খাগড়াছড়ি: উপমহাদেশের সর্বকনিষ্ঠ রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী বিয়ে করেছেন। কনে উখেংচিং মারমা।
বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মহা ধুমধামে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের জিরো মাইল এলাকায় মং রাজ বাড়িতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পরপরই উখেংচিংকে রাণী হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়। এই বিয়ে ঘিরে জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে আর রাজবাড়ীও সেজেছে বর্ণিল রঙ্গে।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি)দুপুরে বিয়ে পরবর্তী প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হবে। এই অনুষ্ঠানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকে খাগড়াছড়ি এসে পৌঁছেছেন।
রাণী উখেংচিং মারমা পানখাইয়া পাড়া এলাকার অংক্যজাই মারমা ও সুইনাইচিং মারমার মেয়ে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন’র পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট থেকে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। আমেরিকার মিনেসোটা ইউনিভার্সিটি থেকে ফেলোশিপ শেষে বর্তমানে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের আওতায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করছেন।
উখেংচিং’র বাবা অংক্যজাই মারমা এবং মা সুইনাইচিং মারমা চাকরি থেকে বর্তমানে তারা অবসরে আছেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে রাণী উখেংচিং বড়।
২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় রাজা পাইহ্লাপ্রু চৌধুরী’র মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১৭ জানুয়ারী অল্প বয়সে রাজ্যভার গ্রহণ করেন বর্তমান রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী। তিনি ঢাকা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি কোর্স করেন। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী সবার ছোট। দীঘিনালা, মহালছড়ি ও লক্ষীছড়ি উপজেলার কিছু অংশ ব্যতিরেকে খাগড়াছড়ি পুরো জেলার আওতাধীন মং সার্কেল।
প্রাপ্ততথ্য মতে, ১৮৭০ সালে মং সার্কেল, চাকমা সার্কেল ও বোমাং সার্কেল নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৩টি পৃথক রাজা প্রথার সূচনা হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর পরলোক গমন করার পর তার স্ত্রী রাণী নীহার দেবী রাজ্যভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে তিনিও ১৯৯১ সালে পরলোক গমন করেন।
পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে মং রাজার মংপ্রু সাইনের ভ্রাতুষ্পুত্র জেলা তথ্য কর্মকর্তা পাইহ্লাপ্রু চৌধুরী রাজ্য পরিচালনার দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে বিদেশে একটি সফর শেষে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় রাজা পাইহ্লাপ্রু চৌধুরী মারা যান। এর পরবর্তীতে কম বয়সী পুত্র সাচিংপ্রু চৌধুরী রাজ সিংহাসন আরোহণ করেন।
আগামীনিউজ/হাসি