Dr. Neem on Daraz
Victory Day

নদীচরে মিষ্টি আলু চাষ: স্বাবলম্বী হচ্ছে চাষীরা


আগামী নিউজ | মানিক সাহা, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২১, ০৪:১৮ পিএম
নদীচরে মিষ্টি আলু চাষ: স্বাবলম্বী হচ্ছে চাষীরা

ছবি: আগামী নিউজ

গাইবান্ধাঃ গত বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে কিছুটা লাভের আশায় গাইবান্ধায় কৃষকরা বিভিন্ন নদ-নদীর বালুময় চরের জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। সার, সেচ, কীটনাশক সহ অন্যান্য খরচাদি কম হওয়ায় এবং মিষ্টি আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষীরা ক্রমেই ঝুকে পড়ছেন মিষ্টি আলু চাষে। এ মিষ্টি আলু জাপানে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণত মিষ্টি আলু বা শাখালু নামে সারা দেশে পরিচিত কন্দ জাতীয় এই আলু। তবে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন নদীর চরের বালুময় জমিতে উৎপাদিত সুমিষ্ট আলু সারা দেশে ”গাইবান্ধার আলু” নামেই পরিচিতি পেয়েছে। এখন এ অঞ্চলের নদীচরের কৃষকরা মিষ্টি আলু তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নদীর তীরবর্তী বালুময় জমিতে সাধারণত ধান বা শাক-সবজি তেমন ভাল হয়না। তাই কৃষকরা চরাঞ্চলের জমিতে প্রতি বছর মিষ্টি আলুর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। 

জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া. কাটাখালী ও বাঙ্গালী নদীর তীরবর্তী রাখালবুরুজ, হরিরামপুর, তালুককানুপুর, মহিমাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ও চরের পলিযুক্ত বালুময় জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টি আলু চাষ করে আসছেন কৃষকরা। তবে কৃষকরা এবার প্রথম বারের মতো বিদেশে রফতানীযোগ্য নতুন জাতের জাপানী কোকিই-১৪ জিও জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। স্থানীয় জাতগুলোর চেয়ে নতুন এ জাতের মিষ্টি আলুর ফলন অনেক বেশী, আকারে বড়, খেতেও বেশ সুস্বাদু। আকার আকৃতি বড় লাল রং হওয়ায় দেখতেও বেশ আকর্ষনীয়।

মহিমাগঞ্জ বালুয়া গ্রামের মিষ্টি আলু চাষী রাজা মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান, নদীর চরের বালুময় জমিতে ধান বা অন্য ফসল তেমন ভাল হয়না। তাই বিকল্প ফসল হিসেবে আমরা মিষ্টি আলুর চাষ করছি। এছাড়াও পানিসেচ এবং সার, কীটনাশক ব্যয় অন্য ফসলের তুলনা অত্যন্ত কম এবং রোগ-বালাই না থাকায় মিষ্টি আলুচাষ আরও লাভজনক হয়ে উঠছে। ফলে প্রতি বছরই এই এলাকায় মিষ্টি আলুর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

রাখালবুরুজ ইউনিয়নের পার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক বিপুল মিয়া বলেন, নতুন কোকিই-১৪ জিও জাতের মিষ্টি আলু চাষে দেশী জাতের মতো একই সময় লাগে। এ আলু বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ৮৫ মন ফলন পাওয়া যায়- দামও ভাল। একই এলাকার আব্দুল আজিজ বলেন, নতুন এ জাতের মিষ্টি আলু চাষ থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করেছে এবং কোনো প্রকার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। বিক্রিতে ভালই লাভবান হয়েছি।

নারুতো জাপান কোম্পানী লিমিটেড নামের একটি এনজিও’র ম্যানেজার মেজবাউল ইসলাম বলেন, জাপানী এ জাতের মিষ্টি আলু চাষে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। উৎপাদিত মিষ্টি আলু বিদেশে রফতানী যোগ্য করতে সঠিক পদ্ধতি ও কলাকৌশল অবলম্বনে উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে চাষীদের সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। রপ্তানীযোগ্য এই মিষ্টি আলু কৃষকের কাছ থেকে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা মন দরে ক্রয় করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান আগামী নিউজকে জানান, এ বছর গাইবান্ধা জেলায় প্রায় ৫শ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এ আলুর চাষ করা হয় এবং মার্চ-এপ্রিল মাসে আলু তোলা হয়। কৃষকদের উৎপাদিত প্রতিমণ মিষ্টি আলু সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্ত এ বছর দফায় দফায় সর্বগ্রাসী বন্যায় কাটিং বীজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বীজ সংকটে পড়েন চাষীরা। জেলা কৃষি দপ্তরের পরামর্শে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষীরা সংগ্রহ করে মিষ্টি আলুর আবাদ করেছেন।

আগামীনিউজ/নাসির

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে