Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দুপচাঁচিয়ায় ধাপহাট-কালিতলা সড়কে জনভোগান্তি চরমে


আগামী নিউজ | মতিউর রহমান, দুপচাঁচিয়া ( বগুড়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১, ১১:৫০ এএম
দুপচাঁচিয়ায় ধাপহাট-কালিতলা সড়কে জনভোগান্তি চরমে

ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপহাট-কালিতলা সড়কে খানা খন্দকে বৃষ্টির পানি জমে  বেড়েছে জনদূর্ভোগ। সড়কটিতে  কার্পেটিং কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছের প্রায় তিন বছর আগে। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও নির্মানাধীন এই সড়কে শুধু মাটি কেটে বিছিয়ে রাখা হয়েছে খোয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বগুড়া ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে রাজশাহী বিভাগীয় প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে দুপচাঁচিয়া উপজেলার গুনাহার থেকে ফুলতলা (দাসরাহাট) পর্যন্ত ও ধাপহাট থেকে কালিতলা সড়কটি কার্পেটিং দ্বারা উনয়নের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজের  স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান মন্টু কাজটির ঠিকাদার নির্বাচিত হন।

৩০ মে ২০১৯ ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের তারিখ নির্ধারিত হয়। প্রায় দুই বছর পূর্বে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর নির্বাচিত ঠিকাদার ধাপহাট-কালিতলা সড়কের কার্পেটিং কাজ শুরু করার লক্ষ্য প্রাথমিক পর্যায়ে ইট তুলে নেয় এবং উপরিভাগের মাটি কেঁটে বালু ভরাট করে।

দীর্ঘ সময়ে  কাজ এগিয়েছে এ পর্যন্তই। প্রায় ১ বছর ১০ মাস সড়কের কাজ এভাবে ফেলে রাখায় বিভিন্ন খানা খন্দকের সষ্টি হয়েছে। স্থানীয়  জনগণ বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করলে  গত বছর রাস্তাটির উপর ইটের খোয়া বিছিয়ে দেয় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান । এরপর থেকে আবারও বন্ধ করে রেখেছে ওই সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ।

দীর্ঘদিন কাজ না হওয়ায় খোয়াগুলো উঠে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানের খোয়া আর রাস্তার মাটি মিশে কর্দমাক্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি নামলেই গর্তগুলোতে পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে থাকছে। গত তিন বছর যাবত বর্ষা মৌসুমে আটগ্রাম বেলহালী সহ আশপাশের আরা ৬ থেকে ৭ টি গ্রামের মানুষ চলাচল চরম দূর্ভাগে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেহাল সড়কের কাদামাটিতে নাজেহাল হচ্ছে পথচারীরা। প্রায় এক কিলোমিটার ওই সড়কের খানা খন্দকের গর্তে পানি জমে কর্দামাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পথচারীরা চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তার এজিংয়ের (কিনারা) ইটগুলো তুলে রাস্তায় বিছিয়ে যাতায়াত করার চেষ্টা করছে। ওই সড়কেই  ভটভটি, অটোভ্যান চলছে কর্দমাক্ত রাস্তার সাথে যুদ্ধ করে।

এ ব্যাপারে ভোগান্তির শিকার পথচারীরা আগামী নিউজকে  জানায়, আগে এইচবিবি (ইট বিছানো)  এই সড়কটিতে  বরং  এলাকাবাসী বর্ষা মৌসুমেও বেশ ভালভাবে চলাচল করতে পারত। কার্পেটিং এর জন্য ইটগুলো তুলে নেওয়ায় ঠিকাদার এলাকাবাসী কে দূর্ভোগে ফেলেছে।

স্থানীয় চামরুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ্জাহান আলী আগামী নিউজকে জানায়, ঠিকাদারের উদাসীনতা ও খামখেয়ালীর কারণে প্রায় ৭টি গ্রামের মানুষদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তিপূর্ণ সড়কের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলী কে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।

উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল আলম জানায়,  নির্বাচিত ঠিকাদারকে নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করার জন্য বহুবার লিখিত পত্রসহ মৌখিক ভাবে তাগাদা প্রদান করা হয়েছে। এরপরেও ঠিকাদার গড়িমসি করে কাজটি করা থেকে বিরতই থাকেন।

তিনি আরও জানান, ওই ঠিকাদারের কাজের দরপত্র বাতিল চেয়ে সুপারিশ সহ পত্র প্ররণ করা হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট। ঠিকাদার পুনরায়  কাজের সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেন। আগামী ৩০ জুন তার কাজ বাস্তবায়নের শেষ তারিখ রয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের মাঝেও কাজ করতে পারবেন কি না তা নিয়েও আশংকা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচিত ঠিকাদার মেসার্স সুমন ইটারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান মন্টুর সাথে যোগাযোগ করলে আগামী নিউজ কে জানায়, ধাপহাট-কালিতলা সড়কে কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ করতে পারছেন না। ইতিমধ্যই তিনি এই প্রকল্পের সড়ক দু'টিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার কাজ করেছেন। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে বাঁকি কাজ করতে পারছেন না। জনদূর্ভোগ লাঘবে অল্প দিনের মধ্যই ধাপহাট-কালিতলা সড়কের বাকি কাজ দ্রুতই বাস্তবায়ন করবেন বলেও জানান তিনি।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে