Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সরকারি গাছে ‘সোফা-চেয়ার’ বানিয়ে জামাই’র বাসায় পাঠালেন কর্মকর্তা


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩, ০৯:৪৬ এএম
সরকারি গাছে ‘সোফা-চেয়ার’ বানিয়ে জামাই’র বাসায় পাঠালেন কর্মকর্তা

সরকারি গাছ কেটে আসবাবপত্র বানানোর পর তা জামাইয়ের বাসায় পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওইসব আসবাবপত্র সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বছরের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন ড. জামাল উদ্দিন। তবে নির্ধারিত গেস্ট হাউজে না উঠে তিনি অফিসেরই একটি ভবনে বসবাস শুরু করেন।

মাসখানেক আগে অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষের পেছন দিকের দুটি জাম গাছ ও দুটি মেহগনি গাছ কেটে বাসভবনের পাশের একটি ঘরে রেখে দেন জামাল উদ্দিন। ওই চারটি গাছের দাম প্রায় ৪ লাখ টাকার বেশি হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। পরে ম্যাকানিক সুরত আলী ও গাড়িচালক আমিনুল ইসলামকে দিয়ে পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে মিস্ত্রী এনে সেগুলো দিয়ে খাট, সোফা সেট, টি-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করেন।

Corruption

সবশেষ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ওইসব আসবাবপত্র ম্যাকানিক সুরত আলীর মাধ্যমে ভ্যানযোগে সুন্দরবন কুরিয়ারে করে জামাই সাইফুল ইসলামের ঢাকার শ্যামলীর ঠিকানায় পাঠান। যেখানে বুকিং স্লিপে প্রেরক হিসেবে ড. জামাল উদ্দিনের নাম লেখা হয়েছে। আর এতে বুকিং খরচ নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৭০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছাড়াও স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, কোনোপ্রকার টেন্ডার ছাড়াই সরকারি গাছ কাটার ব্যাপারে উপপরিচালক ড. জামাল উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এর কৈফিয়ত আপনাদের কাছে দেব না। প্রশ্ন করার অধিকার আপনাদের কে দিল? এটা আপনাদের এখতিয়ারে পড়ে না।

এদিকে, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সাতক্ষীরা শাখা সূত্রে জানা গেছে- কৃষিবিদ ড. জামাল উদ্দিন শ্যামলীর ঠিকানায় যেসব আসবাবপত্র বুকিং দিয়েছেন তার মধ্যে একটি খাট, একটি সোফাসেট, একটি সাইড বক্স ও একটি টি-টেবিল রয়েছে।

Corruption

অন্যদিকে, কৃষি বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, এখনো জামাল উদ্দীনের বাসায় একটি বক্স খাট ছাড়াও তিনটি সোফা সেট ও কয়েকটি টেবিল রয়েছে। যেগুলো পর্যায়ক্রমে ঢাকায় পাঠাতেন তিনি।

এ ব্যাপারে কথা হলে ড. জামাল উদ্দিনের গাড়িচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, স্যারের নির্দেশেই সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ওইসব আসবাবপত্র বুকিং দিয়েছি।

একইভাবে অধিদফতরের ম্যাকানিক সুরত আলী বলেন, উপপরিচালক স্যারের নির্দেশে খামারবাড়ি থেকে ভ্যানে করে ওইসব আসবাবপত্র সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে পৌঁছে দিয়েছি। তবে আসবাবপত্র তৈরির জন্য পাটকেলঘাটা থেকে কোন মিস্ত্রী কাজ করেছিল, তার নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

Corruption

অভিযোগের বিষয়ে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘অফিসের গাছের কিছু ডাল দীর্ঘদিন পড়ে ছিল। সেগুলোর সঙ্গে আরও কিছু গাছ কিনে অফিসের জন্য কিছু আসবাবপত্র বানানো হয়েছিল। কিন্তু নতুন মেয়ের জামাই এসে সেগুলো পছন্দ করায় তারা দাম দিয়ে সেগুলো কিনে নিয়েছে।’

তবে প্রকারান্তরে তিনি সবকিছু স্বীকার করে বলেন, ‘ভুল হয়ে গেছে। এটা এতটা স্পর্শকাতর হবে বুঝতে পারেনি।’

যদিও জামাল উদ্দিনের অভিযোগ- ‘অফিসের কিছু স্টাফ দীর্ঘদিন ছুটিতে থাকত, অফিস করত না। আমি যোগদান করার পর সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেছে। এটি ওই চক্রান্তেরই অংশ।’

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে