Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সোনার বাংলা গড়তে প্রয়োজন সোনার মানুষের: এমপি রাবেয়া আলীম


আগামী নিউজ | জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১, ০৩:১৬ পিএম
সোনার বাংলা গড়তে প্রয়োজন সোনার মানুষের: এমপি রাবেয়া আলীম

ছবি : আগামী নিউজ

নীলফামারীঃ সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষের প্রয়োজন তাই বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে আ’লীগের নেতৃত্বে কোন রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান থাকতে পারে না। রাজাকার, আলবদর, আল সামস্রে স্থান বাংলাদেশে হবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দলে অনুপ্রবেশকারী যুদ্ধাপরাধীর সন্তানদের দলের নেতৃত্ব থেকে তাড়াতে হবে।

মঙ্গলবার রাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের শেরে বাংলা সড়কে আ’লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংরক্ষিত আসনের এমপি রাবেয়া আলীম ওইসব কথা বলেন।

জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড জনসম্মুখে তুলে ধরা ও রাজাকার, আলবদর যুদ্ধাপরাধীর নতুন চক্রান্তের প্রতিবাদে ওই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর আ’লীগ আয়োজিত এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর আ’লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু।

যুবনেতা সাখাওয়াত হোসেন স্বপন প্রমানিকের সঞ্চালনায় ওই জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ সন্তান মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, আ’লীগ নেতা অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন, সৈয়দপুর কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিকো আহমেদ, আ’লীগ নেতা প্রকৌশলী একেএম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সৈয়দপুর কলেজের সাবেক ভিপি আব্দুস সবুর আলম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ উপজেলা সভাপতি আজম আলী সরকার, বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সরকার জুন, পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরকার মো. কবির উদ্দিন ইউনুস, যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মেহেদী হাসান সুরজ মন্ডল, বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর্জা সালাউদ্দিন বেগ, কাশিরাম ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বুলবুল চৌধুরী, সৈয়দপুর কলেজের সাবেক জিএস মাহমুদ আলম, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি জয়নাল আবেদীন, আ’লীগ নেতা কাজী রাশেদ, সোহরাব হোসেন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন, মৎস্যজীবী লীগ পৌর শাখার সভাপতি ঈশা মিঠু প্রমুখ।

মহসিনুল হক মহসিন তার বক্তব্যে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আ’লীগের নেতাকর্মীরা সোচ্চার হয়েছে। কুখ্যাত রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খানকে রক্ষার জন্য উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন এককভাবে বিতর্কিত বর্ধিত সভা করেছে, যা পুরোপুরি অবৈধ। ওই দিলনেওয়াজ খান মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তি করে। শহীদ পরিবারের সদস্যদের করে সে তিরস্কার। সংখ্যালঘুর বাড়ি দখলকারী ওই রাজাকার পুত্রকে রক্ষা করতে মোখছেদুল মোমিন দলকে বিভক্ত করছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কুখ্যাত রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খান তার প্রাণ ভোমরা। যত দিন সৈয়দপুরের মাটি থেকে রাজাকারের সন্তান বিতাড়িত হবে না ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।

রফিকুল ইসলাম বাবু তার বক্তব্যে বলেন, গত পৌর নির্বাচনে দিলনেওয়াজ খান ও মোখছেদুল মোমিন মিলে ভোট বাণিজ্য করেছে। টাকার বিনিময়ে পৌর কাউন্সিলর বানিয়েছে। তারা ভোট কেড়ে নিতে গিয়ে মানুষ পর্যন্ত ৫নং ওয়ার্ডে খুন হয়েছে। এই খুনের দায়ভার তাদের। একজন মাদকসেবীকে ৫নং ওয়ার্ডে টাকার বিনিময়ে কাউন্সিলর বানিয়েছে। এতে করে আ’লীগ ইমেজ সঙ্কটে পড়েছে সৈয়দপুরে। প্রয়োজনে দলকে রাজাকার ও মাদক ব্যবসায়ী মুক্ত করতে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। এক্ষেত্রে আমরা আ’লীগ ও সহযোগি সংগঠনের সকল নেতাকর্মীসহ জনগনের অকুণ্ঠ সমর্থন আশা করছি।

মোজাম্মেল হক বলেন, রংপুর বিভাগের মাদক কারবারের গডফাদার রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খান। আর তার আশ্রয়দাতা আমাদের আ’লীগের উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজী, দখলবাজী করে সৈয়দপুর শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। এ কারণে পৌর আ’লীগের পদ থেকে রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খানকে আমরা বহিস্কার করেছি। কিন্তু মোখছেদুল মোমিন তাকে দলে ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন বলেন, আমাদের দলে মলম পার্টির সরদার আছে একজন। আর তার সুযোগ্য সাগরেত হলো রাজাকার পুত্র দিলনেওয়াজ খান। নির্বাচন আসলে তারা মলম নিয়ে বের হয়। মলম লাগিয়ে প্রার্থিদের জেতানোর নামে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করে। আ’লীগ জনগনের দল। এ দল তৃণমূল মানুষের। তাই দলকে ব্যবহার করে যারা অপকর্মে জড়িত হবে তাদের স্থান দলে হবে না এটি শেখ হাসিনার নির্দেশ। আর রাজাকার শুধু উর্দুভাষী না, বাংলাভাষীও রাজাকার আছে। ফাঁসি হয়েছে বাংলাভাষী রাজাকারদের, উর্দূভাষীদের নয়।

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, সৈয়দপুর শহরে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দলে ঘাপটি মেরে থাকা একটি ক্ষুদ্র অংশ। তারা বাঙালি ও উর্দুভাষী ইস্যু তুলে শহরে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। সৈয়দপুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহর। এ সম্প্রীতি নষ্ট করতে তারা বাঙালি-বিহারি ইস্যু তৈরি করে। অথচ তারা বাঙালি-বিহারি উভয়ের শত্রু। উর্দুভাষীদের প্রকৃত বন্ধু আমরা। আমার মা উর্দুভাষী। আমার ভাইবোনদের বিয়ে হয়েছে উর্দুভাষী পরিবারের সাথে। আমরা আত্মীয়তার বন্ধন গড়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতে চাইছি। বঙ্গবন্ধু বলেছেন এদেশে বসবাসকারী হিন্দু, মুসলিম, বাঙ্গালি, অবাঙ্গালি আমরা সবাই ভাই। কিন্তু ওই চক্রটি নিজ ফায়দা হাসিল করতে মাঝে মাঝেই বাঙালি বিহারির ঢেকুর তোলে। সেটি আর আগামী দিনে হবে না।

বীরমুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন বেগ বলেন, সৈয়দপুর থেকেই রাজাকার হটাও আন্দোলন শুরু হলো। উল্লেখ্য, সন্ধা ৭টায় জনসভা শুরু হয়ে শেষ হয় রাত ১২টায়। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে মানুষ আ’লীগের ওইসব নেতাদের বক্তব্য শুনেন। এ সময় ছিলো না কারো মাঝে ক্লান্তির কোন ছাপ। 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে