Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অবশেষে শিশু নিবাসে ঠাঁই হলো সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতক ফাতেমার


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২, ০৪:২৪ পিএম
অবশেষে শিশু নিবাসে ঠাঁই হলো সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতক ফাতেমার

ময়মনসিংহঃ জেলার ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্ম নেওয়া শিশুটির নাম ফাতেমা রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার বর্তমান ঠিকানা এখন সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত রাজধানীর আজিমপুরের ছোটমণি নিবাস। 

ফাতেমা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন।  

এ সময় হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজি, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ, ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।  

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‌শিশুটির জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট ও রক্তস্বল্পতাসহ যে সমস্যাগুলো ছিল, তার সবই দূর হয়েছে। সুস্থ অবস্থায় অন্য মায়ের দুধও পান করতে পারছে। হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ১১টার পর তাকে এনআইসিইউ থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। 

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ জানান, জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং পরিবারের সম্মতি নিয়ে ফাতেমাকে সমাজসেবা পরিচালিত ঢাকার আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে পরম যত্নে লালন-পালন করা হবে। শিশুটি ছোটমণি শিশু নিবাসে ছয় বছর পর্যন্ত থাকতে পারবে। তার আগেই দাদা-দাদি লালন-পালনে সক্ষম হলে তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে। 

ফাতেমাকে বিদায় দেওয়ার সময় আপ্লুত হয়ে পড়েন দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু। তিনি বলেন, পরিবারের সবার ইচ্ছা ছিল শিশুটির নাম ‘ফাতেমা’ রাখা হবে। জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যরা সবাই মিলে ‘ফাতেমা’ নাম রাখায় আমরা খুশি। আমার সম্মতিতে প্রশাসন নাতি ফাতেমাকে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠিয়েছে। নাতিকে দেখার ইচ্ছা হলে আমি যে কোনো সময় তাকে দেখতে যেতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে আমাদের থাকার জন্য দুই রুমবিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং এবং অপর দুই শিশু জান্নাত ও এবাদতের লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে।’

গত ১৬ জুলাই দুপুরের পরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তারকে (৩০) আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে মেয়ে সানজিদা আক্তারও (৬) ছিল। তারা পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না এবং মেয়ে তিনজনেরই মৃত্যু হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রত্নার পেট ফেটে কন্যাশিশুটির জন্ম হয়।

পরে ওই নবজাতক নগরীর লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শিশুটিকে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে