ঢাকাঃ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের আলোচিত চেয়ারম্যান ‘বালুখেকো’ সেলিম খান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামানের আদালতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সেলিম খান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন। বিচারক সবার শেষে এ বিষয়ে শুনানি শুনবেন।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেলিম খানের হাইকোর্টের দেওয়া চার সপ্তাহের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সেলিম খানকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চার সপ্তাহ পর তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতি পূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
সেলিম খান যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করে অসংগতি পাওয়া গেছে। লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজায় সেলিম খানের ১৯ দশমিক ৮৯ একর জমি, ঢাকার কাকরাইলে আজমিন নামে একটি পাঁচতলা ভবন, কাকরাইলে ৭১৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকায় ১০ তলা বাড়িসহ মোট ২৬ কোটি ৪২ লাখ ৩২ হাজার ২১ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ রয়েছে।
এ ছাড়া তার ছয়টি ড্রেজার, তিনটি প্রাইভেট কার/জিপ, একটি পিস্তল, একটি শটগান, আসবাব, পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি মোটরসাইকেল, ইলেকট্রনিক সরঞ্জামাদি, নয়টি সিনেমা নির্মাণ ও আমদানিতে বিনিয়োগ, ৫৮টি সিনেমা নির্মাণে অনুমতির নিবন্ধন ফি জমা, ব্যাংক হিসাবে জমা ও হাতে নগদসহ আরও ১১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, স্থাবর ও অস্থাবর মিলে সেলিম খানের ৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং পারিবারিক ও অন্যান্য বাবদ এক কোটি ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৩১০ টাকা পাওয়া গেছে। এ সব সম্পদের বিপরীতে গ্রহণযোগ্য চার কোটি ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৬ টাকা আয়ের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলেও বাকি ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এমবুইউ