Dr. Neem on Daraz
Victory Day

রাম তুলসী


আগামী নিউজ | ড. নিম হাকিম প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২১, ০৪:২৫ পিএম
রাম তুলসী

ছবিঃ সংগৃহীত

পরিচিতিঃ (Botanical Name: Ocimum gratissimum Linn., Common Name: Ram Tulshi, English Name: Shurabby Basil, Family: Labiatae)

রাম তুলসী গাছ সুগন্ধিযুক্ত, ৪ থেকে ৮ ফুট লম্বা। কান্ড কাষ্ঠবৎ বহু শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট। পাতা দুই থেকে তিন ইঞ্চি ডিম্বাকৃতির এবং কিনারা করাতের মতো দাগ কাটা। গোলাপি ও লাল বর্ণের এবং ফিকে পীত বর্ণের। ফল ছোট, গোলাকার ও চ্যাপ্টা। বীজ কালো, যাকে তোখমে শরবতি, তোখমে বালঙ্গ বা তোখমা বলা হয়। বর্ষাকাল এর ফুল ও ফল হয় এবং শীতকালে পরিপক্ক হয়। তুলসী গাছ, পাতা, বীজ ও রস ব্যবহার হয়।

প্রাপ্তিস্থানঃ বাংলাদেশ ও ভারতের সর্বত্র রাম তুলসী জন্মে। এর আদি জন্মস্থান পূর্ব এশিয়া। বিশেষ করে প্রতি হিন্দু ধর্মালম্বীদের বাড়িতে এটি পাওয়া যায়।

চাষাবাদঃ বীজ থেকে চারা উত্তোলন করে এর চাষ করা যায়। পাকা বীজ সংগ্রহের পর পরই বীজতলাতে লাগালে চারা গজায়। চারা গাছ বড় হয়ে উঠলে নির্দিষ্ট জায়গায় লাগাতে হয়। সাধারণত ৩-৪ ফুট অন্তর চারা লাগাতে হবে। আংশিক ছায়াতেও এ গাছ জন্মে। প্লাবনমুক্ত ভূমিতে সহজে চাষ করা যাবে। তুলসীর বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ।

লাগানোর দূরত্বঃ ৩ থেকে ৪ ফুট।

উপযোগী মাটিঃ সব ধরনের মাটি রামতুলসী চাষের জন্য উপযোগী, তবে বেলে দো-আঁশ মাটিতে অধিক পরিমাণে তুলসী গাছ জন্মে। তাছাড়াও তুলসী টবেও লাগানো যায়।

বীজ আহরণঃ শীতকালে বীজ সংগ্রহ করতে হয়।

প্রতি কেজিতে বীজের পরিমাণঃ প্রায় ৩ লক্ষাধিক।

প্রক্রিয়াজাতকরণ/সংরক্ষণঃ রাম তুলসীর পাতা কাঁচা ব্যবহারই উত্তম। তুলসী গাছ পাতা সমেত উত্তোলন পূর্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে ছোট ছোট করে কেটে রোদে শুকিয়ে নিয়ে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে এবং এক বছর ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে পাতা বাদামী রং ধারণ করা পর্যন্ত শুকিয়ে নিতে হবে। যাতে কোন রকম ধুলাবালি না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ড্রাই চেম্বার ব্যবহার করা যেতে পারে। শুকাবার পর পাতার আদ্রতা যেন শতকরা ২ ভাগ থাকে। প্যাকেটের গায়ে সংগ্রহ তারিখ, উৎসস্থল সনাক্তকরণ এবং ব্যবহারের শেষ সময় অবশ্যই উল্লেখ রাখতে হবে।

ব্যবহার্য অংশঃ বীজ, পাতা,  শিকড় ও রস।

উপকারিতা/লোকজ ব্যবহারঃ রাম তুলসী মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের রোগে বিশেষ উপকারি। প্রদাহ বা ফোলা ও স্নায়বিক দুর্বলতা নাশক। হৃৎপিণ্ডের শক্তিবর্ধক। লিভার, প্লীহা, মস্তিষ্কের প্রতিবন্ধকতা দূরকারক। মাথা ব্যথা, বাত ব্যথা, পক্ষাঘাত রোগে উপকারী। ম্যালেরিয়া ও চর্মরোগে উপকারী এবং মশা দূর করে। মাথা ধরা ও স্নায়বিক রোগে ব্যবহার করা হয় এবং হৃদপিন্ডের বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে।

কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়ঃ

  • বাতে আক্রান্ত হলেঃ রাম তুলসীর পাতা একটি কাপড় কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ভেজানো কাপড় ব্যথা জায়গায় বেঁধে রাখলে বাতের ব্যথা ভালো হয়।
  • কোন ভাবে শরীরে প্রবেশ করলেঃ প্রতিদিন সকালে দুই চামচ রাম তুলসীর রস খেলে পারদের বিষক্রিয়া নষ্ট হয়।
  • ভিমরুল কামড়ালেঃ রাম তুলসীর পাতার রস কামড় দেওয়া জায়গায় মাখলে যন্ত্রণা দূর হয়।

পরিপক্ক হওয়ার সময়কালঃ  ৬ থেকে ৮ মাসে তুলসী গাছ পরিপক্ক হয়ে থাকে।

অন্যান্য ব্যবহারঃ রাম তুলসীর পরিপক্ক শক্ত কাঠ দিয়ে মালা তৈরি হয়ে থাকে।

আয়ঃ দেশে ও বিদেশে রাম তুলসীর চাহিদা রয়েছে। তাই এটি চাষ করা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে। এক একর রাম তুলসী চাষে বার্ষিক ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।

আগামীনিউজ/নাসির

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে