 
                            সংগৃহীত ছবি
চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ প্রেমিকার ব্যবহৃত ওড়নায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে ফাহিম আহমেদ (১৮) নামে এক শিক্ষার্থী। সদর উপজেলার বারোঘরিয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ওই কলেজছাত্র আত্মহত্যা করে।
সোমবার (১৭ জুলাই) রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার বারোঘরিয়া নতুন বাজারের মহানন্দা মেসের নিজ কক্ষে কলেজছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত কলেজছাত্র ফাহিম আহমেদ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার পারকোল গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র ছিল।
নিহতের স্বজন, সহপাঠী, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলেজ ছাত্র ফাহিম আহমেদ আত্মহত্যার আগে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। পরে তা দেখে তার এক ভাই মেস মালিককে বলে লোকজন পাঠায়। তারা সেখানে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস নেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে ফাহিম লিখেছিলেন, "যে আমি মৃত্যুকে ভীষণ ভয় পেতাম, সেই আমি আজ আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। মন থেকে সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু কালকে রাতের পর থেকে আমি আর এইসব মেনে নিতে পারছি না। আমাকে এত বড় মিথ্যা না বললেও পারতে। মিত্তিকা তুমি আমার বিশ্বাসটা একদম শেষ করে দিয়েছো। আর বিশ্বাস ছাড়া বেঁচে থাকাটা সম্ভব না। তোমার মনে আছে, তুমি আমাকে তোমার ব্যবহার করা একটা ওড়না দিয়েছিলে। আমি সে ওড়নাতেই আজ ফাঁসি নিচ্ছি। আমাকে সবসময় ঠকিয়ে এসেছো তুমি। যা আমি বুঝেও তোমাকে বুঝতে দেইনি। তুমি আমার সত্যি ভালোবাসাটা নষ্ট করে দিয়েছো। বেঁচে থাকলে হয়তো কখনো বা কখনো তোমার মুখটা আমার দেখতে হতো, তাই আমি আর বাঁচতে চাই না। তুমি সব সময় ভালো থেকো।
আমার পরিবারের প্রতি আমার অনেক দায়িত্ব ছিলো তাদের অনেক স্বপ্ন ছিলো আমি ব্যর্থ সেই স্বপ্নগুলো পূরণ করতে। আম্মু পারলে আমাকে মাফ করে দিও, তোমার ছেলেটা এইভাবে চলে যেতে চায়নি কখনো।
ইচ্ছে ছিলো বড় কিছু হয়ে তেমার ইচ্ছা পূরণ করার। তোমাদের অনেক সম্মান নষ্ট করেছি আমার জন্য আর কারো কাছে থেকে তোমাদের খারাপ কথা শুনতে হবে না। আম্মু সত্যি তোমার ছেলে এতটাও খারাপ ছিলো না। সময়মতো ওষুধগুলো খেও। আমি জানি, এটা মহাপাপ, তাও আমি এটা করতে বাধ্য হচ্ছি। কেউ আমার কোনো ব্যবহারে কষ্ট পেয়ে থাকলে মাফ করে দিয়েন। বিশ্বাস ভাঙলে বেঁচে থাকাটা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। চোখে রঙিন স্বপ্ন নিয়ে বিদায় নিচ্ছি।"
নিহত ফাহিমের মা, সহপাঠী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান জানায়, প্রেমঘটিত সমস্যা ও হতাশা থেকে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ জানান, মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুইউ
-20251013141837.jpg) 
      -20251013095452.jpg) 
       
       
       
      -20250923081410.jpg) 
       
       
       
      -20250815155757.jpg)