Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইসরায়েলের হামলা: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত সাত শতাধিক


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩, ০৯:২০ এএম
ইসরায়েলের হামলা: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত সাত শতাধিক

গাজার দেইর এল-বালাহতে ইসরায়েলি হামলার পর আহত শিশুদের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে আনা হয়েছে। ছবি: আনাদুলু এজেন্সি

ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাত শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ছিটমহলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের আশেপাশের আরও এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মহাপরিচালক রোববার আল জাজিরাকে বলেছেন যে, শুক্রবার সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল পুনরায় বোমাবর্ষণ শুরু করার পর থেকে ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যুদ্ধবিরতি শেষে রোববার খান ইউনিস, রাফাহসহ গাজার উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

ইউনিসেফের গ্লোবাল মুখপাত্র জেমস এল্ডার গাজা থেকে বলেছেন, 'আপনি যেখানেই যান, সেখানে তৃতীয়-ডিগ্রি পোড়া, ছুরির ক্ষত, মস্তিষ্কের আঘাত এবং হাড় ভাঙা শিশু রয়েছে। মায়েরা এমন বাচ্চাদের জন্য কাঁদছেন, যেগুলো দেখে মনে হয় তারা মৃত্যুর থেকে কয়েক ঘন্টা দূরে। মনে হচ্ছে এটা একটা ডেথ জোন।'

খান ইউনিসের প্রধান হাসপাতালে থাকা এসোসিয়েট প্রেসের একজন সাংবাদিক জানান, রোববার সকালে শহরের পূর্ব অংশে একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।

অপরদিকে, গাজার কেন্দ্রীয় এলাকা জুড়ে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে নিহত ৩১ জনের মৃতদেহ গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর এল-বালাহ শহরের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের একজন প্রশাসনিক কর্মচারী ওমর আল-দারাভি এমন তথ্য জানিয়েছেন।

উত্তর গাজায় রোববার ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোর নিচে বেঁচে থাকাদের সন্ধান করছে উদ্ধারকারীরা। তবে তাদের কাছে এসব ধ্বংসস্তুপ সরানোর জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ক্রমবর্ধমানভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ৭ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে পুরোদমে ফিলিস্তিনি উপত্যকায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গাজায় হাজার হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। পুরো এলাকার কোথাও নিরাপত্তা নেই। গত ৭ অক্টোবর থেকে হামলায় এখন পর্যন্ত গাজার ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানয়েছে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনডব্লিউআরএ এর সাবেক মুখপাত্র ক্রিস গানেস।

ইউএনডব্লিউআরএ এর এই সাবেক কর্মকর্তা জানান, গাজায় আশ্রয় নেয়ার জন্য নিরাপদ কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই। উত্তর থেকে দক্ষিণে, ইসরায়েলি বিমান হামলা বারবার শরণার্থী শিবির এবং আবাসিক ভবনগুলিতে আঘাত করেছে।

তিনি বলেন, প্রায় দুই মাসের যুদ্ধে প্রায় ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর থেকে উৎখাত হয়েছে।

জাবালিয়ার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের উত্তর গেটে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত চারজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালের সূত্রগুলো ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফাকে জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে।

উত্তর গাজায় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে হাসপাতাল কমপ্লেক্সে আশ্রয় খুঁজছেন ১০ হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি। হাসপাতালের সূত্র আরো জানিয়েছে, বোমা হামলায় নিহতদের ৩৫টিরও বেশি লাশ এখনো হাসপাতালে দাফনের অপেক্ষায় রয়েছে। রোববার সকাল থেকে অন্তত ৯৯টি মৃতদেহ হাসপাতালে এসেছে।

এদিকে হামাসের আরও এক কমান্ডারকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। নিহতের নাম হাইথাম খুজারি। তিনি ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় জড়িত ছিল দাবি করছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির ভাষ্যমতে, বিমান হামলায় হামাসের শাতি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার হাইথাম খুজারি নিহত হয়েছেন।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ড্যানিয়েল হাগারি দাবি করেন, গাজা শহরের বাইরে আল-শাতি শরণার্থী শিবিরের আশপাশে হামলায় খুজারি নিহত হয়েছেন। তার দাবি, ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবর হামলার সময় অভিযান চালানোর জন্য খুজারি দায়ী ছিলেন।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পরবর্তী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, তারা আল-শাতি শরণার্থী শিবিরের আশপাশে অভিযান চালিয়ে যাবে। এবং গতকালের মতো সেনা তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলের কমান্ডারদের প্রত্যেককে নির্মূল করবে।

গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় হামাস ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়।

হামাসের হামলার পর ওইদিন থেকেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অবিরাম হামলায় ফিলিস্তিনে ১৫ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।


এমআইসি

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে