Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অধিকাংশ শিল্পীর জীবন দুর্দশায়


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২০, ১২:১৬ পিএম
অধিকাংশ শিল্পীর জীবন দুর্দশায়

ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীঃ গাঙ্গেয় পলিমাটি সমৃদ্ধ উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী। এক সময় সমতট নামে সুপরিচিত ছিল। পরে পত্তন হয় ভুলুয়া স্টেটের। সে থেকে ভুলুয়া পরগণা হিসেবেই এ অঞ্চল প্রসিদ্ধি লাভ করে। ভুলুয়া বন্দরের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। কালক্রমে এর নামকরণ করা হয় নোয়াখালী। কখনো থেমে থাকেনি এর চলার গতি। শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেও রয়েছে এ জনপদের সমৃদ্ধি। কিন্তু করোনা যেন থামিয়ে দিল সেই গতি!

সূত্র জানায়, নোয়াখালীর সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংখ্যা প্রায় ষাটের অধিক। সংস্কৃতি কর্মীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬০০ মতো। তাদের অনেকেরই পেশা তবলা, সংগীত, গীটার ও নৃত্য। অনেকে প্রশিক্ষকও। যারা শিক্ষকতার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি নানা অনুষ্ঠান করে জীবিকানির্বাহ করেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০০ জনকে সহায়তা দেয়া হলেও বাকিদের জীবন কাটছে কষ্টে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সব অঙ্গনের দরজা খুলে দেয়া হলেও নোয়াখালীর সাংস্কৃতিক অঙ্গন এখনো স্থবির। এদের কেউ কেউ ধার-দেনা করে চলছেন। কেউ অনলাইনে ব্যবসা করছেন। কেউবা কাঠ বিক্রির ব্যবসা করছেন। দীর্ঘ ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে সংগীতের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী মো. বেলাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, গান ছাড়া জীবনে আমি আর কোনো কিছু নিয়ে ভাবিইনি। গানই আমার পেশা, গানই আমার নেশা। অথচ এখন নিরুপায় হয়ে লাকড়ি বিক্রির চেষ্টা করছি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছি।

জনপ্রিয় এই শিল্পী ও গীতিকার বলেন, সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার লেখা গান ‘তোমরা কাঁদো বাঙালি কাঁদো, যত পারো তাই, কেঁদে কেঁদে মনের দুঃখ হালকা কর ভাই’ আমার অন্তরে জ্বালা হলো কলিজা পুড়ে ছাই, যে কারিগর দেশ বানাইছেন, সেই কারিগর নাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হারাই।’ শুনে কেঁদেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সংগীত প্রশিক্ষক মোজাম্মেল হক বলেন, আয়ের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। তারপরও আশায় বুক বেঁধে আছি কখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

প্রশিক্ষক কামাল উদ্দীন বলেন, এরপর ঋণ করে চলেছি। সামনের দিনগুলোতে কীভাবে চলব? আমরা চাই সরকার আমাদের দুঃসময়ে এগিয়ে আসুক।

অক্টোপেড শিল্পী শিমুল দাশ বলেন, শিল্প চর্চার পাশাপাশি আমি সাউন্ড বক্স থেকে শুরু করে নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র ভাড়া দিয়ে থাকি। প্রায় ৬ মাস ধরেই সবই বন্ধ থাকায় আমার ১০-১২ লাখ টাকা মূল্যের নানা ধরনের যন্ত্র নষ্ট হওয়ার পথে। কচিকাঁচার মেলার সাধারণ সম্পাদক ও সংগীত শিল্পী মো. করীফ বললেন, করোনায় সবই বানচাল হয়ে গেছে।

এতদিন আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় কোনো রকমে টিকে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন মনোবল ভেঙে যাচ্ছে।

শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার এস এম টি কামরান হাসান বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শিল্পকলার পক্ষ থেকে অনলাইনে মুজিববর্ষের গানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যদিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়া মেয়রের পক্ষ থেকেও দুই দফায় ৮০ জনকে দেড় হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়েছে।

আগামীনিউজ/এএইচ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে