Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইউটিউব দেখে ‘জাম্বু কোয়েল’ পালনে সফল জাহাঙ্গীর


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ০৬:০৭ পিএম
ইউটিউব দেখে ‘জাম্বু কোয়েল’ পালনে সফল জাহাঙ্গীর

জাম্বু কোয়েল পালন করে সফলতা পেয়েছেন রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। ইউটিউব দেখে ২০২০ সালে ৫ শতাংশ জমিতে ঘর বানিয়ে খামার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে আড়াই হাজার জাম্বু কোয়েল পাখি রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজারের বেশি ডিম সংগ্রহ করেন তিনি। 

জাহাঙ্গীর হোসেন স্থানীয় বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় বাংলাট গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের মৃত আমির হোসেনের ছেলে। তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে ইন্টারনেটে জাম্বু কোয়েল সম্পর্কে জানতে পেরে ভারত থেকে বীজ ডিম সংগ্রহের পর নিজের হ্যাচারীতে বাচ্চা উৎপাদন করে খামার শুরু করি।’

সাধারণ কোয়েল পাখির চেয়ে আকারে বড় এবং ওজনে বেশি হওয়ায় বাড়ছে জাম্বু কোয়েল পাখির চাষ। অল্প পরিশ্রম ও স্বল্প পুঁজিতে কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় জাম্বু কোয়েল পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন রাজবাড়ী জেলার অনেক তরুণ উদ্যোক্তা। নতুন এ জাতের কোয়েল পাখি পালন বৃদ্ধিতে খামারীরা চাইছেন সরকারী সহায়তা।

বাজারে পাওয়া যায় এমন কোয়েল পাখির চেয়ে আকারে দ্বিগুণ জাম্বু কোয়েল পাখি। সাধারণ কোয়েল পাখির ওজন দেড়শ গ্রাম হলেও পূর্ণ বয়স্ক (১ বছর) একটি জাম্বু কোয়েল পাখির ওজন হয় ৫০০ গ্রাম।

অল্প পরিশ্রম ও স্বল্প পুঁজিতে কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় জাম্বু কোয়েল পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন রাজবাড়ী জেলার অনেক তরুণ উদ্যোক্তা। 

প্রতিদিন খামার থেকে প্রায় ২ হাজারের বেশি ডিম সংগ্রহ করেন জাহাঙ্গীর। সেগুলো নিজের হ্যাচারীতে ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫ হাজারের বেশি বাচ্চা উৎপাদন হয়। ১ দিন বয়সী বাচ্চা প্রতিটি ১২ টাকা দরে ও পূর্ণ বয়স্ক কোয়েল প্রতি কেজি ৩০০টাকা দরে বিক্রি করেন দেশের বিভিন্ন জেলার খামারীদের কাছে। প্রতিদিন জাম্বু কোয়েলের খামার দেখতে আসেন অনেক আগ্রহী উদ্যোক্তা।

খামার দেখতে আসা কলেজ ছাত্র কাজী মারুফ বলেন, আমি লেখা পড়ার পাশাপাশি হাঁস মুরগী পালন করি। জাহাঙ্গীর ভাই এলাকায় জাম্বু কোয়েলের খামার করার পরে তার সাফল্য দেখে আমিও ১০০ টি জাম্বু কোয়েল পাখি পালন করছি। কোয়েল পাখি খাবার কম খায়। রোগাক্রান্ত কম হয়। মুরগী থেকে জাম্বু কোয়েলের মাংস স্বাদ বেশি।

এই খামার থেকে বাচ্চা নিয়ে নিজে খামার করেছেন মো. আবু তালেব। তিনি বলেন, আমি আগে বেকার ছিলাম। এই খামার থেকে ১ দিনের ৫০০ বাচ্চা কিনে তাদের কাছ থেকে নানাবিধ পরামর্শ নিয়ে খামার করেছি। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ টি ডিম সংগ্রহ করি। আমি এখন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। জাম্বু কোয়েল পালনে কম খরচে বেশি লাভ।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার নিউ কলোনী এলাকা থেকে কালুখালী এই জাম্বু কোয়েলের খামারে এসেছেন মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, জাব্মু কোয়েল প্রতিটি আধা কেজি ওজনের হয়। ডিমের আকারও বড়। তাই জাম্বু কোয়েলের খামার করবো।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জেলা প্রাণীসম্পদ দফতর থেকে কোনো প্রকারের সহযোগীতা এখন পর্যন্ত পাইনি। ঋণ সহায়তা পেলে গ্রামীণ খামারিরা বড় পরিসরে খামার করতে পারবে। বয়লার, সোনালী, লেয়ারসহ বিভিন্ন মুরগী পালনের চেয়ে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় জাম্বু কোয়েল পাখি পালন হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় পোল্টি শিল্প এমনটাই আমাদের খামারিদের প্রত্যাশা ।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক সরদার জানান, কম পুঁজি বিনিয়োগে লাভ বেশি হওয়ায় সাধারণ কোয়েল থেকে জাম্বু কোয়েলের পালন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও ওষুধ টিকা দেওয়া হচ্ছে। সঠিক নিয়মের মাধ্যমে সুলভ হারে ঋণ সহায়তা দেবারও সুযোগ রয়েছে।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে