Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অসামাজিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েকে হত্যা করেন বাবা


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম
অসামাজিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েকে হত্যা করেন বাবা

রংপুরঃ অনেক স্বপ্ন নিয়ে পুলিশের চাকরি করেন এমন এক ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু তার অভিযোগ, নিজের মেয়ের কারণেই সেই বিয়ে টেকেনি। এরপর এলাকায় এসে মাদকের কারবার ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে মেয়েটি। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়।

একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক ঢাকার সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা বলে জানতে পারেন বাবা রফিকুল ইসলাম। এতে তিনি লোকলজ্জার ভয়ে মেয়ের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

একপর্যায়ে গত ২২ জুলাই রাত ১টার দিকে মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় পা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা। পরে বাড়ির পাশের জমিতে পুঁতে রাখেন লাশ। কিন্তু কেউ যদি দেখে ফেলে, এই ভয়ে দুই দিন পর লাশ তুলে দূরে নিয়ে গিয়ে পুঁতে রাখা হয়। এমনি এক লোমহর্ষক ঘটনার সাত দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ। এর আগে গত ২৫ জুলাই দুপুরে পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রাম থেকে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৫ জুলাই সকালে নয়াটারি এলাকার একটি সমতল জমিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি সংলগ্ন জাগায় উঁচু মাটির ঢিবি দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে মাটি খুঁড়ে অজ্ঞাত এক নারীর মাথা দেখতে পায় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেদিনই লাশটি নিজের বোন লিপির বলে দাবি করেন উপজেলার অনন্তরাম (বড়বাড়ি) এলাকার শামীম মিয়া। পুলিশ এ ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য তার বাবা রফিকুল ইসলামকে থানায় ডাকে। কিন্তু তিনি মামলা দায়ের না করার জন্য গড়িমসি শুরু করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলেও সন্দেহ বেড়ে যায় পুলিশের। পরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে লিপির অবস্থান বাড়িতেই ছিল বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম, ভাই শামীমসহ পরিবারের চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একপর্যায়ে মেয়েকে 'অসামাজিক কার্যকলাপ' থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে নিজেই হত্যা করেন বলে স্বীকার করেন রফিকুল ইসলাম।

পীরগাছা থানার ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, রফিফুল ইসলাম মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ইতিমধ্যে রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের পর পুঁতে রাখতে ব্যবহৃত কোদালসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।

রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হলে তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত রফিকুলকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে