Dr. Neem on Daraz
Victory Day

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে বিলম্ব, ইসরায়েলকে দায়ী করল হামাস


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে বিলম্ব, ইসরায়েলকে দায়ী করল হামাস

হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ (ফাইল ছবি)

ঢাকাঃ গাজায় যুদ্ধবিরতিতে বিলম্বের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। মূলত গাজায় ইসরায়েলের অভিযান চলছে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধবিরতির চেষ্টায় নানামুখী আলোচনা চললেও এখনও তা সম্ভব হয়নি।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অর্জনে অগ্রগতির না হওয়ার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন বলে স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

হানিয়াহ শনিবার বলেছেন, গাজায় সংঘাত সম্পূর্ণ বন্ধ, গাজা থেকে ইসরায়েলের সেনাদের প্রত্যাহার এবং অন্যায় অবরোধ তুলে নেওয়ার চেয়ে কম কিছু মানবে না হামাস।

তিনি আরও বলেছেন, ‘এটা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট যে, দখলদাররা (ইসরায়েল) আমাদের জনগণের স্বার্থের বিষয়ে কৌশল অবলম্বন করছে এবং বিলম্ব করে চলেছে। অন্যদিকে তাদের অবস্থান প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে আটক বন্দিদের মুক্তিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, যে কোনও আসন্ন বন্দিবিনিময় চুক্তিতে ইসরায়েলকে অবশ্যই দীর্ঘ সাজা ভোগ করা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।

এদিকে শনিবার এক বক্তৃতায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের দাবিগুলোকে ‘ভ্রমপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, বন্দিদের মুক্তির জন্য নতুন কোনও চুক্তি ‘খুব কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে না’।

তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুরোধে ইসরায়েল কায়রোতে যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য আলোচকদের পাঠিয়েছিল। কিন্তু তারা আরও বিস্তৃত আলোচনায় ফিরে যায়নি কারণ হামাসের দাবিগুলো ‘ভ্রমপূর্ণ’।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের সাথে একটি রাষ্ট্রীয় চুক্তির বিষয়ে ‘আন্তর্জাতিক হুকুম’ মেনে নেবে না। তার দাবি, শুধুমাত্র পূর্বশর্ত ছাড়াই সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে এমন লক্ষ্যে পৌঁছানো যেতে পারে।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় চালু থাকা বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্র নাসের হাসপাতালে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করেছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এবং সেনাবাহিনী শনিবার জানিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, ‘দখলদার বাহিনী নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মেডিকেল স্টাফ সদস্যকে আটক করেছে এবং এই স্থাপনাটিকে তারা (ইসরায়েল) একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে।’

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলের আগ্রাসনের পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এবং অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে কমপক্ষে পাঁচজন রোগী মারা গেছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার ঘোষণা করে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা নাসের হাসপাতালে যোদ্ধাদের সন্ধান করছে এবং এখন পর্যন্ত হাসপাতাল প্রাঙ্গন থেকে ১০০ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দাবি, তারা হাসপাতালের কাছে যোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং এর ভেতরে অস্ত্র খুঁজে পেয়েছে।

তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এছাড়া অন্তত দুজন মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলি বন্দি বলেছে, তাদের নাসের হাসপাতালে বন্দি রাখা হয়েছিল, কিন্তু ইসরায়েল আগের অভিযোগগুলোর পক্ষে কোনও ধরনের অকাট্য প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে যে, হাসপাতালগুলোকে হামাসের কমান্ড সেন্টার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, বা বন্দিদের হাসপাতালে আটক রাখা হয়েছে।

অবশ্য হাসপাতালগুলোতে ইসরায়েলের বারবার আক্রমণকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ‘বেআইনি’ হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এসব হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ হিসাবে তদন্ত’ করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) হামলার অভিযোগ করে বলেছে, গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইসরায়েলের সংঘটিত ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের’ প্রমাণ রয়েছে।

হাসপাতালে ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ রোগী, চিকিৎসাকর্মী এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের যারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে তাদের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সপ্তাহের শুরুতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই হয় ইসরায়েলি অভিযানের আশঙ্কায় বা না হয় স্থান ছেড়ে যেতে ইসরায়েলি নির্দেশনার কারণে হাসপাতাল প্রাঙ্গন ছেড়ে গেছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।


এমআইসি/

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে