Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মনোনয়নপত্র বাতিল, যা বললেন জাহাঙ্গীর


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ০২:২২ পিএম
মনোনয়নপত্র বাতিল, যা বললেন জাহাঙ্গীর

গাজীপুরঃ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী বিদ্রোহী) সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি মনে করি এখানে নির্বাচন কমিশনারের যে নিরপেক্ষতা ছিল, তা থেকে তারা সরে গেছে। কোন অদৃশ্য চাপে সরে গেছে, এটা আমি জানি। আমি ন্যায় বিচার চাই। আপিল করবো, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টে যাব। আমি সবশেষ লড়াই করে যাব।’

রোববার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যেহেতু ব্যাংক টাকা পাবে, ব্যাংকে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) নাম দিয়ে আমার নমিনেশন বাতিল করেছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। গাজীপুরের মানুষকে রক্ষা করতে চাই। দেশবাসীর কাছে জানতে চাই একজন প্রার্থী হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবে, আমি ন্যায় বিচার পেতে পারি কী না? সেজন্যে আমি সবার সহযোগিতা চাই। আমি চাই নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতার মধ্যে যেন কাজটা করে। আমি অবশ্যই আপিলে যাবো। আমি এটার সবশেষ দেখব।

তিনি আরও বলেন, সত্যের জয়ের জন্য আমি লড়াই করছি। আমি সবশেষ পর্যন্ত দেখে যাব। আমি রাষ্ট্র-সরকার-বিচার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে পক্ষে নিরপেক্ষতা আশা করছি, আমি সবার সহযোগিতা চাই। আমাদের সিটি করপোরেশনের সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার টুকু বাঁচানোর জন্য আমি চেষ্টা করছি।

ব্যাংকের লোন পরিশোধ বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানির মধ্যে আমার কোনও শেয়ার নেই। কোনও লভ্যাংশও নেই না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ দিয়েছি। ওই ব্যাংকের মর্টগেজ নিয়ে সেই কোরিয়ান মালিক
লোন নিয়ে কারখানাটি চালু রেখেছে। করোনা মহামারির কারণে কোরিয়ানরা ব্যাংকে যথাসময়ে ওই পেমেন্ট দিতে পারেনি। আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে।

কোরিয়ান কোম্পনি ১৭ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক
কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করলেও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন ছিল আজ (৩০ এপ্রিল)। বেলা ১১টায় গাজীপুর
সিটি করপোরেশনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম তার কার্যালয় শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই
শেষে সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, মেয়র পদের অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন ও অলিউর রহমানের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ঋণ খেলাপি হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

এ সময় জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, যে ঋণ খেলাপির অভিযোগে তার মনোনয়ন পত্রটি বাতিল হয়েছে ওই ব্যাংকে তিনি ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। তিনি রহিমের বিপরীতে জামিনদার ছিলেন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংকের
কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণ পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে তিনি ঋণ খেলাপি। সে জন্য তার মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা
করা হয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

প্রসঙ্গত, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের অভিযোগে ২০২১ সালের নভেম্বরে মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

একই সময়ে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। পরে অবশ্য তাকে শর্ত সাপেক্ষে দল থেকে ক্ষমাও করা হয়। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তিনি। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে