Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ঈদে মিলাদুন্নবী ও বর্তমান প্রেক্ষাপট


আগামী নিউজ | মাকসুদুল হক (সেলিম শাহ) প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩, ১০:১৮ পিএম
ঈদে মিলাদুন্নবী ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

ঢাকাঃ ইদানিংকালে বিশেষ করে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) সময় ঘনিয়ে আসলে বেদাত বেদাত শব্দে মোবাইল ধরতেও কেমন যানি হার্ট বিটটা সহজ সরল হয়ে যায়! 

যাঁর উছিলায় দুনিয়া দেখলেন; কুরআন পাইলেন আবার আখেরাতেও পাওয়ার ধান্দা খুঁজতাছেন, সেই নবী (সাঃ) শুভাগমনে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনে বেদাতের গন্ধ শোকতাছেন (!) হুজুর পাক (সাঃ) এর আগমনের দিন স্মরণে খুশি না হইয়া কোন জান্নাতে যাইবেন ???

নবী-রাসূলের জামানায় যা করেন নাই কিংবা করার নির্দেশ দেন নাই অথবা কোরআন-হাদিসে যাঁর দলিল নাই তাহাই বেদাত, তাই তো ?

সাদা মনে প্রশ্ন? আইচ্ছা,  ইজতেমা জায়েজ হলে, 
ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)
বেদাত কেন❓

আবু-জাহেল, ওহাব নজদী ও ইয়াজীদের প্রেতাত্বারা বলে থাকেন, নবী-রাসূলের জামানায় সাহাবা একরাম ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালন করেন নাই (!) তাই এগুলো বেদা'ত (?)। 

সাদা মনে খাটি বাংলায় প্রশ্ন? আচ্ছা, নবী-সাহাবাদের সময়কালে কেউ তো বিমানে চড়েন নাই; কেউ চড়তেও বলেন নাই, তাহলে বিমানে চড়া কি বেদাত হবে না??

ওনাদের জামানায় তো কেউ ছবি তোলে নাই, গলায় ছবি ঝুলিয়ে (ডান্ডি কার্ড) তো কেউ মক্কা-মদিনায় হজ্ব করতে যান নাই; ছবি তোলা আর ঝুলাই রাখা তো হারাম, তাইলে ফেরেশতা থাকে না (মোল্লারা কয়, আমি কই না); সেক্ষেত্রে হারাম জিনিস গলায় টাঙালে হজ্ব হবে তো? এগুলো কি বেদাত হবে না???

মসজিদ হতে এসি, ফ্যান ও বাতি খুলে ফেলা উচিত কারন, এত আরামে সাহাবীরা নামাজ পড়েনি! এমনকি মসজিদে মাইক পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়নি (!)
এটা বিদাত নয় কি??

সাহাবাদের জামানায় তো কেউ মোবাইল টেপে নাই; তাইলে এখন এইটা টেপলে বেদাত হবে না? 

নবী-রাসূলের জামানায় যা করা হয় নাই, তাহাই বেদাত (!) তাহলে ওনাদের আমলে তো কেউ ফেইসবুক, what'sapp,  messenger,  Viber, Instagram, Skype,  Twitter, YouTube ব্যবহার করেন নাই, কিংবা ব্যবহারের ওসিয়ত ও করেন নাই (!)  তাইলে এগুলো বেদাত হবে না??

আমার বাপের লগে আমার মায়ের বিয়া হইবো এইটা তো ওনারা লেইখা যান নাই কিংবা কাউকে বইলা যাওয়ার সময় পান নাই; ওনাদের শাদী মোবারক তো বেদাতের আওতাভুক্ত। তাইলে আমার জন্মটাত বেদাত হবে না? যে বাপ-মা'য় দয়া কইরা আমারে জন্ম দিয়া আমারে পৃথিবী চিনাইছে, এখন যদি কেউ বলে ওইডা যে তোর বাপ-মা তাঁর দলিল কি ? ঈদে মিলাদুন্নবীর দলিল যেমনে মোল্লারা, কাউয়া-কানার মতো খোঁজে! 
আচ্ছা কন তো ? আপনি যে আপনার বাবার সন্তান তার প্রমাণ কি? কি দলিল দেখাইবেন ? 

ফিদাকা আবি ও উম্মি ইয়া রাসুলাল্লাহ! 
রাসুলে আরাবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কলিজার টুকরা  আমাদের জান, আমাদের ঈমান। 

হুজুর (সাঃ) কে ভালোবাসা একজন মুসলমানের (আত্মসমর্পণকারী) ঈমানের অংশ। মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আজমত ও মর্যাদার কথা বর্ণনা করা তো আমাদের গোলামদের জন্য দুঃসাহস বটে!

হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আজমত ও শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা ও মাকাম আমি গোলাম কী বর্ণনা করব? হুজুরের শানে দরুদ পড়তে পারাটাই তো আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের সৌভাগ্য ও নেয়ামত! উম্মতের পক্ষে কি হুজুরে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আজমত ও শ্রেষ্ঠত্ব, মাকাম ও মর্যাদা অনুধাবন করা কিংবা বর্ণনা করা সম্ভব? এর উত্তর হলো কস্মিনকালেও নয়!

স্বয়ং রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলতেছেন;

“ওমা আরসালনাকা ইল্লা রহমাতাল্লিল আলামিন” – আমি আপনাকে বিশ্বজগতের রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি (আম্বিয়া-১০৭)

সেখানে ওহাবী'র গুস্টি কয় কি ? ঈদে মিলাদুন্নবী "বেদাত"

নবীজীর শুভাগমনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত আর কি হতে পারে? ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালন করা সুন্নতে রাসূল নয়; আজমতে রাসূল। বিদা'আত খুঁজতে হলে সুন্নতের বিপরীতে খুজতে হবে আজমতে রাসূল, শাণে রাসূলে নয়। নবী-প্রেম দলিলে বিচার করা যায়? এটা মুমিনের অন্তরের খোরাক।

চিল্লাইয়া-চিল্লাইয়া, ঈদে মিলাদুন্নবী "বেদাত বেদাত"  বইলা মুখের ৩২ খানা সকল "দাঁত" বাইর কইরা নবীজীর "সাফায়াত" আশা করবেন! রহমাতাল্লি ল আলামিনের রহমত আশা করবেন (?) আল্লাহ্'র "হেদায়েত" নসীবে জুটবে তো ??? আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ করতে হবে। ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার নবী (সা.)-এর অনুসরণ করো; তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করবেন।’ (আলে ইমরান: ৩১)।

ভাই, ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) নিয়ে আপনার মন মসলায়, ফতুয়ায়, আর বেদাতে ভরপুর থাকলে থাকুক তাঁতে ঈমানদার নবীপ্রেমীদের মনে কোন আক্ষেপ নাই। আপনার পন্কিলতায় পরিপূর্ণ মন চায় না,  আপনি পালন কইরেন না ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ), তাই বলে নবীপ্রেমী আশেকদের হৃদয়ের খোরাক "ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করে ইহকাল-পরকাল সব জাতীয় কাল, স্থায়ীভাবে খুয়াইয়েন না!  হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন।’ -(আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)

বেশি চুলকাইয়েন না, চুলকানীর মজা কিন্তু রক্ত বাইর হওয়ার আগ পর্যন্ত! রক্ত বাহির হইয়া গেলে আর একটা খোঁচা দিতে কিন্তু মন চাইবেনা! তাই সময় থাকতেই হুঁশ ফেরানোটাই অতি মঙ্গল। 

দোহাই লাগে ভাই, পায়ে পারা দিয়া বিবাদ সৃষ্টি করতে আইসেন না; নবীজীর মোহব্বত অন্তরে ধারণ না কইরা যদি আপনি মোল্লার জান্নাতে যাইতে পারেন; আমার কোন মাথাব্যথা নাই; জান্নাত-জাহান্নাম আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি না! দয়া কইরা নিজেরে, স্বেচ্ছায় অজ্ঞানতায়, নবীজীর উম্মতের তালিকা থেকে খারিজ হইয়া যাইয়েন না! ইচ্ছা কইরা কপালে শণি ডাইক্কা আইনেন না please.

শাহ্ মোঃ মাকসুদুল হক (সেলিম শাহ্)

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে