Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ফের বাড়ছে তিস্তার পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৩, ১২:৪৯ পিএম
ফের বাড়ছে তিস্তার পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট

ঢাকাঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে আবারও বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (৩০ জুন) সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের কর্মকর্তারা জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। এর আগে গত ১৯ জুন তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। তারপর ২০ জুন থেকে পানি কমতে শুরু করে স্বাভাবিক হলেও আজ আবার বেড়েছে।

এদিকে, ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীপাড়ের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি বাড়লেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কমাতে মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঈনুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। স্থানীয়দের সতর্ক করার জন্য আমরা মাইকিং করেছি যাতে কেউ নদীর তীরে না থাকে।

ডিমলার ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, কয়েক সপ্তাহ থেকে আমরা অনেক সতর্ক আছি। পানি বাড়লে নদী তীরের কিছু বাড়িতে পানি ওঠে। আমরা তাদের সতর্ক থাকার জন্য মাইকিং করেছি। সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছি।

এদিকে পানি বাড়া-কমার কারণে তিস্তা নদীর উজানে বেড়েছে ভাঙন। ভাঙনে নদীর পেটে চলে গেছে ফসলি জমি, বসতভিটা। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা মুন্সিপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর ডান তীরে জ্যামিতিক হারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙছে ফসলি জমি, বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পৈতৃক ভিটে-মাটি। হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক বাড়িঘর, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। 

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের ওমর আলী বলেন, প্রায় ৭ বছরে তিন বার ভাঙতে হয়েছে বসতভিটা প্রথম ভিটা কেনা হলেও পরে ঘর বাঁধতে হয়েছে অন্যের জমিতে। এবারও নদী ঘরের কাছে চলে এসেছে, দুই-একদিনের মধ্যে এখান থেকে বাড়িঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। কিন্তু কোথায় নতুন করে ঘর উঠাবো সেরকম তো জায়গা পাচ্ছি না। আমার তো সামর্থ্যও নাই জমি কেনার।

একই গ্রামের নুর আলম বলেন, এবারের বর্ষায় উজান থেকে আসা পানিতে যে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে তাতে প্রায় ১০ থেকে ১২ একর আবাদি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও বসতভিটা হারাতে হয়েছে আলী আকবর, ওমর আলী, আব্দুল কাদের ও জামিরন নেছাকে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যেই রয়েছে। আজ সকালে আবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুপুর থেকে কমতে পারে এমন পূর্বাভাস রয়েছে। পানি বাড়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছোটখাতা এলাকার উজানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। যদি খুব ভাঙন দেখা দেয় আমরা প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু বর্ষাকাল তিস্তা নদীর পানি সামনে আরও বাড়তে পারে। পানি বাড়বে এ রকম পূর্বাভাস রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে