Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বিশ্বজুড়ে নিরবে উদযাপিত হলো মুজিব শতবর্ষ


আগামী নিউজ | মো.ইয়াকুব আলী প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২০, ১০:০১ পিএম
বিশ্বজুড়ে নিরবে উদযাপিত হলো মুজিব শতবর্ষ

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যিনি বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করে গিয়িছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যার নাম শুনলেই এখানো বাঙ্গালিদের হৃদয়ে জেগে উঠে সংগ্রামী চেতনা। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ ছিল সে মহানায়কের শততম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে মহান এ নেতাকে সম্মান জানাতে দেশজুড়ে নেয়া হয় জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি। কিন্তু সকল প্রস্তুতি ফিকে  হয়ে যায় করোনাভাইরাস তাণ্ডবে। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে অবশেষে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে সব অনুষ্ঠান কাটাছাট করার সিদ্ধান্ত নিতে হয় ক্ষমতসীন আওমীলীগ সরকারকে।

এবার  ইউনেসকোভুক্ত বিশ্বের ১৯৫টি দেশে উদ্যাপন করা হয় জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত পালিত হবে মুজিববর্ষ । কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্টি উদ্ভূত পরিস্থিতে মুজিববর্ষের সকল অনুষ্ঠান স্থগিত রয়েছে। যা পরবর্তীতে উদযাপন করা হবে।  মহানায়কের জন্মশতবাষির্কী পালিত হয় নিরবে নিভৃতে।  

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও মুজিববর্ষের উদযাপিত সেসব কর্মসূচি আগামী নিউজ.কম এর পাঠকেদের সামনে তুলে ধরা হলো-

১৭ মার্চ ৭টা ১০ মিনিটে মুজিববর্ষ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

১৭ মার্চ সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় সেনা,নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে ১৫ আগস্ট কাল রাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে সূরা ফাহেতা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।এদিন সেখানে দিনব্যাপী  শিশু সমাবেশ, গ্রন্থমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

দিনটিতে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ দেশের সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা আয়োজন করা হয। এতিম ও দুস্থদের মাঝে খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

১৭ মার্চ দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বনানী করাইল বস্তি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম প্রাঙ্গণে এতিম ও দুস্থদের মাঝে খাবার ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এদিন সারাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।

বঙ্গবন্ধু রাত ৮টার দিকে জন্ম নিয়েছিলেন। তাই ১৭ মার্চ ঠিক ৮টা বাজেই বর্ণিল আতশবাজির মধ্য দিয়ে শুরু হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভের পাশেই আয়োজন করা হয় চোখধাঁধানো আতশবাজি ও লেজার শোর। এই অনুষ্ঠানের নাম দেয়া হয়েছে ‘মুক্তির মহানায়ক’। এরপরই জাতীয় শিশু দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্বে ধারণ করা ভাষণটি বেতার এবং টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনকে ‘স্মরণীয় করে রাখাতে’ ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে   ১০০টি করে গাছের চারা রোপণ করা হয়।


শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়।


তিনি ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৪ সালে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ থেকে আইএ এবং একই কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে বিএ পাস করেন।


১৯৪৬ সালে তিনি ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সোহরাওয়ার্দীর একজন একনিষ্ঠ অনুসারী।


১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ১৯৪৯ সালের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হন।


তিনি ১৯৪৮ সালে জানুয়ারির ৪ তারিখে প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ যার মাধ্যমে তিনি একজন অন্যতম প্রধান ছাত্র নেতায় পরিণত হন।


বিভিন্ন আন্দোলনে তাঁর ভূমিকার জন্য ১৯৪৮ সাল থেকে  রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাভোগ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান।


হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করার পর শেখ মুজিবুর রহমান মুসলিম লীগ ছেড়ে দিয়ে এই নতুন দলে যোগ দেন এবং তাঁকে পূর্ব পাকিস্তান অংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।


এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ১৯৫৪র নির্বাচনে গোপালগঞ্জ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন শেখ মুজিব।

আগামী নিউজ/ ইয়াকুব/ডলি/নাঈম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে