 
                            ফাইল ছবি
ঢাকাঃ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুই দল। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস। আফগানদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে আশাবাদী টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগামী ১৬ জুলাই হবে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি।
চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডেতে ডিএলএস মেথডে ১৭ রানে জয় পাওয়ার পর আফগানরা দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও জেতে ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে। তবে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। ব্যাটে বলে দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে ৭ উইকেটের জয় পায় তারা। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে যা বাড়তি আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে সাকিব-লিটনদের। টি-টোয়েন্টিতে আফগানরা এগিয়ে থাকলেও তা নিয়ে ভাবছেন না টাইগার অধিনায়ক সাকিব।
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে গতকাল তিনি বলেন, ‘আপনি যাকে ইচ্ছা ফেভারিট বলতে পারেন, আমরা দুই ম্যাচই জিততে চাই। প্রতিটা সিরিজই একটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চ্যালেঞ্জটা আরো বেশি। কারণ সব দলের সমান সুযোগ থাকে। টি-টোয়েন্টিতে ছোট দল বা বড় দল বলে কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। যে কোনো দল যে কোনো দলকে হারানোর সক্ষমতা রাখে। ওই চ্যালেঞ্জটাই আমাদের উপভোগের বিষয়। আমরা ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কিন্তু একটা ম্যাচ হেরেছি। আমার কাছে মনে হয় আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি যখন অন্য দলকে নিয়ে চিন্তা কম করি।’
টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তান বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে তারা। এ পর্যন্ত নয়বারের দেখায় আফগানদের জয় ৬টিতে এবং বাংলাদেশের ৩টিতে। সবগুলোতেই সহজ জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। অন্যদিকে জয় পেতে ঘাম ঝড়াতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শেষ পাঁচ লড়াইয়ের মধ্যে দুটি জয় আছে টাইগারদের। সাকিবের নেতৃত্বে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা যায় অধিনায়ক তামিম ইকবালের অবসর নিয়ে নাটকীয়তা। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তামিম অবসরের সিদ্ধান্ত পাল্টে জাতীয় দলে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। তারপরও সব কিছু মিলিয়ে একটা এলোমেলো অবস্থা।
দলের ভেতরের অবস্থা নিয়ে সাকিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে যেমন মনে হয় ভেতরটা আসলে তেমন না। এবং কোন ঘটনাতেই আসলে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ খারাপ বা অগোছাল হয়নি। বেশির ভাগ সময় ঠিকই থাকে। মানে একইরকম থাকে। বাইরে থেকে অনেক কিছুই মনে হতে পারে। আমার মনে হয় না যে ড্রেসিং রুমে আমরা কখনোই আনসেটেলড ছিলাম বা এখনো আছি।
আমি মনে করি, পরিবেশ সব সময়ই ভালো আছে। অবশ্যই রেজাল্টের কারণেও এমনটা ভাবতে পারেন। রেজাল্টের অবস্থা ভালো না, খারাপ। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় না হার-জিতের ওপর ড্রেসিং রুমের এনভায়রনমেন্টের অবস্থা পরিবর্তন ঘটে। আমার মনে হয় একই থাকে। চেষ্টা থাকে, প্রতিদিন কিভাবে নিজেদের উন্নত করতে পারি। সে হিসেবে পারফরম করতে পারি এবং টিমের জন্য কন্ট্রিবিউট করতে পারি।’
আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে পিছিয়ে থাকলেও এই ফরম্যাটে অনেক উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। এই বছরে জানুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজও জিতেছে ২-১ এ। দুটি সিরিজেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলেছে বাংলাদেশ। এই সিরিজেও সে ধারা বজায় রাখতে চান সাকিব।
তিনি বলেন ‘ঘরের মাঠে সবশেষ দুটি সিরিজই আমরা ভালো খেলেছি। এটা আমাদের জন্য নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তান অবশ্যই ভালো দল। আমাদের চেষ্টা থাকবে, যেভাবে আমরা ক্রিকেটটা খেলছি, যেভাবে উন্নতি হচ্ছে, প্রতিটি ম্যাচেই সেভাবে পারফরম করার জন্য।’
অপরদিকে সিলেট থেকেই শুরু আফগানিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। গতকাল সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক রশিদ খান সেই কথাই বলেন। তার ভাষ্য, ‘ওয়ানডে সিরিজ জয় আমাদের জন্য ভালো সুবিধা। আমরা মাত্রই একটি সিরিজ জিতেছি। চার বছর আগে আমরা একটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছি এখানে। যেটা আমাদের দলের অন্যতম অর্জন ছিল। ভালো বিষয়টি হচ্ছে আমরা এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং সিরিজও জিতেছি। এটা ভালো কিন্তু আমাদের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে এই ধারাটা ধরে রাখতে হবে। সেরেটা দিতে হবে। আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে এশিয়া কাপে খেলব। আমরা তাদের সম্পর্কে জানি, তারা জানে তাদের কী করতে হবে। কিন্তু এটা দারুণ প্রতিযোগিতামূলক হবে, খেলা দেখায় আনন্দ হবে।’
সিরিজের ফল কি হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে রশিদ বলেন, ‘আমি দলীয়ভাবে চিন্তা করি। আমাদের জন্য এটি প্রস্তুতি। আমার কথা বলতে গেলে, আমি ফল নিয়ে চিন্তা করি না। এই বার্তা স্পষ্টভাবে দেয়া হয়েছে। জিততে হবে এমন কিছু ঠিক করে দেয়া যাবে না। আমার কাছে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রস্তুতি এবং বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং যেটাই হোক তা শতভাগ দেয়া। দলীয়ভাবে আমাদের নজর হচ্ছে দিনে দিনে উন্নতি করা। এটা ভিন্ন কন্ডিশন এবং স্পিন উইকেটের প্রত্যাশা করছি। আমাদের কাছে পরবর্তী বছর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি স্বরূপ। এটাই আমাদের নজরে থাকবে। যে কোনো দিন আমরা সংগ্রাম করতে পারি কিন্ত আমাদের দিনে দিনে উন্নতি করতে হবে।’
বুইউ
-20251013141837.jpg) 
      -20251013095452.jpg) 
       
       
       
      -20250923081410.jpg) 
       
       
       
      -20250815155757.jpg)