Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পদ্মা সেতুর ব্যয় ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি : প্রধানমন্ত্রী


আগামী নিউজ | আগামী নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২, ০২:১২ পিএম
পদ্মা সেতুর ব্যয় ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকাঃ পদ্মা সেতুর ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ধরা হলেও ২৭ হাজার ৭৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ৪শ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার ও গ্যাস লাইনের এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়সহ মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ধরা হলেও ব্যয় হয়েছে ১১ হাজার ৯৩৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এছাড়াও নদী শাসনে ৮ হাজার ৭০৬ কোটি ৯১ লাখ, অ্যাপ্রোচ সড়কে এক হাজার ৮৯৫ কোটি ৫৫ লাখ, পুনর্বাসনে এক হাজার ১১৬ কোটি ৭৬ লাখ এবং ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

সরকার প্রধান জানান, ২১ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি: ভৌত- ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ও আর্থিক- ৯১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। মূল সেতু: ভৌত- ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ও আর্থিক- ৯৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। নদীশাসন: ভৌত- ৯৪ শতাংশ ও আর্থিক- ৮৯ দশমিক ১০ শতাংশ।

‘পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ২৫-এ জুন শনিবার বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন হবে, ইনশাআল্লাহ। পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের প্রমত্তা পদ্মা নদী দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসকারী গর্ব। মানুষেরাই জানেন, কী ঝুঁকি নিয়ে আর কত কষ্ট এবং সময় ব্যয় করে রাজধানীতে পৌঁছাতে হয়।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর আমি ১৯৯৭ সালে জাপান সফর করি। পদ্মা নদী এবং রূপসা নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করি। জাপান সরকার দুটি নদীর উপরই সেতু নির্মাণে রাজি হয়। যেহেতু পদ্মা অনেক খরস্রোতা, বিশাল নদী, তাই পদ্মা নদী সমীক্ষা শুরু করে। আর রূপসা নদীর উপর আমার অনুরোধে পূর্বেই নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২০০১ সালে পদ্মার নদীর উপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষার তথ্য আমাদের দেয়। জাপানের সমীক্ষায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান নির্বাচন করা হয়। এই সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০০১ সালের ৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমি মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা সরকারে আসতে পারিনি। ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামাত জোট সরকার মাওয়া প্রান্তে সেতু নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং জাপান সরকারকে পুনরায় মানিকগঞ্জের আরিচা প্রান্তে পদ্মা সেতুর জন্য সমীক্ষা করতে বলে। দ্বিতীয়বার সমীক্ষার পর জাপান মাওয়া প্রান্তকেই নির্দিষ্ট করে পদ্মা সেতু নির্মাণের রিপোর্ট পেশ করে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা আবার সরকারের দায়িত্বে এসে পদ্মা সেতু নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ২২ দিনের মাথায় পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ নকশা তৈরির জন্য নিউজিল্যান্ডভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মনসেল এইকম-কে নিয়োগ দেওয়া হয়। শুরুতে সেতু প্রকল্পে রেল চলাচলের সুবিধা ছিল না। আমি রেল সুবিধা যুক্ত করে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নের নির্দেশ দেই।

তিনি বলেন, ২০১০ সালের মধ্যে নকশা চূড়ান্ত হয়ে যায়। পরের বছর জানুয়ারিতে ডিপিপি সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ ছিল। শুরুতে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল ৫ দশমিক পাঁচ-আট কিলোমিটার। পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬ দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটার হয়।

সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথম ডিপিপিতে সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে তিনটির নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা রেখে নকশা করা হয়েছিল। পরে ৩৭টি স্প্যানের নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের সুযোগ রাখার বিষয়টি যুক্ত করা হয়। সংশোধিত ডিপিপিতে বেশি ভার বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন রেল সংযোগ যুক্ত করা হয়। কংক্রিটের বদলে ইস্পাত বা স্টিলের অবকাঠামো যুক্ত হয়। সেতু নির্মাণে পাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও বাড়তি গভীরতা ধরা হয়। বাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ব্যয়ও।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ২০১৬ সালে যখন ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়, তখন মূল সেতু নির্মাণ, নদীশাসনসহ সব কাজের ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন হয়ে যায়। এর মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার মান প্রায় ৯ টাকা কমে যায়। এক দশমিক তিন কিলোমিটার নদীশাসনের কাজ নতুন করে যুক্ত হয়। মূল সেতু, নদীশাসন ও সংযোগ সড়কে যে পরিমাণ অর্থে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার প্রাক্কলন করা হয়েছিল, তা থেকে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা বেড়ে যায়। এছাড়া জমি অধিগ্রহণে খরচ বাড়ে, ফেরিঘাট সরাতে ব্যয় হয় এবং নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা হয়।

এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে