Dr. Neem on Daraz
Victory Day

কুয়াকাটায় পর্যটকদের সেতু বন্ধনে জমে উঠেছে সৈকতের তীর


আগামী নিউজ | উপজেলা প্রতিনিধি, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রকাশিত: মে ২১, ২০২২, ০২:৩৯ পিএম
কুয়াকাটায় পর্যটকদের সেতু বন্ধনে জমে উঠেছে সৈকতের তীর

পটুয়াখালীঃ পর্যটন নগরী সাগরকন্যা খ্যাতসকুয়াকাটায় পূর্ণিমার জোয়ারের সঙ্গে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। বিশাল ঢেউ এসে সৈকতের তীরে আঁচড়ে পড়ছে শো শো শব্দে গর্জন করে জানান দিচ্ছে বর্ষার আগমনকে। দক্ষিনা তীব্র বাতাসে কুঞ্জ ছায়ায় কাঠ ফাঁটা রোদে তপ্ত হয়ে হাজারো পর্যটকদের আড্ডায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সৈকত লাগোয়া ঝাউবাগানসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো। প্রকৃতির প্রেমে পর্যটকদের সেতু বন্ধনে অন্য এক আনন্দঘন পরিবেশ হয়ে উঠেছে পর্যটন নগরী সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সৈকত।

কুয়াকাটা সৈকতে শীতে মৌসুমে বেড়াতে এসেছেন যে সকল পর্যটক, তাদের কাছে বর্ষার সাজে সুসজ্জিত ও নতুন রূপে আলাদা এক অনুভূতি হচ্ছে বলে জানান কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা। আগত পর্যটকরা শুটকি পল্লী, গঙ্গামতির লেক, রাখাইন পল্লী, ঝাউ বন, লেম্বুর বন, লাল কাকড়ার চর, তিন নদীর মোহনা, কুয়াকাটার কুয়া, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহার সহ অধিকাংশ পর্যটন স্পট এখন পর্যটদের পদচারণায় মুখর। বর্ষার মৌসুম শুরু হওয়ায় সমূদ্র উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে সমুদ্রের পানি এবং ঢেউয়ের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকাংশে। সমুদ্রের ঢেউ এসে আঁচড়ে পরছে সৈকতের ভূ-পৃষ্ঠে। সমুদ্রের এমন রুদ্র মুর্তি দেখে কেউ কেউ ভয়ে সমুদ্রে নামছে না। আবার অনেক এ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটক ও দর্শনার্থীরা বর্ষার এই সমুদ্র দেখে খুশি। উত্তাল সমুদ্রে পর্যটকদের সাগরে গোসল ও সাতার কাটতে মাইকিং করে সতর্ক করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশের এমন সচেতনতার মধ্যেও আগত পর্যটকদের উম্মাদণা ছিল দেখার মত।

স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্র শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিনে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনে উৎসবমুখর এক পরিবেশের সৃস্টি হয়। উত্তাল সমুদ্রে গোসল, হই হুল্লোড়, ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে আনন্দ উল্লাস ও উম্মাদনায় মেতে ওঠে নানা বয়সের পর্যটকরা। উত্তাল সমুদ্র, বিশাল আকারের ঢেউ’র ভয়কে জয় করে সমুদ্রে সাতার কাটা, ওয়াটার বাইকে ঘুরে বেড়ানো, ঢেউয়ের সাথে গাঁ ভাসিয়ে দিয়ে সৈকতে
গড়াগড়ি খাচ্ছে সমুদ্র প্রিয় পর্যটকরা। এমন ছন্দময় সময়কে স্বরনীয় করে রাখতে অনেকেই সৈকতের ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুলছে, কেউ কেউ ছাতার নিচে বসে সমুদ্র ও সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছে, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে সৈকতের প্রকৃতি দেখছে। আগত পর্যটকরা অনেকেই এর আগেসমুদ্রের এমন রুদ্র রুপ দেখেনি। মৌসুমের শেষে বর্ষার শুরুতে ছুটির দিনে কুয়াকাটায় অসংখ্য
পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোতে কম ভাড়ায় রুম পেয়ে খুশি পর্যটকরা। খাবার হোটেল, ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মার্কেট, মিশ্রিপাড়া তাতঁ পল্লীতে কেনাকাটায় খুবই খুশি পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। মৌসুমে অসংখ্য পর্যটকদের আগমনে খুশি তারা। তবে খাবারের মুল্য নিয়ে পর্যটকদের কোন অভিযোগ না থাকলেও অভিযোগ রয়েছে মানহীন খাবার নিয়ে। দুই থেকে তিন মাস আগে ফ্রিজে রাখা মাছ খাওয়ানো হচ্ছে পর্যটকদের।

পর্যটক শিমুল রহমান স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসে এ প্রতিবেদককে বলেন, সমুদ্র সৈকতে ভ্রমনে আসলে বর্ষা মৌসুমে আসতে হবে। বর্ষার সমুদ্র এবং সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ দেখে মুগ্ধ তারা। শীতের সমুদ্র এবং বর্ষার সমুদ্রের রুপ সম্পুর্ন ভিন্নতা রয়েছে। তার মতে সমুদ্রের রুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে বর্ষা মৌসুমেই আসা উচিত। কুয়াকাটা সৈকতে না আসলে তিনি প্রকৃতিকে উপভোগ থেকে বঞ্চিত থাকতেন।

কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল সি-বিচের মালিক সানোয়ার হোসেন জানান, মৌসুমের শেষে ছুটির দিনে অনেক পর্যটকের আগমন ঝটেছে। তার হোটেলের অধিকাংশ রুমই বুকিং রয়েছে। তবে শীত মৌসুমের চেয়ে অনেক কম ভাড়ায় রুম বুকিং দিয়েছে। এতে পর্যটকরাও খুশি বলে জানান এই হোটেল মালিক।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। উত্তাল সমুদ্রে গোসল, সাতার কাটতে গিয়ে যেন কোন দূর্ঘটনায় না পরে সেদিকেও খেয়াল রাখছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং কোন ধরনের  দূর্ঘটনা রোধে স্পীড বোট ও ওয়াটার বাইক প্রস্তুত রাখা হয়েছে সবসময়ের জন্য।

রাসেল কবির মুরাদ/এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে