Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইউক্রেনের বিজয়ের মাধ্যমে রাশিয়ান আগ্রাসন শেষ হবে: জেলেনস্কি


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩, ১০:০৮ এএম
ইউক্রেনের বিজয়ের মাধ্যমে রাশিয়ান আগ্রাসন শেষ হবে: জেলেনস্কি

ফাইল ছবি

ঢাকাঃ ইউক্রেনের জয়ের মাধ্যমে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের অবসান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা সফরের সময় দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি এই মন্তব্য করেন।

এসময় রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় কিয়েভকে অব্যাহত সমর্থনের জন্য কানাডাকে বারবার ধন্যবাদ জানান ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট। বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার কানাডার পার্লামেন্টে যান ভলোদিমির জেলেনস্কি। এসময় জেলেনস্কির সঙ্গে ছিলেন ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা। কানাডার হাউস অব কমন্সে পৌঁছলে সবাই দাঁড়িয়ে তাদের অভিবাদন জানান।

 

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর কানাডায় জেলেনস্কির এটিই প্রথম সফর। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে জেলেনস্কি ওয়াশিংটন থেকে অটোয়াতে পৌঁছান। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য রাজনীতিবিদদের সাথে বৈঠক করেন।


কানাডিয়ান পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘চলমান এই রাশিয়ান আগ্রাসন অবশ্যই আমাদের বিজয়ের মাধ্যমে শেষ করতে হবে যাতে রাশিয়া কখনোই ইউক্রেনে গণহত্যা ফিরিয়ে আনতে না পারে এবং কখনোই তা করার চেষ্টাও যেন না করে। মস্কোকে অবশ্যই সবসময় হারতে হবে এবং তারা পরাজিত হবে।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, ১৯৮৩ সালে এডমন্টনে বিশ্বের প্রথম হলডোমোর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কথা বলে জেলেনস্কি তার ভাষণ শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে, ইউক্রেনীয়দের গণহত্যার শিকারদের স্মরণে ইউক্রেনে কোনও স্মৃতিসৌধ ছিল না, কারণ ইউক্রেন তখনও মস্কোর নিয়ন্ত্রণে ছিল।’

জেলেনস্কি বলেন, গত ৪০ বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেন স্বাধীনতা লাভ করেছে এবং কয়েক ডজন দেশ ইউক্রেনীয় জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর জন্য ভ্লাদিমির পুতিনকে অভিযুক্ত হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়েছে। এর মধ্যে এ বছর ১১টি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


জেলেনস্কি বলেন, কানাডার সামরিক সহায়তা ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার প্রাণ বাঁচিয়েছে। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কানাডার প্রশংসাও করেন। সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের আবেদনকে সমর্থন করার জন্য কানাডাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য কানাডার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি কানাডাকে অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য এবং ইউক্রেনকে রাশিয়ার তেল থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মস্কো বরাবরের মতোই এখনও ইউক্রেনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় এবং সেটি অর্জন করতে গণহত্যাসহ সমস্ত উপায়ও ব্যবহার করছে। রাশিয়ান দখলদাররা ইউক্রেনের সাথে যা করছে তা গণহত্যা এবং আমরা এই সংঘাতে জয়ী হতে চাই। যখন আমরা সহায়তা চেয়ে মিত্র দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানাই, তখন সেটি কেবল সাধারণ কোনও সংঘাতের বিষয় নয়, বরং এটি লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানোর বিষয়ে।’

জেলেনস্কি বলেন, চলমান যুদ্ধে জনগণ বিজয়ী হবে, ক্রেমলিন নয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেন এবং কানাডার অভিন্ন বিজয়ের স্মরণে একদিন এডমন্টনে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। তিনি ‘স্লাভা ইউক্রেইনি’ বলে তার বক্তৃতা শেষ করেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন এবং কানাডা একই। আমরা একসাথে দাঁড়িয়ে আছি এবং আমরা জীবনের জন্য লড়াই করি। গণহত্যাকারী শক্তি নয়, ইউক্রেন এই যুদ্ধে বিজয়ী হবে। জনগণ বিজয়ী হবে, ক্রেমলিন নয়। স্বাধীনতা বিজয়ী হবে, ন্যায়বিচার বিজয়ী হবে। কেউ কখনোই মন্দের কাছে নতি স্বীকার করবে না।’

কানাডিয়ান হাউস অব কমন্সে জেলেনস্কির বক্তৃতার পর কানাডার আইনপ্রণেতারা তাকে করতালি দিয়ে সমর্থন জানান। ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এটি কানাডিয়ান পার্লামেন্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় ভাষণ। এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাসে কানাডিয়ান আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে ভার্চ্যুয়ালি ভাষণ দিয়েছিলেন জেলেনস্কি।

এছাড়া শুক্রবার জেলেনস্কির ভাষণের আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। সেসময় তিনি বলেন, কানাডা আগামী বছরজুড়ে ইউক্রেনকে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে যাতে তারা একটি ‘শক্তিশালী, গতিশীল এবং সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক দেশ’ হিসেবে টিকে থাকে।

কানাডিয়ান পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে ট্রুডো আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেনকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সামরিক বা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না এবং শিগগিরই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে শান্তি ফিরে আসবে।


এমআইসি

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে