Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পীরগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ


আগামী নিউজ | পীরগাছা প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২১, ০৬:৩১ পিএম
পীরগাছায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ

ছবিঃ আগামী নিউজ

রংপুরঃ চিকন ব্রীজ, এক নামেই চেনেন ফকিরটারী-মাইটালসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। ব্রীজের দুই পাশে সুন্দর পাকা সড়ক থাকলেও ভারী বা ৪ চাকার যানবাহন চলাচল করেত পারে না। রিক্সা-ভ্যান আর সাইকেল-মোটরসাইকেলই এ সড়কের চলাচলের একমাত্র ভরসা।

তালুকইসাদ ফকিরটারী-মাইটাল সড়কের আলাইকুমারী নদীর উপর জরাজীর্ণ এই চিকন ব্রীজ এখন দুই উপজেলার আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের মরণ ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে। নড়েবড়ে ব্রীজ দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। যে কোন সময় ধসে পড়ে প্রাণহাণির আশংকা করছেন এলাকাবাসী। তবুও যেন টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, পীরগাছা উপজেলার তালুক ইসাদ ফকিরটারি-ঠাকুরবাড়ি সড়কের আলাইকুমারী নদীর ওপর দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে এই চিকন ব্রীজটি। এই সড়কটি রংপুর-পীরগাছা ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। ওই স্থানে প্রথমে কাঠের তৈরি ব্রীজ ছিল। যা ১৯৮৬ সালে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে কংক্রিটের পিলারের উপর ৪ ফুট প্রস্ত বিশিষ্ট ৪০ ফুট দীর্ঘ ব্রীজটি নির্মান করা হয়।

এই ব্রীজ দিয়ে পীরগাছা উপজেলার তালুকইসাদ, মাইটাল, ফকিরটারী, নয়াপাড়া, নগরজিৎপুর, খামারটারী, ঘাঘটপাড়া, কালিতলা ও মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনি, ঠাকুরবাড়ি, হুলাশু, বালারহাট, ভগবানপুর, আদমপুর, কাগজিপাড়া, হযরতপুর, জগদানপুর, করিমপুর ও তাজপুর সহ ২০ গ্রামের দেড় লক্ষাধিক মানুষ রংপুর-পীরগাছাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন সড়ককে উন্নয়নের ছোয়া লাগলেও দীর্ঘ ৩২ বছরে সংস্কারে হাত পড়েনি চিকন ব্রীজটির। দু’পার্শে¦ ভেঙ্গে গেছে রেলিং, কংক্রিটের পিলার গুলো ধসে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ব্রীজটি। এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ দিয়ে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চলাচল করছেন। অপ্রশস্ত এই ব্রীজে রিক্সা-ভ্যান উঠলেই ঝুঁকতে থাকে।

তালুকইসাদ গ্রামের কৃষক আলী আজগার, আব্দুল কাদের, স্কুল শিক্ষক হোসেন আলী, শফিকুল ইসলাম, বলেন, অপ্রশস্ত এ ব্রীজ দিয়ে ভারী যানবাহন ও মালবাহি ট্রাক পারাপার হতে না পারায় আমরা কৃষি পন্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। জরুরী প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিস ও এ্যাম্বুলেন্স ঢোকে না। ৫ কিলোমিটার ঘুরে ওকড়া বাড়ি-নগরজিৎপুর হয়ে আসতে হয়।

শিক্ষার্থী হোসনে আরা, জামিরুল ইসলাম বলেন, জন্ম থেকেই দেখছি ব্রীজটি এরকম। ৪ চাকার কোন যানবাহান ঢুকতে পারে না। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। সম্প্রতি একাধিক বার ব্রীজ থেকে ভ্যান-রিক্সা পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় পীরগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান রেজা বলেন, ওই চিকন ব্রীজটি নিয়ে আমি অনেক জায়গায় গিয়েছি। উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংসহ সব মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু কোথাও ইতিবাচক সাড়া মিলছে না।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটি করতে অনেক চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু ভিলেজ রোড হওয়ায় কোন দপ্তর থেকে বরাদ্দ মিলছে না। বেশ কয়েক বার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপিও ডিও লেটার দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, ব্রীজটি কোন দপ্তর থেকে করবে এমন জটিলতার কারণে বরাদ্দ মিলছে না। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ করা হবে।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবার রহমান বলেন, জটিলতা থাকলেও ওই ব্রীজটি নির্মাণে কার্যতালিকার এক নম্বরে রাখা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বরাদ্দ মিলবে।

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে