মেয়ের প্রেমের কোন সম্পর্ক ছিলো না।

আনুশকার মা শাহানুরী বলেন, দিহানের সাথে আমার মেয়ের প্রেমের কোন সম্পর্ক ছিলো না। কিছু মিডিয়া দিয়ে ভুল সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এসময় তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আর কোন কথা বলতে পারেনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে দিহান পুলিশকে জানায়- ধর্ষণের পরিকল্পনা আগেই করা ছিলো। বন্ধু হলেও দুজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো, তবে বেশিদিন হয়নি। মাত্র তিন মাস হলো উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছে। গ্রুপ স্টাডির নাম করে আনুশকাকে ফোন করে কলাবাগান লেক সার্কাসের একটি বাসায় ডেকে নেয় দিহান। দুপুর ১২ টা থেকে একটার মধ্যে জোরপূর্বক আনুশকাকে ধর্ষণ করে দিহান।

এজাহারে নিহত আনুশকার বাবা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৮টায় আমার স্ত্রী অফিসে এবং আমি সকাল সাড়ে ৯টায় ব্যবসার কাজে বের হয়ে যাই। পরে আমার মেয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় তার মাকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিংয়ের পেপার্স আনতে বাইরে যাচ্ছে। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে তার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়েছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী দুপুর ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপাতালে পৌঁছাই। সেখানে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন আমাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়েছে।

পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আনুশকার মামা মো. নাজমুল হাসান বলেন, আসামির পরিবার প্রভাব খাটিয়ে মামলাকে হালকা করার চেষ্টা করছে। তার দাবি, আনুশকার পাসপোর্টে বয়স এখন ১৭ বছর ৩ মাস, কিন্তু পুলিশ তার বয়স দেখিয়েছে ১৯ বছর। অন্যদিকে দিহান এ লেভেলের ছাত্র হয়েও এজাহারে তার বয়স দেয়া হয়েছে ১৮ বছর।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, আনুশকার ব্যবহৃত মোবাইলটি পুলিশ বলছে এখনো পায়নি। মোবাইলটি পেলেই অনেক সত্যি তথ্য বের হয়ে আসবে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাতে কলাবাগান থানায় ধর্ষণ ও হত্যার করার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯-এর ২ ধারায় খুনসহ ধর্ষণ মামলা করেছেন বাবা মো. আল-আমিন।

ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান বলেন, আনুশকার মামা কিছু বললেই সেটা সত্যি হবে না। আমাদের জব্দ তালিকার মধ্যে অনেকগুলো মোবাইল আছে। মোবাইলগুলোর ব্যবহারকারীর নাম এখনো জানা যায়নি।

বাকি তিনজনের নামে কেন মামলা করা হয়নি জানতে চাইলে নাজমুল হাসান বলেন, তাদের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। এর জন্য মামলা করা হয়নি।

দিহানের আরেক বন্ধুর (আলভি) মা বলেন, আমার ছেলে নির্দোশ, এই ঘটনার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, আলভি হাফেজি পড়েছে, নামাজ পড়ে। তার দোষ না করেও তার ছেলেকে এখনা কেন ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না।

নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান বলেন, নিহত কিশোরীর বাবা আল-আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। শুধু ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে আমরা গতকালই আটক করেছি। এখন এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি। প্রমাণ না পেলে তাদের মুসলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে।

আগামীনিউজ/এএইচ  

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে