Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জীবন-জীবিকা সামলাতে কতটা প্রস্তুত মানুষ?


আগামী নিউজ | ম.শাফিউল আল ইমরান  প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২০, ০৩:৪৫ পিএম
জীবন-জীবিকা সামলাতে কতটা প্রস্তুত মানুষ?

সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: করোনাভাইরাসের মহামারির ঝুঁকির মধ্যে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, কর্মহীনতা, জীবনযাত্রার সাথে তাল মেলাতে না পারা, আর্থিক অসঙ্গতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেশী হওয়ার কারণে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন,  অর্থনীতির বিপুল ক্ষতি, আর সামনে গভীর অনিশ্চয়তা, মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জীবিকা নিশ্চিতের কঠিন সমীকরণ মেলাতে গিয়ে মানুষ বিকল্প চিন্তা থেকে ঢাকা ছাড়ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে,  বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর চলাচল ও সামাজিক মেলামেশায় বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। এরফলে, মানুষের কাজকর্ম সীমিত হয়ে যায়। অনেকে তাদের কর্ম হারায়। এরমধ্যে সাধারণ ছুটির সন্ধ্যার পরে দোকানপাট খোলা না রাখা, রাতে চলাচল সীমিত করাসহ বিভিন্ন বিধি-নিষেধ সরকারের তরফ থেকে জারি করা হয়। উপরন্তু ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবার কারণে কাজ নাই ঘরে থাকার চেয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কিছু মানুষ বিকল্প কর্মের কথা চিন্তা করে কৃষিতে মনোযোগ দিচ্ছে। তবে, এবার ধানের দাম ভাল থাকার কারণে অনেকেই গ্রামে বিকল্প কিছু করার চিন্তা করছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, দেশে ৪২টি প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে মোট ছয় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। দেশটির বিগত বছরগুলোতে প্রবৃদ্ধির সূচক বিবেচনায় শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় থাকার পরও করোনার মহামারির কারণে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই। কিন্তু মানুষের ঢাকা ছাড়ার প্রবণতা, কাজ না থাকা, বেতন কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে সার্বিক অর্থনীতির উপর বড় আকারের প্রভাব পড়ছে তা বোঝা য়ায়। তবে, আইএমএফ বাংলাদেশ সর্ম্পকে যে তথ্য দিচ্ছে তাতে অর্থনীতির জন্য সুখবর নেই। সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩.৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে। আর বিশ্ব ব্যাংক বলেছে, প্রবৃদ্ধি হবে ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। 

করোনাকালে বাংলাদেশের মানুষের আর্থনৈতিক অবস্থার  চিত্র নিয়ে ব্র্যাক, ডেটা সেন্স এবং উন্নয়ন সমন্বয়-এর এক যৌথ সমীক্ষায় প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, করোনায় বাংলাদেশের ১০ কোটি ২২ লাখ মানুষের আয় কমে গেছে। আর পরিবার হিসেবে আয় কমেছে শতকরা ৭৪ ভাগ পরিবারের। এখন প্রধান কাজ হলো আয় যাতে না কমে তার ব্যবস্থা করা। আর সেটা না করা গেলে দারিদ্র্য আরো বাড়বে। 

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সামনে কী অপেক্ষা করছে আর কী করবে বাংলাদেশ?
সেটাই বড় প্রশ্ন। কেউ কেউ সরকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত আকারে চালুর পক্ষে মত দিলেও অনেকে তার বিরোধীতা করছেন। অনেকেই মনে করছেন, জবরদস্তি করে এর বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও  সামনে তাই স্বাস্থ্য সেবা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্র্যাকের সিনিয়র পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ বলেন, করোনায় গ্রামের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শুরুতে তারা বিপর্যস্ত বেশি ছিলো। বোরো ধান উঠে যাওয়ায় তারা কিছুটা সামলে উঠেছে। কিন্তু শহরের পরিস্থিতি দিনকে দিন আরো খারাপ হচ্ছে। 

তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সমাজের ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বিত্তবান সবাইকে এগিয়ে আসার পাশাপাশি নতুন করে চিন্তা করতে হবে আগামী বাংলাদেশকে নিয়ে।

তবে অর্থনীতি বিশ্লষকরা মনে করেন, প্রতিটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে কিছু সুযোগ থাকে। আর তা কাজে লাগাতে যে পারবে, সেই টিকে থাকবে। সেজন্য প্রয়োজন সমাজের সব স্তর মানুষের মধ্য সম্বন্বয়। 

আগামীনিউজ/এসএআই/এমআর

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে