Dr. Neem on Daraz
Victory Day

টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের সাদা শুভ্রতায় ছুটছেন সবাই


আগামী নিউজ | রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৩, ০৫:১৮ পিএম
টাঙ্গন নদীর ধারের কাশফুলের সাদা শুভ্রতায় ছুটছেন সবাই

ছবি: আগামী নিউজ

ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়েনের শইফতপাড়া ব্রীজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর ধারের প্রকৃতি সেজেছে যেন এক নৈসর্গিক সাজে। এখানে একদিকে নদীর কলতান অন্যদিকে কাঁশফুলের সৌন্দর্য নজর কাড়ছে সবার।

 

শরতকে বলা হয় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অনন্য ‍ঋতু। আর এই শরতে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে উঠা লম্বাটে সবুজ গড়নের কাঁশবনের গাছের ডগায় ফুটন্ত কাঁশফুল নজর কাড়ে যে কারো'র। তেমনি এই নদীর ধারের সাদা কাঁশফুলের শুভ্রতা ও নদীর কলতানে বিমুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমিরা। এতে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকে। 

 

চলতি বছরের গত সোমবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে দেখা যায়, স্থানীয় বামন শ্মশান ঘাটের পাশেই ছোট এই নদীর ধারে জন্মানো সাদা কাঁশফুলের কোমল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিতে। আর আকাশের সাদা মেঘের সঙ্গে বাতাসে দোল খাওয়া কাঁশফুল ও নদীর স্নিগ্ধ-শান্ত রূপ আকৃষ্ট করছে ছোট বড় সকলকে। 

 

তাই প্রভাতের স্নিগ্ধ আলো আর গোধূলি লগ্ন অর্থাৎ সন্ধ্যার আগ মহূর্ত পর্যন্ত মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকচ্ছে এই কাঁশবনটি। এখানে এসে অনেকে ব্যস্ত থাকছেন ডিএসএলআর ক্যামেরা ও মোবাইলে ছবি তোলা নিয়ে। কেউ যেন ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারছেন না। 

 

ঠাকুরগাঁও রোড বাজারের ব্যবসায়ী মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বস্ততার জন্য খুব ক্নান্ত লাগছিল ও মনটাও খারাপ ছিল। আমার ছোট ভাইয়ের কাছে শুনে এখানে একটু ঘুরতে আসলাম। এসে দেখি এখানে অনেক মানুষ ভীর করছে। নদীর ধারে এই কাঁশফুলে ঘুরে আমার মনটা ভরে গেল ও প্রকৃতির এমন রূপ দেখে খুব প্রশান্তি অনুভব করছি। যদিও আমার মনটা খারাপ ছিল এখানে এসে ভালো হয়ে গেল।'

 

সদর উপজেলার রুহিয়া থানা এলাকার সেনিহাড়ি থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে এসেছেন মো. শাহীন আলম। তিনি বলেন ‘মানুষের কাছে শুনে এখানে এসে দূরে নদীর ব্রীজের উপর থেকে দেখি সূর্যের আলো যখন কাঁশফুলের উপরে পরে তখন দেখতে আরও অন্যরকম সুন্দর দেখায়। আর কাছে এসে আরও আমরা বিমুগ্ধ হই। আসলে এখানে নিজে না আসলে অনুভূতিটা কেউ বুঝতে পারবে না।’ 

 

ফারাবাড়ি বাজার এলাকার স্থানীয় লিঙ্কন নামে এক যুবক বলেন, 'মূলত এখানে প্রকৃতি দর্শন ও ছবি তোলার জন্য আসা। এখানে অনেক মানুষ দেখতে আসতেছে ভালো কিন্তু অনেকে কাঁশফুলের সৌন্দর্য নষ্ট করছে । ফুল গুলো ছিড়ে ও ভাঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে এটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। কেউ যদি এমনটা না করে তাহলে এর সৌন্দর্য ভালো থাকবে।’

 

অনিক চন্দ্র বর্মন নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘এটি আমাদের ফারাবাড়ি বাজারের বামন শ্মশান ঘাটের পাশে অবস্থিত। এই কাশফুলটির কিছু দূরে আরেকটি  কাঁশফুল হয়েছিল সেটি সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ভাইরাল হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে নদীর পাড়ি বেড়ে যাওয়ায় সেটি নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েদিনের মধ্য দেখি এখানেও কাশফুলে ভরপুর হয়ে সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। তাই অনেক দূরদূরান্ত থেকে এখানে মানুষ ছুটে আসছেন। আগে আমাদের এই দিকে আগে এমন কাঁশফুল হতো না ও দেখা যেত না। এবার নদী খননের ফলে নদীর ধারে বালি গুলো ফেলায় এখানে অনেক কাঁশবন জন্মায়।’

 

তিনি দর্শনার্থীদের অনুরোধ করে আরও বলেন, ‘আমি অনুরোধ করছি যারা এখানে দেখতে ও ঘুরতে আসতেছেন আপনারা এই ফুলগুলো না ছিড়ে প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্যকে রক্ষা করুন।’

  

সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন বলেন, ‘এটি সরকারি জায়গা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা এটিকে রক্ষার চেষ্টা করবো। কাশবনটি যাতে নষ্ট না হয় বা কেউ কেটে নিয়ে যেতে না পরে।’ 

 

আনোয়ার হোসেন আকাশ/এমআইসি 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে