Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৪৫


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:৫৯ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৪৫

গোঁসাই ভাব এমনি ধারা
আছে সুধা শাস্ত্রে যার প্রমাণ আচার
শুনলে জীবের কর্ম সারা॥
যে জন মরার সঙ্গে মরে
ভাবের সাগরে
ডুবতে যদি পারে সুরসিক তারা॥
দুগ্ধে বারিতে মিশাল সদা
মন্থন দন্ডে করে আলাদা আলাদা
তেমনি ভাবের ভারে, সুধা নিধি পাবে
মুখের কথায় হয় না সে মানুষ ধরা॥
অগ্নি যেমন ঢাকা ভষ্মের ভিতরে
সুধা তেমনি আছে গরলে হল ভেতরে
কেউ সুধার লোভে যেয়ে, মরে গরল খেয়ে
মন্থন ভাব জানে না তারা॥
যে স্তনের দুধ খায় শিশু ছেলে
জোকের মুখে তথা রক্ত এসে মেলে
লালন ফকির বলে, বিচার করিলে
সুরস মেলে সেই ধারা॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যাঃ
গোঁসাই বা প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির কর্মধারা অন্যান্য ব্যক্তি সত্ত্বা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তিনি তার প্রজ্ঞার শক্তি দ্বারা বস্তুর মধ্যকার প্রকৃত অবস্থা বের করে আনতে পারে। তিনি তার প্রজ্ঞা বা সাধনার শক্তি দ্বারা পনির সাথে দুধ মেশানো অবস্থা থেকে সুকৌশলে মন্থনের মাধ্যমে দুধ ও পানিকে আলাদা করতে পারেন।
বস্তুর মধ্যেই দুঃখ লুকায়িত থাকে। ছাইয়ের মধ্যে যেমন আগুন লুকায়িত তেমনি প্রতিটা বস্তুর মধ্যেই আগুন লুকায়িত থাকে। সেই বস্তুর আগুন বুঝতে না পারলে সেই আগুনে আঙ্গার হতে হয়। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ বস্তুর আগুন সম্বন্ধে জ্ঞান না থাকার কারণে সেই বস্তুর সাথে সাথে সেই বস্তুর লুকায়িত আগুন ভোগ করতে বাধ্য হয়। অবশেষে তার জীবনটা বময় আগুনের সাথে একাকার হয়ে সারা জীবন দুঃখে আবর্তিত হয়। এটাই মানব জীবনের অবস্বম্ভাবী পরিণতি।
আশার বাণী মানুষ তার সাধনার শক্তি দ্বারা নিজের মধ্যে প্রজ্ঞার শক্তির সৃষ্টি করে। সেই প্রজ্ঞার শক্তিতে নিজেকে শক্তিশালী অবস্থার সৃষ্টি করে। সেই প্রজ্ঞার শক্তিতে সে তার প্রতিটা মুহুর্ত পরিচালিত করে এবং প্রতিটা বস্তুর সাথে অবস্থানের সময় সে আকর্ষণ বা দুঃখকে প্রতিহত করে নিজেকে প্রশান্তিতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখে। তেমনি কৌশল বা প্রজ্ঞার অনুপস্থিতিতে শিশুর মুখে দুধ আসলেও জোঁকের একই জায়গা থেকে মুখে রক্ত আসে।

২৩-০৫-২০১৭

সকাল: ৮:০৪

আগামী নিউজ/আর
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে