Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইবি ছাত্রকে হলের সিট থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে দিল ছাত্রলীগকর্মীরা


আগামী নিউজ | ইবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৩, ০৯:২৬ পিএম
ইবি ছাত্রকে হলের সিট থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে দিল ছাত্রলীগকর্মীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক আবাসিক ছাত্রকে তার বৈধ কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (১লা এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীও ওই ছাত্র। ভুক্তভোগী মাহাদী হাসান ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের। তিনি হলের ৪২৮ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র।

অভিযুক্তরা হলেন, বাংলা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তরুন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু। তারা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে, ভুক্তভোগী তার আবাসিকতাপ্রাপ্ত কক্ষে বিগত কিছুদিন যাবত অবস্থান করছিলেন। গত ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ কর্মী সিদ্দিক এর মাধ্যমে তরুন, ফাহিম ফয়সাল ও রাজু তাকে হলে আসতে বলে। এসময় ভুক্তভোগী ইফতার শেষ করে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ফোন পেয়ে সে দ্রুত হলে চলে আসে। সেখানে পৌঁছে দেখতে পাই তার বই খাতা, তোশক, বালিস রুমের বাইরে করিডোরে পড়ে আছে। এসময় তাকে ৪২৭ নং কক্ষে যেতে বলা হয়। সেখানে আগে থেকেই অভিযুক্ত তরুন, ফাহিম, রাজুসহ আরও একজন উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়,  ভুক্তভোগী মাহাদী সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করলে প্রথমে ফাহিম বলে তুই মাহাদী? ভুক্তভোগী তখন ‘হ্যা’ বলে। তারপর অভিযুক্তরা বলেন, তুই কোন কক্ষে থাকিস? ভুক্তভোগী বলেন, ৪২৮ আমার আবাসিক কক্ষ আমি ঐ কক্ষেই আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছি। তখন অভিযুক্ত ফাহিম বলেন, আগে কোথায় ছিলি? সে (ভুক্তভোগী) বলেন, ৩০৮ নং-এ মেহেদী হাসান তানভীর-এর অতিথী হিসেবে ছিলাম। এখন আমার কক্ষ (৪২৮) বরাদ্দ হইছে আমি এখানেই থাকব। সে (ভুক্তভোগী) এটা বলার সাথেই অভিযুক্ত রাজু তাকে ধমক দিয়ে বলে তুই কে? তোকে আগে কখনও হলে দেখিনিতো। কে তোরে হলে তুলেছে? আর ঐসব আবাসিকতার কাহিনী বাদ দে, আমরা যা বলবো হলে তাই হবে। তখন অভিযুক্ত তরুন বলেন, আমারে চিনিস তুই, আমি কে? এখনও ভালোই ভালোই ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা ৩০৮ এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমরা জানিনা। এইটা বলার পর ইতোমধ্যে রুমের বাইরে করিডোরে ফেলে দেয়া ভুক্তভোগীর বই, খাতা, তোশক, বালিসসহ  প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলে এইখানে তোর সবকিছু আছে নিয়ে চলে যাস।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফাহিম ফয়সাল বলেন, আমরা তাকে হল থেকে বের করিনি। বরং মাহাদী অন্য একজনের আবাসিক সিটে ৩০৮ নং রুমে প্রায় দুইবছর ধরে থাকে। ওই আবাসিক সিটের ছেলেকে যখন ৪২৮ নং কক্ষে দেওয়া হয় তখন সে ওই কক্ষের আবাসিকত্ব দাবি করে। তাকে বলা হয়েছে তুমি তো ৩০৮ এ থাকো। এখন এখানে কেন? তুমি ওখানেই থাকো বলে তার জিনিস নিয়ে চলে যেতে বলা হয়।

অভিযুক্ত রাজু বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

এদিকে আরেক অভিযুক্ত তরুনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, অভিযোগকারীর সিট থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ মিথ্যা। কারণ  সে ওই সিটে ওঠেই নি। আর আমরা কোন আবাসিক ছাত্রকে হলে উঠতে বাঁধা দেইনি। আমরা সবসময় বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে সাহায্য করি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ডক্টর ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে হল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।

মুতাছিম বিল্লাহ রিয়াদ/এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে