Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ফুটপাত থেকে পণ্য কিনতে সাবধান!


আগামী নিউজ | প্রভাত আহমেদ প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২১, ০৩:৩৪ পিএম
ফুটপাত থেকে পণ্য কিনতে সাবধান!

ছবি: আগামী নিউজ

ঢাকাঃ রাজধানীর ফুটপাতে নকল ও ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ি, মতিঝিলসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাকং ও অফিস ছুটির পর পরই দেখা যায়, ফুটপাত থেকে এসব নকল ভেজাল পণ্য কিনছেন দল বেধে, কোন করকম যাচাই বাচাই ছাড়াই। 

এছাড়ও চট্টগ্রাম মহানগর, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দেখা যায় এমন চিত্র।

নকল-ভেজাল বন্ধ নেই। করোনাতান্ডব বেতোয়াক্কা করে নকল ও ভেজালকারীরা কস্মেটিকস, খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ব্যবহার্য পণ্য নকল করছে বা তাতে ভেজাল মেশাচ্ছে। নানান খাদ্যসামগ্রী ও শিশুখাদ্য যেমন নকল হচ্ছে তেমনি ভেজাল পণ্যও পাওয়া যাচ্ছে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ব্রান্ডের পণ্য, এমন কি, ওষুধও নকল হচ্ছে। নকল ও ভেজাল পণ্যে বাজার সয়লাব। তাছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সামগ্রীও বিক্রি হচ্ছে দোকানে দোকানে। এদিকে করোনাকারণে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নকল সেনিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল, ডিটারজেন্ট, সাবান, মাস্ক, স্প্রে মেশিন, হ্যান্ডগ্লাভস ইত্যাদি যেমন তৈরি হচ্ছে তেমনি এসব ফুটপাত থেকে বড় বড় শপিংমলে অবাধে বিক্রী হচ্ছে।

সাধারণ ক্রেতা পক্ষে নকল-ভেজাল চেনা এবং সর্তকতার সঙ্গে পণ্যাদি কেনা অসম্ভব। ফলে অধিকাংশ ক্রেতা মানসম্পন্ন, আসল ও নির্ভেজাল পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং এই দুর্দিনে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। নকল পণ্য তৈরি করা কিংবা পণ্যে ভেজাল মেশানো আমাদের দেশে মোটেই কোনো নতুন ঘটনা নয়। সব সময় পণ্যের নকল তৈরি হয়, আসল পণ্যের সঙ্গে ভেজাল মেশানো হয়। তবে কোনো কোনো সময় তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। রমজান, ঈদ বা কোনো উৎসবের সময় পণ্যে নকল-ভেজাল বেড়ে যায়। পণ্যের সংকট দেখা দিলে কিংবা চাহিদা বাড়লেও নকল-ভেজালের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। নকল-ভেজাল পণ্য স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগব্যাধি বিস্তারের একটি বড় কারণ এই নকল ও ভেজাল পণ্য।

করোনাকারণে আমদানী ও শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকায় নকল-ভেজালের কারবার বেড়ে গেছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র দেশজুড়ে নকল-ভেজাল পণ্যে তৈরি ও বাজারজাত করছে। আমদানী ও উৎপাদন বন্ধ থাকলেও চাহিদা কিন্তু কমেনি। এই সুযোগটি ষোলআনা নিচ্ছে নকল-ভেজালকারী দুষ্টচক্রটি। এদিকে করোনা মোকাবিলায় কিছু পণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে সেনিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল, ডিটারজেন্ট সাবান, হ্যান্ডগ্লাভস পিপিই ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা যায়। এসব পণ্য ও সামগ্রীর নকল হচ্ছে ব্যাপকভাবে। ভেজাল মেশানোও চলছে কোনো কোনো পণ্যে। পুরানো ঢাকার চকবাজার, লালবাগ ও কেরানীগঞ্জের অলিগলিতে তৈরি হচ্ছে নকল সাবান, দাগনাশক ক্রিম, প্রসাধনী, তেল, পারফিউম, শিশুখাদ্য, দুধ, ঘি, তেল ইত্যাদি।

পুরানো ঢাকার অন্যান্য এলাকায়ও একইভাবে খাদ্যপণ্য, শিশুখাদ্যসহ প্রয়োজনীয় ও ব্যবহার্য প্রায় সকল পণ্যেরই নকল তৈরি হচ্ছে। পণ্যের নকল তৈরি করা কিংবা পণ্যে ভেজাল দেয়া এবং নকল-ভেজাল পণ্য বাজারজাতকরণ বা বিক্রী করা আইনে বারিত। অথচ নকল-ভেজাল পণ্য উৎপাদন থেকে বিক্রী সব কিছুই হচ্ছে আইনকে বেআমলে নিয়ে। আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই। যে আইনের প্রয়োগ নেই, তার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিএসটিআই’র মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হলো, নকল-ভেজাল প্রতিরোধ এবং আসল ও মানসম্মত পণ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা। প্রতিষ্ঠানটি আজ পর্যন্ত এব্যাপারে তার যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। লোকবলের স্বল্পতার কথা বলে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন বছরের বছর ধরে। লোকবল বাড়াতে বাধা কোথায়?

বাধা কোথায়, কেউ বলতে পারেনা। তবে সর্ব সাধারণের সম্মত অভিমত এই যে, দায় ও দায়িত্ব এড়ানোর জন্যই বরাবর লোকবলের অভাবের কথা বলা হয়। নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানও কার্যত লোক দেখানোর মহড়ায় পরিণত হয়েছে। এতে সকল-ভেজালকারীদের পোয়াবারো হয়েছে। 

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে