Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সাঈদীর চিকিৎসককে হত্যার হুমকিদাতা তাফসিরুল শিবিরের সক্রিয় কর্মী: র‍্যাব


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩, ০১:২১ পিএম
সাঈদীর চিকিৎসককে হত্যার হুমকিদাতা তাফসিরুল শিবিরের সক্রিয় কর্মী: র‍্যাব

ঢাকাঃ মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক এস এম মোস্তফা জামানকে হুমকিদাতা তাফসিরুল ইসলাম (২৩) ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য।

তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফিও এলাকায় জামায়াতে ইসলামির কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির ঘটনায় রফির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় এবং তিনি কারাভোগ করেন।

র‍্যাব জানায়, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই তাফসিরুল ওই চিকিৎসককে হত্যার হুমকি দেন। চিকিৎসায় সাঈদীর পরিবারও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তারপরও যারা এ চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এর আগে বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে ঝিনাইদহের মহেশপুর থেকে তাফসিরুলকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৩ আগস্ট জামায়াত নেতা সাঈদী অসুস্থ হওয়ায় তাকে বিএসএমএমইউর জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৪ আগস্ট রাতে তিনি মারা যান। সাঈদী চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় বিশেষজ্ঞ টিম আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসা করেন। সাঈদীর পরিবারও তার চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ চিকিৎসক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, এরপর থেকে সাঈদীকে চিকিৎসা দেওয়া এস এম মোস্তফা জামানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে বিভিন্ন আইডি থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী চিকিৎসকের এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরিপ্রেক্ষিতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-২ ও ৬ এর একটি অভিযানিক দল ঝিনাইদহের মহেশপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাফসিরুল ইসলাম নামে ওই যুবককে আটক করে।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাফসিরুল জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারসহ চিকিৎসক মোস্তফা জামানকে ফেসবুকে ও মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাফসিরুল স্থানীয় একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছে। সে স্কুল জীবন থেকেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় সদস্য। সে আইটিতে দক্ষ হওয়ায় অনলাইনে ই-মেইল মার্কেটিংয়ের কাজ করে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় করতো।

তিনি আরও বলেন, আটক তাফসিরুলের বাবা রফিকুল ইসলাম রফি এলাকার জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩-১৪ সালে এলাকায় নাশকতা সৃষ্টির অপরাধে তার বাবার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয় এবং এসব মামলায় সে কারাভোগ করেন।

আটক তাফসিরুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর#তাফসিরুল ইসলাম' ও 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দ্বারিয়াপুর, মহেশপুর@তাফসিরুল ইসলাম' নামে দুটি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে পরিচালনা করে।

তিনি বলেন,  মূলত সে দলীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রোশ থেকে জামায়াত সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক মোস্তাফা জামানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বিভিন্ন মাধ্যমে খুঁজে বের করে হোয়াটসঅ্যাপে হত্যার হুমকি দেয়। পরে চিকিৎসক মোস্তফা জামান জিডি করলে তাফসিরুল মেসেজ হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মুছে ফেলে। কিন্তু তার মোবাইলে হত্যার হুমকি সম্বলিত মেসেজের স্ক্রিনশর্ট পাওয়া যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও আক্রমণ থেকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্যই তিনি ডাক্তারকে হুমকি দেন। সাঈদী সাহেবের পরিবারও চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। যারা এই চিকিৎসককে হেয় করে কথা বলছেন ও হুমকি দিচ্ছেন তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি।  নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ডাক্তারের নম্বর ছড়ানো হয়েছে। সেখান থেকে তার নম্বর সংগ্রহ করে তাফসিরুল। এছাড়া সে নিজেও আইটি বিশেষজ্ঞ। গ্রুপ থেকে নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও এই সব গ্রুপ থেকে অনেকেই নম্বর সংগ্রহ করে ডাক্তারকে হুমকি দিচ্ছেন। তাদেরও আটকে কাজ করছে র‍্যাব। এছাড়া গ্রুপগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে