Dr. Neem on Daraz
Victory Day

এখন মনে হচ্ছে বড় কারাগারে আছি: প্রধানমন্ত্রী


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২১, ১২:১৪ এএম
এখন মনে হচ্ছে বড় কারাগারে আছি: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে নিজেকে বড় কারাগারের বন্দি মনে হয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব তার পায়ে শৃঙ্খল বেঁধে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ব স্থবির। আমিও ঘরে বন্দি। মাঝে মাঝে মনে হয়, ২০০৭ সালে যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলাম তখন একটা ছোট কারাগারে ছিলাম। এখন মনে হচ্ছে একটা বড় কারাগারে আছি। আর যে কারণে আজকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে কিন্তু সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের, দুঃখের। মনটা পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, এটা ঠিক। কিন্তু উপায় নেই। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, যেটা আমি বলবো, আমার পায়ে শৃঙ্খল বেঁধে দিয়েছে, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান। আমরা চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় আবার তার গৌরব ফিরে পাক। এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, গবেষণা হবে, শিক্ষার প্রসার ঘটবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এই বিশ্ববিদ্যালয় আবার তার গৌরব ফিরে পাবে। এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, গবেষণা হবে, শিক্ষার প্রসার ঘটবে। এবং তার আলো ছড়িয়ে পড়বে সমস্ত বাংলাদেশে। আমরা চাই ঢাবি সব সময় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে হবে না। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা সমগ্র বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দক্ষ মানবসম্পদ দরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় থেকে এটি শুরু হবে। কেননা এই বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। এখন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবে। অন্তত অ্যালামনাই হিসেবে আমি এটা বলতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, বিশেষ করে স্বাধীনতা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অবদান রেখেছে। আমরা যদি প্রত্যেকটা অধিকার আদায়ের সংগ্রাম দেখি তার সবগুলোই ঢাবি থেকে শুরু হয়েছিল। ঢাবি সব সময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম করেছে।

২০০৭ সালে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে গ্রেফতার হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন প্রতিবাদ শুরু হয় তখন কারাগারে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মূল প্রবন্ধে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ভারত ভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তান যখন পূর্ব পাকিস্তানকে শাসনের নামে দুঃশাসন করে তখন এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সবার আগে প্রতিবাদ করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অনেকেই জীবন দিয়েছিলেন। এর বিনিময়ে পেয়েছি আমরা একটি স্বাধীন দেশ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দেশের উন্নয়নে নানাভাবে অবদান রাখেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা, পড়াশোনার পরিবেশ, গবেষণা ব্যবস্থা সবকিছুই আছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন আমাদের সৃজনশীলতা এবং মূল্যয়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমরা আরো অগ্রসরমানতা দেখতে চাই। এটি সত্য, শিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে বৈশ্বিক মানের বিবেচনায় আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছাতে পারিনি। এটির উত্তরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে। কেননা শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। তাই আমাদের সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সময় উপযোগী কার্যসূচি প্রণয়ণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈশ্বিক সূচকে আশাব্যাঞ্জক ভূমিকা রাখতে হবে। আমি আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফল হবে।

আগামীনিউজ/এএইচ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে