ময়মনসিংহে ২ সাংবাদিক নির্যাতিত
                        
                        
                            
                                 আগামী নিউজ | আনোয়ার সাদত জাহাঙ্গীর, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি                                 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১,  ১১:১৯ এএম                            
                            
                            
                        
                        
                        
                                                    
                            ফাইল ফটো
                                                
                            
                            
                            
                            
                        
                        
ময়মনসিংহঃ জেলার ভালুকা উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার ভালুকা উপজেলা প্রতিনিধি মো.বিল্লাল হোসেন এবং সাংবাদিক লিমা আক্তার নির্যাতিত হয়েছেন। হবিড়বাড়ি রেঞ্জের অধীনে বনাঞ্চলের ভিতর করাতকল বসিয়ে অবৈধভাবে গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি এবং ভিডিও করে ফেরার পথে অতর্কিত হামলার শিকার হন সংবাদকর্মীরা।
 
রবিবার বিকেলে উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের হামিদের মোড় এলাকায় আবুল কাশেমের ‘স’ মিলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
 
জানা যায়, ইউনিয়নের খন্দকারপাড়া হামিদের মোড় এলাকায় বনের ভেতরে আবুল কাশেমের অবৈধ করাতকলের মাধ্যমে বনাঞ্চল থেকে মনোহরপুর মৌজায় বনের গেজেটভুক্ত ১৮৭  দাগে আজিম উদ্দিনের চালা এবং ১৬৭ দাগে সোলায়মানের চালা থেকে প্রায় ৭০০/৮০০ গাছ কেটে এনে দেদারসে চেড়াই করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই দুই সাংবাদিক।
 
সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি প্রায় ৭০০/৮০০ গজারি ও আকাশি গাছ কেটে করাতকলের সামনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং সেগুলো একটা একটা করে দেদারসে চেড়াই করছে। এসময় এসবের ছবি এবং ভিডিও করে ওখান থেকে রওনা হওয়ার সময় মিল মালিক কাশেমের ছেলে সোহাগসহ কয়েকজন হঠাৎ করে আমার উপর হামলা করে। আমাকে গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমার সাথে সাংবাদিক লিমার হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তথ্যচিত্রের সকল ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করা হয়েছে। পরে আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ করলে উল্টে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করবে বলে হুমকি প্রদান করে।
 
জানা যায়, সংরক্ষিত বনভূমির সামনের দিকে ২/১টি বড় গাছ আছে আর ভিতরে আছে গাছের গোড়া অর্থাৎ বড় বড় গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে। বৃক্ষনিধন ও বনাঞ্চল উজাড়ের খবর প্রায়শই পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হলেও রহস্যজনক কারণে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবেই চলে। চোরাই কাঠের বেশিরভাগই অবৈধভাবে বসানো স’মিলগুলোতে জড়ো করে তা করাতের মাধ্যমে সাইজ করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে। বনের ভেতরে যেসব স’মিল রয়েছে, তার বেশির ভাগই অবৈধ, কোন কাগজ-পত্র নেই।
 
সরকারের স’মিল লাইসেন্স বিধিমালা ১৯৯৮-এর ৮(১) ধারায় সুপষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত ও অন্য যে কোন ধরনের সরকারি বনভূমির সীমানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন স’মিল স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে না।
 
উল্লেখ্য, বন বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীদের যোগসাজসে ভালুকায় শত শত অবৈধ করাতকল বসিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই শুধু নয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রাস্তার পাশে ও ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে অবাধে। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল।
 
 
আগামীনিউজ/এএস