দুর্গাপুরে পুলিশ- বিএনপি সংঘর্ষে আরও ৬ নেতাকর্মী গ্রেফতার

---

আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোণা প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩, ০৫:৫৪ পিএম

নেত্রকোনাঃ নেত্রকোনা দুর্গাপুর স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় আরও ৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাত দুইটার দিকে স্ব-স্ব বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আব্দুস সালাম, হাজী মো. ঈমাম হোসেন, স্বপন মিয়া, আব্দুল বারেক, সোহাগ খন্দকার, আমিনুল ইসলাম। 

এর আগে, রোবাবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাতজন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মোট ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। রোববার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও নাশকতা আইনে বিএনপির ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৫০-২০০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যানারসহ মিছিল করে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় প্রায় ৫০-৬০ জন গুরুতর আহত হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইমাম হোসেন আবু চাঁন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আতাউর রহমান ফরিদ, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য মইনুল হাসান, আরমান হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

পরবর্তীতে রোববার মধ্যরাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আব্দুস সালাম, হাজী মো. ঈমাম হোসেন, স্বপন মিয়া, আব্দুল বারেক, সোহাগ খন্দকার, আমিনুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এনিয়ে মোট ১৩ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে দুর্গাপুর থানা পুলিশ।
 
এ নিয়ে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল আলম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরশহরের কাচারি মোড় এলাকা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যানার নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যেতে চাইলে, ব্যানার নিয়ে যেতে বাঁধা দেয় পুলিশ, পরে ছাত্রদল-যুবদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতন্ডতায় জড়িয়ে পড়ে। অল্পক্ষণের মধ্যে পুলিশ আমাদের ওপর চড়াও হয়ে ধাওয়া শুরু করে এবং আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপির ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে রোববার মধ্যরাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আরও ৬ নেতাকর্মীকে আটক করে। বর্তমানে আমাদের সকল নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় পুলিশি বাঁধা ও নেতাকর্মীদের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। তিনি আটককৃত নেতাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

এদিকে এ ঘটনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।  অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

অপরদিকে এ ঘটনায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক ও সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

এসএস