Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পৃথিবীতে মহামারি ছড়ানো যত ভাইরাস


আগামী নিউজ | ইয়াকুব আলী প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০, ০৪:০৮ পিএম
পৃথিবীতে মহামারি ছড়ানো যত ভাইরাস

পৃথিবীতে অসংখ্য মহামারী ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে। আর এগুলো কেড়ে নিয়েছে হাজারো প্রাণ।  ইতিহাসে এর আগে যেসব ভাইরাস মহামারী রূপ নিয়েছিল সেগুলো হলো:

স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা: স্প্যানিশ ফ্লু নামে পরিচিত এ ভাইরাসটি ১৯১৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম শনাক্ত হয়। এতে সে সময় বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি মানুষ অক্রান্ত হয়। ভাইরাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাসে প্রায় ৫ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাদের একস্থান থেকে অন্য স্থানে সরানোর ফলে এ ভাইরাসের সংক্রামন দ্রুত ছড়ায়।

করোনাভাইরাস: ভাইরাসজনিত রোগের কথা বললে অবশ্যই বর্তমান সময়ের অতঙ্ক নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে বলতে হবে। সম্প্রতি এ ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে চীনের উহান প্রদেশে। ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে সর্দি-কাশির লক্ষন দিয়ে শুরু হয়। এটি খুব দ্রুতই পৃথিবীর অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে এবং খুব মারাত্মকভাবে একজন থেকে আরেক জনের শরীরে আক্রমন করছে। এ ভাইরাসে চীনে এ পর্যন্ত ৯০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এদিকে, চীন ছাড়াও আরো ২৫টি দেশ এ ভাইরাসের সক্রামন ঘটেছে। এগুলোর বেশির ভাগই এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকায় দেশ। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

ইবোলা ভাইরাস: মধ্য আফ্রিকার উওরাংশের কঙ্গ উপত্যকায় প্রভাহিত ইবোলা নদীর সাথে মিল রেখে এ ভাইরাসের নামকরন করা হয়। ১৯৭৬ সালে প্রথম এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এতে মৃত্যুর আশঙ্কা ৯০ শতাংশ। আশার কথা হলো, ইদানীং আর কারো ইবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায় না। ২০১৪-১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তখন বেশি আক্রান্ত হয়েছিল গিনি, সিয়েরা লিওন এবং লাইবেরিয়ায়। ২০১৪ সালে কঙ্গোতে ইবোলা সংক্রমণে ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

মারবুর্গ ভাইরাস: ১৯৬৭ সালে মানুষ প্রথম মারবুর্গ ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পারে। জার্মানির মারবার্গের একটি পরীক্ষাগারে এ ভাইরাসসে প্রথম ৩১ জন আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ৭ জন মারাও যায়। জানা গেছে, প্রথম যে ব্যক্তি মারবুর্গে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি উগান্ডা থেকে আফ্রিকান সবুজ বানর নিয়ে এসে গবেষণা করছিলেন। বানর থেকেই ওই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয় বলে ধারনা করা হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত কঙ্গোতে এ ভাইরাসে শতকরা ৮০ ভাগ রোগীর মৃত্যু হয়েছিলো।

মনকিপক্স ভাইরাস: এ ভাইরাসটি প্রথমে পাশ্চিম ও মধ্য অফ্রিকায় শনাক্ত হয়। এটি ১৯৫৮ সালে সর্বপ্রথম আক্রমন করে বানরকে। এরপর ১৯৭০ সালে এটি মানব দেহে শনাক্ত হয়। এ ভাইরাসটি নিমূল করা সম্ভব হলেও এটির বিস্তৃতি খুব দ্রুত ঘটেছিল। এ ভাইরাসে আক্রান্ত শতকরা ১০ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরন করত।

সার্স ভাইরাস: চীনের দক্ষিণের গুয়াংদং প্রদেশে ২০০২ সালের নভেম্বরে প্রথম এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর এটি খুব দ্রুতই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হংকং, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও কানাডায় এর প্রদুর্ভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। ভাইরাসটির পুরো নাম ‘সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম’। সংক্ষেপে ‘সার্স’। এই ভাইরাস দাপট চালিয়েছিল ২০০৩ সালের জুলাই পর্যন্ত। এতে আক্রান্ত হয় ১৭টি দেশের আট হাজারেরও বেশি মানুষ। মারা যায় প্রায় আট শ। অবশ্য দ্রুতই এ ভাইরাস মোকাবিলা করা হয়।

লাসা ভাইরাস: ১৯৬৯ সালে নাইজেরিয়ার বোর্নো প্রদেশে এক নার্স প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। সে নার্স মারা যায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই। এর মধ্যে আরো দুজন একই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন চিহ্নিত হয় ভাইরাসটি। পরে এর নাম দেয়া হয় লাসা। এক ধরনের ইঁদুর এ ভাইরাস বহন করে। ছড়ায় তাদের বিষ্ঠার আশপাশের বাতাসে। পশ্চিম আফ্রিকায় এ ইঁদুরের বাস, বিশেষ করে সিয়েরা লিওন, গিনি, নাইজেরিয়া ও লাইবেরিয়ায়। এ অঞ্চলে প্রতিবছরই তিন থেকে পাঁচ লাখ মানুষ লাসা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে গড়ে পাঁচ হাজার।

আগামীনিউজ/রাকিব

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে