Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ডোমারে জীববৈচিত্র রক্ষায় ইউরিয়া সারের বিকল্প ধৈষ্ণা গাছের চাষ


আগামী নিউজ | জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২১, ০১:৫৩ পিএম
ডোমারে জীববৈচিত্র রক্ষায় ইউরিয়া সারের বিকল্প ধৈষ্ণা গাছের চাষ

ছবি : আগামী নিউজ

উত্তরাঞ্চলঃ পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষায় নীলফামারীর ডোমারে ধৈঞ্চা গাছের চাষ হচ্ছে। এটি করা হচ্ছে বিএডিসি’র (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) ভিত্তি বীজআলু উৎপাদন খামারে। এ বছর ৩৫০ একর জমিতে চাষ করা হচ্ছে ধৈঞ্চা।

ডোমার ভিত্তি বীজআলু উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু তালেব মিঞা জানান, মওসুমে বীজআলু উত্তোলনের পর জমিতে ধৈঞ্চার বীজ বপন করা হয়েছে। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি, সুষম পুষ্টির যোগান, ভূমির ক্ষয়রোধ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষে চাষ করা হচ্ছে ধৈঞ্চার। গাছের জীবনচক্র ঠিক নিয়মে সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ১৭টি খাদ্য উপাদান প্রয়োজন। গাছ এসব উপাদান বাতাস ও মাটি থেকে নিয়ে পাতায় খাদ্য তৈরি করে। মাটিতে থাকা খনিজ ও জৈব পদার্থ খাদ্য উপাদানের প্রাথমিক উৎস। সার প্রয়োগ করে জমিতে এসব খাবারের যোগান দেয়া হয়। 

আশানুরুপ ফসলের ফলন পেতে এবং মাটিকে উৎপাদনক্ষম রাখতে বর্তমানে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত রাসায়নিক সারের ব্যবহারের ফলে মাটির স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে জীববৈচিত্র। 

দেশের ভৌগলিক অবস্থানের তুলনায় অত্যাধিক মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে ভূমির ওপরেই মূল ভরসা। সেজন্য জমির উর্বরা শক্তি অক্ষুন্ন রাখতেই কৃষি বিভাগকে নিতে হচ্ছে নতুন নতুন পরিকল্পনা। তারই আলোকে করা হচ্ছে ধৈঞ্চার চাষ। ধৈঞ্চা মাটির উর্বরতা ও ভৌত গুণাবলির উন্নতি সাধন করে। এটির মূল মাটির গভীরে যাওয়ায় পুষ্টি শোষন করে মাটির উপরিভাগে আনে। মাটিতে গাছের পুষ্টি উপাদানকে সংরক্ষণ করে। একই সঙ্গে জমির আদ্রতা ও জোঁ অবস্থা সঠিক রাখে। এটেল মাটিকে নরম করে এবং বেলে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ক্ষয়রোধ করে। 

জৈব পদার্থ যোগের মাধ্যমে উপকারি অনুজীবের বংশ বিস্তার ও কার্যকারিতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। মাটির উপকারি জীবনের সক্রিয়তা বৃদ্ধির ফলে ব্যবহৃত সারের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। পুষ্টি উপাদান চুইয়ে যাওয়া কমায়। এ কারণে অপচয় কমে আসে। ধৈঞ্চা পচনশীল সময়ে উৎপাদিত জৈব এসিড মাটিতে ফসফরাসের প্রাপ্যতা বাড়িয়ে দেয়। 

৫৫ থেকে ৬০ দিন বয়সেই প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ টন সবুজ ধৈঞ্চা উৎপাদন হয়। এর ফলে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি নাইট্রোজেন সরবরাহ করে। যা ২২০ থেকে ২৬০ কেজি ইউরিয়া সারের সমান। 

কৃষিবিদ মো. আবু তালেব মিঞা আরো জানান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, মাটির স্বাস্থ্যের সুগঠন, চাষের স্থিতিশীলতা, জমির জীবনী শক্তির পুনরুদ্ধার, কাঙ্খিত উৎপাদন, শস্যের মান রক্ষা এবং জৈব কৃষির বাস্তবায়নে চাষিদের জৈব সার প্রয়োগের বিকল্প নেই। এই সারের সহজ উৎস জৈব উপাদান। বর্তমান বিশ্বে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ জোরদার হচ্ছে। এ জন্য জৈব সারের ব্যবহার বেড়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে বিএডিসি ডোমারের ভিত্তি আলুবীজ উৎপাদন খামারে সবুজ সার তৈরিতে কাজ করছে। 

ধান গবেষণা কেন্দ্রের অবসরপ্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চীন দেশের কৃষকরা ফসলী জমিতে মানববর্জ্য সার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফসল ফলাচ্ছে পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে। যার ফলে অল্প জমিতে তারা অধিক ফসল অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। আমাদের দেশের কৃষকরাও তেমন করলে অর্গানিক ফসল মিলবে। মানুষও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পাবে।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে