Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ নারীদের অনুসরণ করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২, ০৪:০৩ পিএম
বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ নারীদের অনুসরণ করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকাঃ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনাদর্শ অনুসরণ করে নারীদের অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া ও বিলাসিতা ছেড়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সোমবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্র চালিয়েছেন আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু অনেক বিষয়ে আমার মা তার পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মায়ের সহযোগিতায় আমার আব্বা মনে প্রাণে দেশের কাজটা করতে পেরেছিলেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো…সেক্ষেত্রে আমার মা যে সিদ্ধান্তগুলো দিয়েছেন, সেটাই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে সব চেয়ে সহায়ক হয়েছে। ‘ছয় দফা’ বাদ দিয়ে যদি ‘আট দফায়’ চলে যেত আওয়ামী লীগ, তাহলে এই দেশে কখনও মানুষের মুক্তি আসতো না।

তিনি বলেন, বাবার প্যারোলে মুক্তির জন্য যে চাপটা ছিল…দুর্ভাগ্য আমাদের আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারাই কিন্তু চাপটা দিয়েছিলেন। তখন যদি আব্বা প্যারোলে চলে যান... তাহলে এই আন্দোলনও থাকতো না, সংগ্রামও থাকত না, আগরতলা মামলাও প্রত্যাহার হতো না। সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়েছিল। আর বাকি আসামিদের তারা মৃত্যুদণ্ডই দিত। কেউ আর বেঁচে থাকত না, বাংলাদেশ স্বাধীনতার মুখ দেখতে পারত না। 

শেখ হাসিনা বলেন, সবসময় আমার মা ছিলেন আমার বাবার ছায়া সঙ্গী। বাবার আদর্শটাকে তিনি ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি কাজে তিনি সহযোগিতা করতেন। আমার আব্বার খুব সৌভাগ্য ছিল, আমার মায়ের মতো একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে আমার দাদা-দাদীর কথাও বলব। বাবা-মা বড় ছেলে কলকাতায় হোস্টেলে রেখে পড়াচ্ছেন, আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারত বড় ছেলে টাকা কামাই করে তাদের দেবেন। কিন্তু উল্টো তারা টাকা দিতো এবং আমার মাও নিজের খরচের টাকা দিয়ে দিতেন। আব্বা এরকম জীবন সাথী ও বাবা-মা পেয়েছিলেন বলেই আমাদের দেশের সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করা এবং স্বাধীনতা অর্জন সহজ হয়েছিল।

তিনি বলেন, মা যদি ত্যাগ শিকার না করতেন... সারাক্ষণ এটা চাই, ওইটা চাই, মন্ত্রী থেকে কেন পদত্যাগ করলে? মন্ত্রীর বাড়ি ছেড়ে কেন যেতে হবে? এত আয়েশে থেকে কেন যাবে নাজিরা বাজারের অন্ধকার গলিতে। আমার মা কিন্তু কখনোই এগুলো বলেননি। যখন যে অবস্থায় থাকা সেই অবস্থায় মানিয়ে চলার এক অদ্ভুত শক্তি ছিল তার। আমাদেরও সেটা তিনি শিখিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহারাওয়ার্দীর পরামর্শে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে বঙ্গবন্ধু লিখে দেন বলে জানান তাদের কন্যা শেখ হাসিনা। সেই সময় তাদের বিয়ের কাবিন নামা থেকে বঙ্গমাতার জন্ম তারিখ জানা যায় বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেই থেকে মায়ের জন্মদিন আমরা ঘরোয়াভাবেই পালন করতাম।

দেশের নারী সমাজকে বঙ্গমাতার আদর্শ ধারণ করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু চাওয়া-পাওয়া, বিলাসিতা জীবন নয়। মানুষের কল্যাণে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আদর্শ মেনে চললে মানুষের জন্য অনেক অবদান রাখা যেতে পারে। আমার মা তার মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে, আমার বাবা যে মহৎ অর্জন করেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে সেটাই তিনি দিয়ে গেছেন। 

অনুষ্ঠানে ঢাকায় বঙ্গমাতা কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের নবনির্মিত ১০ তলা ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেশের প্রতিটি জেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল করার নির্দেশনাও দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় এই ধরনের মহিলা হোস্টেল করে দেওয়া উচিত। আমাদের অনেক কর্মজীবী মহিলা আছেন, তারা যেন সঠিকভাবে থাকতে পারেন সেই ব্যবস্থাটা নেওয়া উচিত। জেলা-উপজেলায় এটা করে দিতে পারলে কর্মজীবী মহিলাদের থাকার ব্যবস্থা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কথা সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব ও সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।

এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে