Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড জালিয়াতি চক্রের ১৩ সদস্য আটক, ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২০, ০৪:৫২ পিএম
মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড জালিয়াতি চক্রের ১৩ সদস্য আটক, ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার

আটককৃত প্রতারক চক্র

ঢাকাঃ রাজধানী ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মোবাইল ব্যাংকিং, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড প্রতারক চক্রের ১৩ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। রবিবার র্য্যাবের লিগেল ও মিডিয়া উংয়ের পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নামে এজেন্ট বা ব্যাংক ম্যানেজারের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ঘরবন্দি সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভয়ংকর প্রতারণা করছিল একটি চক্র। চক্রটি প্রায় এককোটি টাকা হাতিয়েও নিয়েছে। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে যারা সর্বশান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে শুধু লেখাপড়া কম জানা মানুষই যে আছে তা নয়, শিক্ষিত অনেক গ্রাহকও ফাঁদে পা দিয়েছেন। একটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলার পর ঘটনার তদন্তে নামে র‌্যাব। শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানী এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-২ ও র‌্যাবব-৮ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার ১৪ লাখ টাকা ও মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। সারোয়ার বিন কাশেম জানান, চক্রটি পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে অপরাধ কার্যক্রম চালাতো। এর মধ্যে রয়েছে হান্টার টিম, স্পুফিং বা নম্বর ক্লোন টিম, ফেক কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও ওয়াচম্যান টিম। তিনি জানান, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে করোনাকালে ঘরবন্দি মানুষ বেশি প্রতারিত হচ্ছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের উপদ্রব বেড়েছে। যারা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। একজন মাস্টার মাইন্ড পুরো টিমটি নিয়ন্ত্রণ করত বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। হান্টার টিম প্রথমে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে বিকাশ বা নগদ বা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হেল্পলাইন নম্বর ক্লোনিং করে। এমনকি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে তারা। এজন্য নম্বর প্রতি একহাজার টাকা করে দেওয়া হয়। পরে কাস্টমার কেয়ার খুলে (১০ জনের টিম) বসে গ্রাহকদের ফোন দেয়। এর আগে গ্রাহকের মোবাইলে পিন বা কোড নম্বর পাঠিয়ে বলা হয় দ্রুত কোড দেন, না হলে আপনার মোবাইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। যে কোডটি পাঠাবে সেই ‘ফাঁদে’পড়ল। প্রতারকরা ব্যাংক ম্যানেজার বা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নম্বর ক্লোন করে ফোন দেয় বলে অনেক গ্রাহক তাদের খপ্পড়ে পড়ে যান।

গ্রাহকের টাকা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই টাকা উত্তোলন করে ফেলা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব টাকা তোলে। যেমন- ঢাকার টাকা সিলেটে বা চট্টগ্রামে পাঠায়। আবার অনেক সময় টাকা তোলা না গেলে- টিভি, ফ্রিজ, এসি বা জামা কাপড় কিনে ফেলা হয়। এতো সতকর্তার পরও এগুলো বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান- যেমন পনের দোকান, সাইকেলের দোকান থেকে তাদের তথ্য ফাঁস দেওয়া হয়। এছাড়া তারা ফরিদপুরের বিভিন্ন নদীর পাড়ে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে রাত জেগে এসব কাজ করে। আবার লটারির ফাঁদে ফেলে অনেক সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে। গ্রেপ্তার ১৩ জন এর আগে কখনও ধরা পড়েনি জানিয়ে র‍্যাব জানান, তারা এর আগে গ্রেপ্তার হয়নি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ২ মাসে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সারা দেশে এমন আরো সাত/ আটটি গ্রুপের তথ্য র্যাবের কাছে আছে। একেকটি গ্রুপে ৩০/৩৫ জন সদস্য কাজ করে। তাদের ধরতে র‍্যাব কাজ করছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

আগামী নিউজ/জেএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে