Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৮


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২০, ১০:১১ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৮

সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে।
লালন কয় জেতের কী রূপ দেখলাম না এই নজরে॥
সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারী লোকের কী হয় বিধান
বামুন চিনি পৈতে প্রমাণ
বামনী চিনি কীসে রে॥
কেউ মালা কেউ তসবি গলে
তাই তে কি জাত ভিন্ন বলে
আসা কিংবা যাওয়ার কালে
জেতের চিহ্ন রয় কার রে॥
জগৎ জুড়ে জাতের কথা
লোকে গল্প করে যথাতথা
লালন বলে জাতের ফাতা
ডুবাইছি সাধবাজারে॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা: মানুষ নামের প্রাণীর সাথে প্রজ্ঞা একান্তভাবে বিজড়িত। প্রজ্ঞা আছে বলেই তাকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। মানুষের বাইরের আকৃতি বা প্রকৃতি তাকে মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করে না। তাই প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ। তাকে প্রজ্ঞা ব্যতিত অন্য কোনো বিশেষণে বিশেষায়িত করা সঠিক নয়। প্রজ্ঞাই তার মূল্যায়নের একমাত্র উপাদান। তাই প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিকে কোনো ধর্ম বা সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ত করা যায় না। সেই কারণে লালন সাঁইজীকে কোন সম্প্রদায় ভুক্ত তা প্রশ্ন করা বাতুলতা মাত্র।

লালন সাঁইজী তাই এই জাত নিয়ে নিজেই প্রশ্ন করেছেন। মুসলমান পুরুষকে খাতনা দিলে মুসলমান হয় কিন্তু সেই ক্ষেত্রে নারীকে তো খাতনা দেয়া হচ্ছে না। তেমনি বামুনকে পৈতা গলায় চেনা যায় কিন্তু বামুনীকে কীভাবে চেনা যায়। তাই লালন সাঁইজী বলেন, বাইরের আচার-ব্যবহার বা পোশাক-আশাকে এই মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ে ভেদাভেদ করা ঠিক নয়।

প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিরা মানবসমাজের সমাদৃত ব্যক্তি। তারা তাদের দেহগত বা বাইরের পোশাক-আশাকের দ্বারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে না। প্রকৃত পক্ষে তারা সমস্ত সম্প্রদায়েরে ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত প্রজ্ঞার দ্বারা নিজেদের মধ্যকার সেই মহাশক্তিকে আবিষ্কার করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই তারা সামাজিক ধর্মীয় জাতের ভিন্নতা তাদের প্রজ্ঞার দ্বারা ত্যাগ করেছেন। তাই তারা আজ সমাজে প্রজ্ঞাবান আলোকিত সত্তা। কোন সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তি নয়।

০৯-০৬-২০১৭ 

সকালঃ ৮:৩০

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে