Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পুলিশকন্যা রুম্পাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয় সৈকত!


আগামী নিউজ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৯, ০৪:৪৭ পিএম
পুলিশকন্যা রুম্পাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয় সৈকত!

ঢাকা : পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে রুবাইয়াত শারমিন রুম্পাকে প্রেমিক সৈকত ও তার বন্ধুরা ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে, রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুম্পা হত্যায়। রুম্পাকে নিয়ে সৈকত সেই ভবনে ঢুকেছিল এমন ফুটেজ এখন গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। ভবনের ছাদের কোনায় রুম্পার জুতার ছাপও পেয়েছে। এসব আলামত এখন সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে।    

আবদুর রহমান সৈকতের রুম্পার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে সেই সম্পর্কের ইতি টানতে চাইলে সৈকত ও রুম্পার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এতো কিছুর পরও রুম্পা বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেনি। ঘটনার দিন সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।

সিদ্দেশ্বরী রাস্তা থেকে রুম্পার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার সৈকতকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমন সন্দেহ হচ্ছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)। এ কারণে সৈকতকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিল ডিবি। তবে তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রুম্পার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনার জোন টিমের পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস।

এর আগে, শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে সৈকতকে আটক করে ডিবিতে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার তাকে রমনা থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। গোয়েন্দা পুলিশ সৈকতের সহযোগী যারা ছিল তাদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে।  

প্রাথমিক তদন্তের বিষয়ে ডিবি পুলিশ আদালতকে জানান, রুম্পা ও সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দিন দিন তাদের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। ৪ ডিসেম্বর বিকেলে তারা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বাইরে দেখা করেন। তখন কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন সৈকত। রুম্পা বারবার অনুরোধ করলেও সৈকত সম্পর্ক রাখতে রাজি হচ্ছিলেন না। এ নিয়ে দু’জনের মনোমালিন্য ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে ওই দিন রাত পৌনে ১১টায় সৈকত তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে রুম্পাকে ৬৪/৪ সিদ্ধেশ্বরীর বাড়িটির ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে রুম্পাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। এটাই প্রাথমিকভাবে জোর সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে ৬৪/৪ নম্বর বাড়ির প্রধান গেটের সামনে রুম্পার লাশ পড়েছিল। আশপাশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই সময় ওপর থেকে বিকট শব্দে কিছু একটা পড়েছিল। পরে বেরিয়ে দেখেন রাস্তায় পড়ে আছে এক তরুণীর লাশ। রুম্পার লাশ যেখানে পড়েছিল ওই রাস্তার এক পাশে চারতলা এবং অপর পাশে পাঁচতলা একটি ভবন রয়েছে। ওই রাস্তার মাথায় রয়েছে একটি ১১ তলা ভবনের (আয়েশা শপিং কমপ্লেক্স) পেছন দিক। কিছু সমীকরণ মেলায় ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ১১ তলা ভবনের ছাদ থেকেই পড়েছেন।

গত বুধবার রাত পৌনে ১১টায় সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটির ওই ছাত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে জায়গায় এ ঘটনা ঘটে তার আশপাশে বেশকিছু ছেলে ও মেয়েদের হোস্টেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রুম্পার বাবা রোকন উদ্দিন হবিগঞ্জ এলাকায় পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। তবে রুম্পা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগে। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড থেকে।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রূম্পার মরদেহ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের বিজয়নগরে দাফন করা হয়েছে।

ঘটনার পরদিন শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে উপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার নমুনা পাওয়া গেছে। তার ভিসেরা ও ব্লাড পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আগে শারীরিক মেলামেশা বা ধর্ষণ হয়েছে কিনা, সেই নমুনাও পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ডিএনএ নমুনাও। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

আগামী নিউজ/এমআরএস/এএম
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে