Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আরে, উনি তো আমাদের ডিসি ছিলেন’


আগামী নিউজ | মহিউদ্দিন মখদুমী প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৫:২০ পিএম
আরে, উনি তো আমাদের ডিসি ছিলেন’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার স্যারে প্রতিটি লেখা আমি পাঠ করি। বলা যায় এটি আমার রুটিন। কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় চোখ রাখি স্যারের লেখা আসছে কিনা দেখার জন্য। তিনি তাঁর বিভিন্ন লেখায় বুরোক্রেসি বা আমলাতন্ত্র, আমলা ও জনপ্রতিনিধির সম্পর্ক, হঠাৎ বদলি হওয়া চাঁদপুরের ডিসি, লাঞ্চিত হওয়া বরিশালের ইউএনও, চাকুরীচ্যুত হওয়া দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে নিয়ে চুম্বক শব্দে দারুন লেখা লিখে লিখেছিলেন। যা পাঠ করে অনেক অজানা দিগন্ত খুলে গিয়েছিল। আমি বুরোক্রেসি শব্দটি জানতাম না। স্যারের লেখায় বুরোক্রেসি বা আমলাতন্ত্র শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর টানা দায়িত্ব পালন করেছেন। পদোন্নতি পেয়ে চলে যাচ্ছেন। দায়িত্ব পালন কালে জনবান্ধব হয়ে উঠার চেষ্ঠা ছিল তাঁর। খুব সাধারণ টাইপের মানুষ তিনি। সময়কে কাজে লাগাতেন সময়ের সাথে। তাঁর অনেক গুন ও সরকারী নির্দেশনায় রংপুরকে সমৃদ্ধ করার নানা চিন্তা ও কাজের কথা সাবলিল ভাবে বলা যায়। আমি সেসব কথা বলতে চাই না এ কারণে যে, জেলা প্রশাসক যায় জেলা প্রশাসক আসে। আমরা থেকে যাই এবং মিলিয়ে দেখি পুরনোর সাথে নতুনের সাদৃশ্য কতটা হয়।

রংপুর বিভাগীয় জেলা ও শহর। তাই অনেক দপ্তরের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সাংবাদিকরা অনেকেই হয়তো জানি না রংপুর উন্নয়নে কতটি প্রকল্প চলমান রয়েছে? অথবা আঞ্চলিক সমবায় ইনস্টিটিউট, এসএফডিএফ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিসটি রংপুরের কোথায়? তাদের কাজ কি? না জানার অনেক সমস্যা। কিন্তু রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান সব খবর রাখতেন। তাঁর অধিনস্ত সব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদেহীর মধ্যে রাখতে পেরেছিলেন। আমি তথ্য নেয়ার জন্য যেসব অফিসে গিয়েছি নানা প্রসঙ্গে তারা জেলা প্রশাসক আসিব আহসান স্যারের প্রসঙ্গ এনেছিলেন। আমি তখন আরো শক্ত করে চেপে ধরার জন্য প্রশ্নবান ছুঁড়ে দিতাম। জবাব নিতাম, সমীক্ষা করতাম, মাঠে গিয়ে মিলিয়ে দেখতাম, কর্মচারীদের সাথে গোপন সখ্যতা গড়ে তুলে তথ্য নিতাম। এভাবে গত তিন বছরে আমি জেলা প্রশাসক আসিব আহসান স্যারের বক্তব্য নিয়ে ১৪৪টি রিপোর্ট করেছি। কোনটি অনিয়মের কোনটি পজেটিভ কাজের।

আলী ইমাম মজুমদার স্যার একটি লেখায় বলেছিলেন, “আমলাদের মধ্যে অনেক জনবান্ধব ভালো কর্মকর্তা আছেন। তাঁদের সব ভালো কাজ ম্লান করে দেয় অল্প কিছু কর্মকর্তা। এঁরা সংখ্যায় কম হলেও যে কোনো কারণে তাঁরা প্রভাবশালী। অনেক ক্ষেত্রে রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুঃসময়ে যাঁরা জনবান্ধব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তাঁদের উপযুক্ত স্বীকৃতি একটি সময়ের দাবি। সে স্বীকৃতি বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার একটি আধা সরকারি পত্র ও হতে পারে।”

রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান স্যার, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা এ জন্য যে, আপনি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকে আমলাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেননি। রাষ্ট্র ও জনগণের সেবক হয়ে জনবান্ধব হয়ে উঠেছিলেন। আমি বিশ্বাস করি সেবা দানের এই মহান ইচ্ছা আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। আমি যেন দেখতে পাচ্ছি-আপনার জন্য অপেক্ষা করছে অনেক স্বীকৃতি-সম্মান। আপনার যে কোন প্রাপ্তি কিংবা স্বীকৃতি দূর থেকে আমাদের আনন্দ দেবে। আপনি স্বীকৃতি বা পদোন্নতি পেলে আমরা চিৎকার করে বলব ‘ আরে উনি তো আমাদের ডিসি ছিলেন’। আমাদের তৃপ্তি এতটুকুই। 

সাংবাদিক ও লেখক
২৮-১১-২০২২

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে