Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আইসিইউ পেতে হাহাকার


আগামী নিউজ | প্রভাত আহমেদ প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২১, ০২:২৯ পিএম
আইসিইউ পেতে হাহাকার

ছবি: আগামী নিউজ

ঢাকাঃ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অদৃশ্য ভাইরাসটিতে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। মৃতের তালিকায় দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ভাইরাসটির নতুন ঢেউয়ের সংক্রমণের হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এতো বিশাল সংখ্যক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলোকে। রোগীর চাপে হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। মিলছে না নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ)।

রাজধানীর ১৯টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের ১৭টিতেই ফাঁকা নেই আইসিইউ। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও আইসিইউ খালি না পেয়ে রোগীর স্বজনরা। আইসিইউয়ের তীব্র সংকটের কারণে যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে অনেকের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অনেক চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন হাসপাতালগুলোর ওপর যে হারে রোগীর চাপ বাড়ছে, তাতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সেবা সংকটজনক হয়ে উঠছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শুক্রবারের দেয়া তথ্যানুযায়ী, রাজধানীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড ১০টি সরকারি হাসপাতালের নয়টিতে সর্বমোট আইসিইউ শয্যা ১৩২টি। এর মধ্যে ১২৯টিতেই রোগী ভর্তি রয়েছে। মাত্র একটি হাসপাতালে চারটি বেড ফাঁকা ছিল। তবে একটি হাসপাতালের আইসিইউ বেডের চেয়ে একজন রোগী বেশি ভর্তি ছিল।

এদিকে বেসরকারি নয়টি হাসপাতালের সাতটিতেই একটিও শয্যা ফাঁকা নেই। করোনা ডেডিকেটেড নয়টি বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১৭৩টি। এর মধ্যে বেশিরভাগই রোগীতে পরিপূর্ণ।

আজ রবিবার সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় সুমি বেগম নামে এক রোগীর স্বজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, তীব্র শ্বাসকষ্টের কারণে সুমি বেগমকে নারাণগঞ্জ থেকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু আইসিউ শয্যা খালি না থাকায় মুগদা হাসপাতাল থেকে সুমিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যান রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসাপাতালের দিকে।

তিনি আরও বলেন, শরীর অসুস্থ বেশ কয়েকদিন ধরে। জ্বর ঠান্ডা আছে। তবে হঠাৎই শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় তাকে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতলে ভর্তি করানোর চেষ্ট করি। কোনো আইসিউ না পেয়ে ঢাকায় নিয়ে আসি। এখন দেখি মুগদা হাসপাতালেও কোনো আইসিইউ খালি নাই।

মুগদা হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, আমাদের এখানে ১৯টি আইসিউ শয্যাসহ মোট ৩২৯টি বেড রয়েছে। এই মুহূর্ত রোগী ভর্তি আছে ৩৪৩ জন। আমরা সর্বাত্মক সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে রোগীর চাপ ক্রমশই বাড়ছে।

করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভোগান্তির প্রসঙ্গে এই চিকিৎসকরা বলেন, আমরা যারা করোনা আক্রান্ত হইনি তারা এই ব্যথাটা বুঝবো না। একজন রোগীকে ভর্তি করাতে স্বজনরা হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে পায়ে পর্যন্ত পরে যাচ্ছেন। একজন চিকিৎসক কখনো বেড খালি রেখে রোগী ফিরিয়ে দেন না।

হাসাপাতাল সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে বেশ কয়েকজন রোগী মুগদা জেনারেল হাসপাতলে আসে আইসিইউ বেডের খোঁজ করতে আসেন। শয্যা সংকটের কারণে কুর্মিটোলা ও কুয়েত মৈত্রি ও ঢাকা মেডিকেলের কলেজ হাসাপাতালে রোগী নিয়ে ছুটে যান স্বজনরা।

শুধু মুদগা হাসপাতাল নয়, করোনা চিকিৎসার জন্য রাজধানীর প্রতিটি ডেডিকেটেড হাসপাতালেই আইসিইউয়ের এমন সংকট চলছে। প্রতিটি হাসপাতালেই আইসিইউ পেতে বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিয়েও স্বজনরা আইসিইউ পাচ্ছেন না।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে