Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ডুবে যাওয়া ট্রলার উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ দুই শিশুসহ ৫ জন


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৩, ০১:৫৩ পিএম
ডুবে যাওয়া ট্রলার উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ দুই শিশুসহ ৫ জন

মুন্সীগঞ্জঃ লৌহজংয়ে ৪৬ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আর কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। রোববার (৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে‌ ১১টার দিকে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি অন্য একটি নৌযানের সহায়তা (ভাসমান কেন) টেনে তোলা হয়।

এতে নিখোঁজ স্বজনদের মনে দেখা দিয়েছে হতাশা। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ পাঁচজন নিখোঁজের কথা বললেও নতুন করে কারো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তিন নারীসহ দুই শিশু নিখোঁজ রয়েছে। সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ দুই শিশুর দাদা সিরাজদিখান উপজেলার কয়রাখোলা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

নুরুল ইসলাম বলেন, গতকালের ট্রলারডুবির ঘটনায় আমার এক নাতি তুরান (৮) ও নাতনি নাভা (৫) নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বাবা আরিফ হোসেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী। শিশুরা মা সমাপ্তির সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল। ওই দুই শিশু সাঁতার জানতো না। ট্রলারডুবির পর মা সমাপ্তি সাতরিয়ে উঠলেও নিখোঁজ রয়েছে তার দুই শিশু।

নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ'র উপ-পরিচালক ওবায়দুল করিম খান জানান, বৃষ্টি ও স্রোতে ট্রলারটি উদ্ধার করতে বেগ পেতে হচ্ছিল।স্থানীয়দের সহযোগিতায় নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা ট্রলারটির উদ্ধার কাজ শুরু করে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডুবে যাওয়া স্থান থেকে এয়ার লিফন্টিং ব্যাগ, ক্রেন বোটের সাহায্যে ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারটি থেকে কয়েকটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে, তবে কারো মরদেহ পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, স্বজনদের দাবি ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো পাঁচজন নিখোঁজ। তাদের মধ্যে দুজন শিশু ও তিনজন নারী রয়েছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে জেলা প্রশাসন থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বালু বহনকারী ঘাতক বাল্কহেডটি। পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ করা করার পরও কেন রাতে চলছিল তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নদী তীরে আসা ভুক্তভোগীরা।

এর আগে শনিবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি পিকনিক করতে যাওয়া যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর পরিচয় মিলেছে। মৃতদের মধ্যে শিশুসহ ৪ জন নারী ৪ জন পুরুষ রয়েছে।

উদ্ধার হওয়া মৃতরা হলেন— মোকসেদা (৪২), পপি (২৬), শাকিব (৮), হ্যাপি (২৮), রাকিব (১২), সাজিবুল (৪), ফারিহান (১০) ও সজীব। তারা সবাই সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা।

জানা যায়, পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্ট থেকে সিরাজদিখানের দিকে যাচ্ছিলো পিকনিকের যাত্রীবাহী ট্রলারটি। রাত ৮টার দিকে ঈদের পাড়া ইউনিয়নের রসকাটি এলাকায় পৌঁছালে অন্ধকারে একটি বালুবাহী বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীসহ ডুবে যায় ট্রলারটি। এসময় অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হয় বাকিরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে রাতেই।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, ট্রলারটিতে ৪৬ জন যাত্রী ছিল। এ ঘটনায় প্রথমে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে আরও দুই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে ৪ নারী ও ৪ জন পুরুষ। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

দুর্ঘটনার পর পরই ট্রলারের যাত্রীদের স্বজনরা নদী পাড়ে ভিড় করছেন। সেখানে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা আহাজারি করছেন।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে