Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আদালতের রায়ে জোড়া লাগল ৪৫ দম্পতির সংসার


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২, ১০:০৫ পিএম
আদালতের রায়ে জোড়া লাগল ৪৫ দম্পতির সংসার

সুনামগঞ্জঃ আদালতের রায়ে সুনামগঞ্জে জোড়া লাগল ৪৫ দম্পতির সংসার। আসামিকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংসার জীবন চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বাদীদের সঙ্গে আপস-মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। ব্যতিক্রমী এ রায় শুনে আদালত প্রাঙ্গণে বাদী-বিবাদী ও স্বজনদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।

বুধবার  (৮ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন। এর আগেও তিনি কয়েক দফায় ১৯৭টি মামলা নিষ্পত্তি করে পারিবারিক মেলবন্ধনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, যৌতুকসহ নানাবিধ কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে সংসার থেকে বিতাড়িত ৪৫ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন। বিচারক উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে সন্তানদের ও তাদের ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে মামলা নিষ্পত্তি করেন। আসামিকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংসার জীবন চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বাদীদের সঙ্গে আপস-মীমাংসা করে দেন। এতে উভয়পক্ষই বিচারকের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আদালতের আপসনামায় ৪৫ দম্পতি অঙ্গীকার করেন, সন্তানাদি নিয়ে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার করবেন তারা। সংসারে শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। স্বামী-স্ত্রী উভয়কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেবেন। স্বামী তার স্ত্রী বা তার মা-বাবা ও অভিভাবকের কাছে যৌতুক দাবি করবেন না। পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও বিরোধ দেখা দিলে নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করবেন। স্বামী কখনো স্ত্রীকে নির্যাতন করবেন না, স্ত্রীকে নির্যাতন করলে বা যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। ৪৫ দম্পতি আবারও সংসারে ফিরতে পেরে খুশি এবং ঝগড়া না করে এখন থেকে সুখে শান্তিতে সংসার করবেন বলে জানান। 

জগন্নাথপুর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের শেফি বেগম ও তার স্বামী আশিকুর রহমান বলেন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয় খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আদালতের এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। দোয়া করবেন আমরা যেন বাকি জীবন সুখে কাটাতে পারি।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এ রকম আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে উভয় পরিবারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসবের প্রভাব এসেছে পড়েছে তাদের সন্তানদের ওপর। 

সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, আদালত পৃথক ৪৫টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় একসঙ্গে যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন। নির্যাতিত নারীদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন বিচারক। এর ফলে বিচারপ্রার্থী জনগণ দ্রুত ন্যায়বিচার পাচ্ছেন এবং মামলা জটও কমছে।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে