ঢাকাঃ আমাদের গ্রাম বরিশালের গৈলা। গৈলা ছিল রাজনীতির পাঠশালা।আমার এক ঠাকুরদাদা বিমলা চরণ দাশগুপ্ত ছিলেন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী এবং বিলিতি দ্রব্য লবণ চিনি বস্ত্র বর্জন আন্দোলনে গৈলার মূল নেতৃত্বে।সে আন্দোলন খুবই সফল হয়েছে আমাদের গ্রামে।আমাদের আত্মীয়সজনসহ গৈলার ৬৮ জন নেতা কর্মী বৃটিশ আমলে কারাভোগ করেছেন, দ্বীপান্তরের বন্দী ছিলেন।গৈলার তারক সেনকে ১৯৩১ সালে জেলখানায় গুলি করে হত্যা করা হয়।’৪৭ সালে দেশভাগের পর গৈলার বিপ্লবীর আরেকদফা নির্যাতনের শিকার হন।অনেকেই দেশত্যাগে বাধ্য হন। বাবা অনড় ছিলেন।দেশ ছাড়বেন না তিনি।তিনি পরিনত হন পালিয়ে বেড়ানো বিপ্লবীদের ভরসাস্হলে।জননেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, আন্দামান ফেরত মুকুল সেন, নলিনী দাসদের মত বড় বিপ্লবীগণ ছিলেন বাবার বরেণ্য অতিথি।
স্হানীয় মুসলিম লীগ নেতাদের সংগে একদমই বনিবনা হয়নি তাঁর। পাকিস্তান সরকারকে তিনি খাজনা দিতে অস্বীকার করেন।বাড়িঘর নিলামে ওঠে। পরোয়া করেন নি সেসব।সামরিক শাসক আইউব খানের অতিথি হয়ে ১৯৫৮ এবং ‘৬৪ সালে দুবার কারাভোগ করেন।হাসতে হাসতে গেছেন, হাসতে হাসতে ফিরেছেন।কোন অন্যায়ের কাছে নতি স্বীকার না করার এক অকল্পনীয় সাহস ছিল তাঁর।১৯৭১ সালে আমাদের বাড়িটি আবার সামনে আসে। নির্দ্বিধায় যুদ্ধে পাঠিয়েছেন জামাতা ও সন্তানদের।ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযোদ্রা আমাদের বাডিটিকেই ঘাঁটি বানায়।
বাবা যেন সবার কাছে বটবৃক্ষের ছায়াস্বরূপ।আজ বাবা দিবস। তোমার পথরেখা আমাদের পাথেয় হোক।তোমাকে প্রণাম।