Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জেনে নিন লিভারের রোগের লক্ষণ ও মুক্তি লাভের উপায়


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক   প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২০, ০৮:৪১ পিএম
জেনে নিন লিভারের রোগের লক্ষণ ও মুক্তি লাভের উপায়

লিভারের রোগের লক্ষণ ও মুক্তি– লিভার রোগ মানেই যেন আঁৎকে উঠা। অন্য কোন রোগে যেমন-তেমন, লিভারে অসুখ হয়েছে মনে করলেই মনে নানা অজানা আশঙ্কা উঁকি-ঝুঁকি দেয়। আর চারপাশের সবাই হয়ে উঠেন একেকজন লিভার বিশেষজ্ঞ। এটা করতে হবে, ওটা করো'না জাতীয় পরামর'্শ আসতে থাকে ক্রমাগত। বিশেষ করে কি খেতে হবে আর কি খাওয়া যাব'ে না এই নিয়ে পরামর'্শের যেন শেষ থাকে না।

প্রতিদিন লিভার রোগীদের চিকিৎসা করতে যেয়ে যে জিনিসটা মনে হয় তা হলো এ ধরনের রোগীরা তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে খুবই বিভ্রান্তিতে থাকেন। বিশেষ করে লিভার বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলতে যেয়ে তাদের বিভ্রান্তি অনেক ক্ষেত্রেই বেড়ে যায়। কারণ লিভার রোগীর পথ্যের ব্যাপারে আমা'দের যে প্রচলিত বিশ্বা'স তা অনেক ক্ষেত্রেই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে খাপ খায় না।

চোখ হলদে হয়ঃ ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের মেডিক্যাল পরিচালক ডা. কেভি নারায়ানান মেনন বলেন, হলদে চোখ হল একটি উপসর্গ যাতে বুঝা যায় যে লিভার ভালোমতো কাজ করছে না এবং এটি সম্ভবত লিভার ডিজিজ বা যকৃত রোগের সবচেয়ে নির্দিষ্ট উপসর্গ। বিলিরুবিন নামক হলুদ রঙয়ের একটি পদার্থ সাধারণত লিভার দ্বারা বিকল হয়ে শরীর থেকে অ’পসারিত হয়ে যায়। কিন্তু লিভারে সমস্যা হলে শরীরে বিলিরুবিন পুঞ্জিভূ'ত 'হতে থাকে যা চোখের সাদা অংশকে হলদে করে তোলে।

পেট তরলে ভরে যায়ঃ আপনার পেট যদি হঠাৎ ফুলে যায় এবং তা যদি না থামে, তাহলে এটি সাধারণ ব্লোটিং বা পেট ফোলার চেয়েও বেশি ফুলে যেতে পারে। ডা. মেনন বলেন, লিভারের আশেপাশের র'ক্তনালীসমূহের মধ্যে বর্ধিত চাপ পেটের ভেতর তরল জমা করতে পারে। গ্যাস, খাবার কিংবা তরলের কারণে আপনার পেট ফুলে গেছে কিনা জানতে ডাক্তার দেখানো গু'রুত্বপূর্ণ।

হেপাটাইটিস এ, বি অথবা সি আছেঃ ভাইরাস অথবা প্যারাসাইট বা পরজীবী বা জীবাণু দ্বারা লিভার সংক্রমিত হলে লিভারে প্রদাহ হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায়। লিভার ইনফেকশন বা যকৃত সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ধরন হল, হেপাটাইটিস ভাইরাস। আ'ক্রা'ন্ত ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসলে অথবা দূষিত খাবার ও পানি শরীরে গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস এ ছড়ায়।

অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে র'ক্ত, যৌ'ন মেলামেশা এবং অন্যান্য শারীরিক তরলের মাধ্যমে দে'হে প্রেরিত 'হতে পারে। ডা. মেনন বলেন, হেপাটাইটিস সি এর জন্য ভালো চিকিৎসা আবি'ষ্কার হয়েছে, তাই লোকজনের হেপাটাইটিস সি আছে কিনা পরীক্ষা করা উচিত। লিভার সুস্থ রাখার বি'ষয় সম্পর্কে জানতে ডাক্তারের স''ঙ্গে কথা বলুন।

শরীরের সর্বত্র চুলকানিঃ আপনি বিশ্বা'স করুন কিংবা না করুন, একটি অসুস্থ লিভার শরীরের সর্বত্র চুলকানির উদ্রেক করতে পারে। ডা. মেনন বলেন, আমর'া নিশ্চিতভাবে জানি না, কিন্তু এটি বাইল সল্ট বা পিত্ত লবণের স''ঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। পিত্ত হচ্ছে লিভার দ্বারা উৎপাদিত পাচন পদার্থ, কিন্তু প্রাইমা'রি বিলিয়ারি সিরোসিস (একটি অটোইমিউন যকৃত রোগ যা বাইল ডাক্ট বা পিত্তনালীকে বন্ধ করে দেয়) রোগে আ'ক্রা'ন্তদের মধ্যে পিত্ত জমা 'হতে থাকে এবং শরীরে উল্লেখযোগ্য উপসর্গ (যেমন- চুলকানি) দেখা দেয়।

প্রতিনিয়ত ক্লান্তঃ দীর্ঘায়িত ক্লান্তি এমন একটি উপসর্গ যা প্রায় সবসময় শরীর যে ভালো নেই তা নির্দেশ করতে পারে। লিভার ডিজিজ বা যকৃত রোগ হলেও প্রতিনিয়ত ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। অতিমাত্রায় ম'দ্যপানঃ অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদে অ্যালকোহল সেবনে লিভারের অনেক ক্ষ'তি 'হতে পারে, এমনকি শেষপর্যন্ত যকৃত রোগও 'হতে পারে। লিভার শরীরের কেমিক্যাল ও টক্সিন দূরীকরণে সাহায্য করে, তাই প্রতিনিয়ত ম'দ্যপানে এটিকে পাম্পিং করার মানে হল এটিকে ওভারটাইম কর্মে ব্যস্ত রাখা হচ্ছে।

প্রয়োজনাতিরিক্ত ওজনের অধিকারীঃ অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা আপনাকে আয়নায় যেমনভাবে দেখায় তার চেয়েও বেশি শরীরে ক্ষ'তিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, চল্লিশোর্ধ্ব এবং পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা অ্যালকোহলমুক্ত মেদবহুল যকৃত রোগ বেড়ে যায়, যা মূলত লিভারে চর্বি জমা'র কারণে হয়ে থাকে।

মাঝেমাঝে এ কারণে সিরোসিস বা লিভারে ক্ষত 'হতে পারে। সুখবর হল আপনি এ রোগ বা স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস বিকাশের ঝুঁকিপূর্ণ বি'ষয়সমূহ নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তন করতে পারবেন। যকৃত রোগের পারিবারিক ইতিহাস আছেঃ ডা. মেনন বলেন, ছোট শ্রেণীর যকৃত রোগ বংশগতভাবে হয়ে থাকে, তাই আপনার পরিবারের কোনো সদস্য বা একাধিক সদস্য যকৃত রোগ বা লিভার ক্যানসারে মা'রা গিয়ে থাকলে ডাক্তারের সামনে প্রকাশ করুন,

যাতে তিনি আরো ভালোভাবে আপনার যকৃত রোগ পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। বু'দ্ধিভ্রষ্ট বা বিস্মর'ণপ্রবণ ঃ সামান্য বিস্মর'ণ বা ভুলে যাওয়া ভালো বি'ষয় বলে বিবেচিত, কিন্তু হঠাৎ করে সবকিছু ভুলে যাওয়া কিংবা সহজেই বু'দ্ধিভ্রষ্টতাকে অনপকারী ব্রেইন ফার্ট (সাময়িক বিস্মর'ণ) ভাববেন না। হেপাটিক এঞ্চেফ্যালোপ্যাথি (র'ক্ত থেকে টক্সিন অ’পসারণে লিভারের ব্যর্থতার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্রম ক্ষ'তিগ্রস্ত হওয়া) হচ্ছে,

এমন এক অবস্থা যা লিভার শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে অসমর'্থ হলে হয়ে থাকে এবং তা সাধারণত সেসব রোগীদের হয়ে থাকে যাদের দীর্ঘস্থায়ী যকৃত রোগ, সিরোসিস অথবা হেপাটাইটিস আছে। ঘরোয়া উপায়ঃ লেবুপানিঃ প্রতিদিন লেবু পানি পানের অভ্যাস করুন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- সি থাকে, যা লিভারকে দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করে। গ্রিন-টিঃ প্রতিদিন সকালে ও বিকালে এক কাপ করে গ্রিন-টি পান করুন। এটি লিভার ফাংশন ঠিক করতে সহায়তা করে।

অ্যাপেল সিডার ভিনিগারঃ এক কাপ গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার আগে পান করুন। কয়েক মাস এটা খেলেই দেখবেন লিভারে জমে থাকা চর্বি সব গায়েব হয়ে গেছে। আ'দাপানিঃ এক চা চামচ আ'দা গু'ঁড়া গরম পানিতে মিশিয়ে দিনে দুবার পান করুন। এই পানীয় টানা ১৫ দিন খেলেই দেখবেন অনেক সুস্থ বোধ করছেন।

কারণ এটি লিভারে চর্বি জমা'র প্রক্রিয়াটি প্রায় বন্ধ করে দেয়। ফলে লিভার আস্তে আস্তে ঠিক 'হতে শুরু করে। আমলার রসঃ আমলায় ভিটামিন-সি থাকায় এটি লিভারকে দূষণমুক্ত করে। তাই লিভারের অসুখে আ'ক্রা'ন্ত রোগী যদি টানা ২৫ দিন এই রস, এক চামচ করে প্রতিদিন সকালে খান, তাহলে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। তথ্যসূত্রঃ রিডার্স ডাইজেস্ট

আগামী নিউজ/নাঈম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে