Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮১


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০১৯, ০৯:৫৮ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮১

মিলন হবে কতদিনে।
আমার মনের মানুষের সনে॥
চাতক প্রায় অহর্নিশি
চেয়ে আছে কালশশী
হব বলে চরণদাসী
ও তা হয় না কপাল গুণে॥
মেঘের বিদ্যুৎ মেঘে যেমন
লুকালে না পায় অন্বেষণ
কালারে হারায়ে তেমন
ঐ রূপ হেরি এ দর্পণে॥
ঐ রূপ যখন স্মরণে হয়
থাকে না লোক লজ্জার ভয়
লালন ফকির কেঁদে বলে সদাই
ও প্রেম যে করে সেই জানে॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা: মানুষের সৃষ্টি মহাশক্তি থেকে। মানুষের মধ্যে সেই মহাশক্তির গুণাগুণ বিরাজিত আছে। সেই কারণে মানুষ সেই মহাশক্তির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে এই পৃথিবীতে। বাস্তব ক্ষেত্রে মানুষের ভিতরের লোভ, দ্বেষ ও মোহের কারণে মানুষ সেই মহাশক্তির সাথে একাকার হয়ে সবসময় অবস্থান করতে পারে না। এই বস্তুর আকর্ষণ তাকে মহাশক্তির সাথে মিশতে দেয় না। কারণ বস্তুর আকর্ষণ তার মধ্যকার মহা প্রজ্ঞার যে শক্তি তার উপর এক জাতীয় বস্তুর প্রলেপ ফেলে দেয়। ফলে তার মধ্যকার আদি শক্তির সাথে মহাশক্তির মধ্যকার অভিন্ন মিশে যাওয়ার যে প্রভাব তা থেকে সে বঞ্চিত হয়।

লালন সাঁইজী তাই তার প্রজ্ঞার মাধ্যমে সেই মহাশক্তির সাথে মিলনের লক্ষ্যে আহ্বান জানাচ্ছেন। লালন সাঁইজীর আকুতি তিনি সেই মহাশক্তির সাথে একাকার হয়ে পৃথিবীতে বিরাজ করবেন। কিন্তু কপাল গুণে বা কর্মের কারণে সে তার সাথে মিলিত হতে পারছে না।

মেঘের বিদ্যুৎ যেমন দেখা দিয়ে আবার মেঘের মধ্যে মিশে যায়। তেমনি মানুষের সেই আদি প্রজ্ঞা শক্তির মাঝে মাঝে ঝলক দিলেও তা আবার অদৃশ্য হয়ে যায় বস্তুগত আকর্ষণের কারণে। তাই সেই আদি স্বভাবের সাথে মিশে যাবার জন্য সাঁইজীর আকাঙ্ক্ষা। প্রকৃতপক্ষে সাধক যখন সাধনার শক্তির দ্বারা নিজের মধ্যে প্রজ্ঞা প্রতিষ্ঠিত করে তখন সে সবসময় প্রতিটা মুহুর্তে তার মহাশক্তির সাথে নিজের শক্তিকে একাকার করে এই পৃথিবীর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে।

০৬-০৬-২০১৭    

সকালঃ ৭:২৫       

আগামী নিউজ / হাসি

                           

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে