Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪.৫৭ পেলেন কালুখালীর হাবিব


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৩:২৯ পিএম
পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪.৫৭ পেলেন কালুখালীর হাবিব

রাজবাড়ীঃ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আটকে রাখতে পারেনি হাবিবকে। তাই তো দুই হাত না থাকলেও পা দিয়ে লিখে এবার আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৫৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন হাবিবুর রহমান হাবিব (১৯)। 

হা‌বিব রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি গ্রামের কৃষক আব্দুস সামা‌দের ছে‌লে। তি‌নি পাংশার পুঁইজোর সি‌দ্দি‌কিয়া ফা‌জিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থে‌কে পা দিয়ে লিখে এবার আলিম পরীক্ষায় অংশ নি‌য়ে‌ছিলেন। 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য জানান মাদরাসার অধ্যক্ষ সাঈদ আহম্মেদ।

খোঁজ নি‌য়ে জানা গেছে, দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হা‌বিবুর রহমান। চার ভাইবো‌নের ম‌ধ্যে তৃতীয় তিনি। জন্মগতভাবেই হাত নেই হা‌বি‌বের। ছোটবেলায় বাবা-মা, চাচা ও পরিবারের অন্যদের অনুপ্রেরণায় পা দি‌য়ে লেখার অভ্যাস ক‌রেন। শিক্ষা জীব‌নের প্রথমে সে কালুখালী উপ‌জেলার মৃগী ইউনিয়‌নের হিমা‌য়েতখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থে‌কে পা দি‌য়ে লিখে পিএস‌সিতে ৪.৬৭ পয়েন্ট পেয়ে পাস ক‌রেন। এরপর শুরু হয় মাধ্যমিকের শিক্ষা। এরপর পাংশা উপ‌জেলার পুঁই‌জোর সি‌দ্দি‌কিয়া ফা‌জিল (ডিগ্রি) মাদরাসা থেকে জে‌ডিসি পরীক্ষায় অংশ নি‌য়ে ৪.৬১ পয়েন্ট পে‌য়ে পাস করেন।পরবর্তীতে আর পেছন ফি‌রে না তা‌কাতে হয়নি তাকে। একই মাদরাসা থে‌কে ২০১৯ সা‌লে দা‌খিল (এসএস‌সি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নি‌য়ে পান জি‌পিএ ৪.৬৩।

হাবিবুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী। দুই হাত নেই, পা দিয়ে লিখেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আজ আমি আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। এ পর্যন্ত আসতে আমার অনেক প্রতিবন্ধকতা পার করতে হয়েছে। নানান জন নানান কথা বলেছে। কিন্তু আমি তাতে কান দেইনি। নিজের আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছাশক্তির কারণে আজ আমি এতদূর এসেছি। আমার ইচ্ছা ছিল জিপিএ-৫ পাব। কিন্তু জিপিএ ৪.৫৭ পেয়েছি। এতেই আমি খুশি। এখন আমার স্বপ্ন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। পড়াশুনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

হাবিবুর রহমানের বড় দুলাভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, হাবিব জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার মধ্যে অনেক প্রতিভা এবং আত্মবিশ্বাস রয়েছে। সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চায়। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সাঈদ আহম্মেদ বলেন, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হাবিব। তবে সে অত্যন্ত মেধাবী। ফলে প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে এবারের আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫৭ পেয়েছেন। পা দিয়ে লিখে এরকম রেজাল্ট করা সত্যি কষ্টকর। আসলে তার চেষ্টায় সে এগিয়ে যাচ্ছে। হাবিবের পড়াশুনা চালিয়ে যেতে মাদরাসা থেকে ও ব্যক্তিগতভাবেও সহযোগিতা করেছি। আগামীতে উচ্চ শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করা হবে।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে