Dr. Neem on Daraz
Victory Day

৯০ টাকার পুঁজি থেকে ১০ বিঘা আম বাগানের মালিক


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১, ১১:২৪ এএম
৯০ টাকার পুঁজি থেকে ১০ বিঘা আম বাগানের মালিক

ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের ধারারচর গ্রামের আব্দুল মালেক। বেকার জীবনে স্ত্রীর কাছ থেকে ৬টি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে ৯০ টাকায় বিক্রি করে পেয়ারা বাগান করেন। প্রথম বছরই বিক্রি করেন ২৭ হাজার টাকার পেয়ারা। এরপর তিন বিঘা জমি কিনে আপেল ও কুল চাষ করেন। সেখানেও ধরা দেয় সফলতা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বাগানের পরিধি। এখন তিনি সাড়ে ১০ বিঘা আম বাগানের মালিক।

আব্দুল মালেকের বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০০ আমগাছ। দেখে মনে হয়- আমের রাজ্য। এ রাজ্যের আম সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আব্দুল মালেক স্বপ্ন দেখেন- একদিন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে রফতানি হবে তার বাগানের আম।

জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি ব্যাপক দুর্বলতা মালেকের। ১৯৮৫ সালে বেকার অবস্থায় বিয়ে করেন। বেকারত্ব দূর করতে ১৯৮৯ সালে পেয়ারা বাগান করার উদ্যোগ নেন। নিজের জমি না থাকায় বাগান করার জন্য এক বিঘা জমি দিয়েছিলেন তার বাবা। কিন্তু টাকার অভাবে ফলের চারা রোপণ করতে পারছিলেন না। ওই সময় তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৬টি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে ৯০ টাকায় বিক্রি করে পেয়ারার কিনে বাগান শুরু করেন। প্রথম বছরই ২৭ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করেন। এরপর তিন বিঘা জমি কিনে আপেল ও কুল চাষ করেন। সেখানেও ধরা দেয় সফলতা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বাগানের পরিধি। এখন তিনি সাড়ে ১০ বিঘা আম বাগানের মালিক।

আব্দুল মালেকের বাগানে বর্তমানে ব্যানানা, কটিমন, কিউজাই, পালমার, আমেরিকান ক্যান্ট, বারিফুর, শ্রাবনী, গৌর মতি, সূর্যের ডিম, চিয়ংমাই জাতের আম রয়েছে। প্রতি কেজি আম ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া সফেদা, মাল্টা, বলসুন্দরী কুল, লিচু বেদেনা, লিচু চায়না-৩, চায়না ১, লটকন, থাই জাম্বুরা, দেশি জাম্বুরাও চাষ করছেন তিনি। এ বাগানে কাজ করছে ১০ জন শ্রমিক।

আব্দুল মালেক জানান, এ বছর তার বাগানে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে, এর মধ্যেও বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাজারেও তার বাগানের আমের চাহিদা ব্যাপক। এছাড়া অনলাইনে প্রচুর আমের অর্ডার আসছে। সব খরচ বাদ দিয়ে চলতি মৌসুমে ১০-১২ লাখ টাকা লাভ হবে বলেও জানান এ সফল কৃষি উদ্যোক্তা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর আজাদ জানান, আব্দুল মালেকের বাগান পরিদর্শন করতে মাঝে মধ্যেই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়।

বকশীগঞ্জের ইউএনও মুনমুন জাহান লিজা বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে এত সুন্দর একটি ফল বাগান আছে জানার পরই আমি দেখতে গিয়েছিলাম। সত্যিই মনোমুগ্ধকর একটি বাগান করেছেন আব্দুল মালেক। আমরা তাকে সব ধরনের সহায়তা দেব।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে