Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অটোমেশন সেবার আওতায় দেশের বড় স্থল বন্দর


আগামী নিউজ | মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০৩:৪৪ পিএম
অটোমেশন সেবার আওতায় দেশের বড় স্থল বন্দর

ছবি: সংগৃহীত

যশোরঃ বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পর এবার অটোমেশন সেবার আওতায় এসেছে বেনাপোল স্থলবন্দর। প্রায় দেড় বছর পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের পর এবার পূর্ণাঙ্গ রুপে অটোমেশন সেবার আওতায় এসেছে দেশের সব চেয়ে বড় বন্দরটি। ফলে আমদানি পণ্যের সকল তথ্য এখন কম্পিউটার ডাটা বেজে এন্ট্রি হচ্ছে।

অটোমেশন সেবা চালু হওয়ায় ঘরে বসেই কম্পিউটার আর মোবাইলের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে। এর ফলে ভারত থেকে পণ্য আমদানি এবং খালাসে ফিরবে স্বচ্ছতা এতে দ্রুত বাণিজ্য সম্পাদনের পাশাপাশি বেড়েছে নিরাপত্তা ও গতিশীলতা। 

বন্দর সুত্রে জানা যায়, দেশের স্থলপথে সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল স্থলবন্দর। ১৯৭২ সাল থেকে বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু। আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে নিরাপদ বাণিজ্য নিশ্চিত করতে অনেক আগেই অটোমেশন পদ্ধতি চালু করেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ। তবে বন্দরে অটোমেশন না থাকায় কাজের সমন্বয়ে ব্যবসায়ীদের বেশ বেগ পেতে হতো।

বাণিজ্যিক গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৯ সালে জুলাইয়ে বেনাপোল বন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে অটোমেশন কার্যক্রম চালু হয়। চলতি মাসে এসে পূনাঙ্গ প্রক্রিয়ায় এ অটোমেশন সেবা পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বন্দরের প্রশাসনিক ভবন, রাজস্ব দপ্তর, এন্টি শাখা, ওয়ার হাউজ সর্বত্রই অটোমেশন পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন হচ্ছে।

আমদানি পণ্য বন্দরে প্রবেশ থেকে শুরু করে রাজস্ব পরিশোধ পর্যন্ত সব তথ্য থাকছে কর্মকর্তাদের নজরে। মোবাইলের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরাও ঘরে বসেই তাদের পণ্যের অবস্থান জানতে পারছেন। ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক বন্দর এলাকায় প্রবেশের পর মালামালের সঠিকতা নিরুপণ, স্কেলে ওজন, শেড বা ইর্য়াডে পোষ্টিং, পণ্য বন্দরে আনলোড করে ভারতীয় গাড়ি ফিরে যাবার যাবতীয় তথ্য অটোমোশনের কারণে সহজেই নির্ণয় করা যাবে। এর ফলে সুফল পেতে শুরু করেছেন বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাবসায়ীরা।

বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। আমদানি বাণিজ্য থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় ৫ হাজার কোটি টাকা। তবে এই বন্দরটি এতদিন আধুনিকায়নে পিছিয়ে ছিল। আগে শুল্ক ফাঁকি থেকে শুরু করে একজনের পণ্য অন্যজন নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বন্দরে। তবে এখন সে সুযোগ আর নেই। বন্দর অটোমেশন আওতায় আসায় ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই মোবাইলে সার্বক্ষনিক জানতে পারছেন আমদানি পণ্যের তথ্য। এতে বাণিজ্যক নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বেড়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর ওয়ার হাউজ সুপার ধুননঞ্জয় বার্মা বলেন, আমদানি পণ্যের তথ্য আগে খাতা কলমে এন্ট্রি করে তথ্য সংগ্রহ করা হতো। এখন সম্পূর্ণ কম্পিউটারে ডাটাবেজ এন্ট্রিতে অটোমেশন সুবিধার মাধ্যমে দ্রুত তথ্য প্রদান করা যায়। বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসব তথ্য চোখের পলকে দেখতে পারছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ এ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, কাস্টমসের পাশাপাশি বন্দর অটোমেশন হওয়াতে বাণিজ্যে গতি ও স্বচ্ছতা বেড়েছে। আমদানিকারকেরা তথ্য চাইলে দ্রুত সরবরাহ করতে পারি। তারা ইচ্ছে করলে নিজেরাও আমদানির তথ্য মোবাইলে দেখতে পারবেন। তবে বন্দরের সাথে কাস্টমসের অটোমেশন সংযোগ হলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, চট্রগ্রামের পর প্রথম বেনাপোল বন্দর অটোমোশনে যুক্ত হলো। ২০১৯ সালের শেষে দিকে পাইলট প্রকল্প হিসাবে পরীক্ষামূলক বেনাপোল বন্দরে অটোমেশন কার্যক্রম শুরু করা হয়। গুগলক্রমে ঢুকে আমদানিকৃত পণ্যের মেনিফেষ্ট নম্বর এন্ট্রি করে ওয়েভ এ্যাড্রেসে সার্চ দিয়ে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক তার পণ্যের অবস্থান নিশ্চিত হতে পারবেন।

তিনি বলেন, চলতি বছরে এসে এখন সব সেবা চালু হওয়ায় সুফল পেতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে রাজস্ব পরিশোধ পর্যন্ত সব তথ্য নজরদারীতে থাকে। এটি বাণিজ্য সম্প্রসারনের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখছে। প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ডাটাসফ্ট নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২০ আগষ্ট বেনাপোল বন্দরে অটোমোশন কার্যক্রম পুরোপুরি চালু হয়। এর আগে নৌপরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরি গতবছর অটোমোশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেও জনবলের অভাবে তা চালু হয়নি বলে জানান তিনি। 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে